ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মৌলভীবাজারে বিধিনিষেধ প্রতিপালনে দিন-রাত অভিযানে প্রশাসন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
🕐 ৩:৩৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২১

মৌলভীবাজারে বিধিনিষেধ প্রতিপালনে দিন-রাত অভিযানে প্রশাসন

সারা দেশের তুলনায় মৌলভীবাজারে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়ছে। আর এই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এবং সরকারের বিধিনিষেধ প্রতিপালনে দিন-রাত অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ। তারপরও কিছু মানুষ বিধিবিধান অমান্য করে ঘরের বাহিরে বের হচ্ছেন। অপ্রয়োজনে যারা বের হচ্ছেন তাদের গুনতে হচ্ছে জরিমানা।

যানবাহন, হাটবাজারসহ সর্বত্র নিয়ম না মানা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কিছু মানুষ মাস্ক পরছেন না, মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। যতক্ষণ অভিযান চলে, আশপাশের মানুষ একটু সচেতন ও সতর্ক হন। অভিযান বন্ধের সাথে সাথে নিয়ম না মানার সে পুরোনো দৃশ্য ফিরে আসে। প্রতিদিন সকালের দিকে সড়ক ও পাড়া-মহল্লায় যানবাহন ও মানুষের ভিড় কিছুটা সীমিত দেখা যায়। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়। আর মানুষের ভিড়ও বাড়তে থাকে।

সোমবার সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের নির্দেশে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তাগণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। অভিযানে স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা অমান্য করায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৪২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৬১ হাজার নয়শ টাকা জরিমানা করা হয়।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এবং দণ্ডবিধি, ১৮৬০ অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। সর্বাত্মক লকডাউন এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে এ অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।

এদিকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়ার নির্দেশে জেলাজুড়ে গুরুত্বপূর্ণস্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। অপ্রয়োজনে যারা যানবাহন নিয়ে বের হচ্ছেন তাদেরকে আইনশৃংখলা বাহিনীর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাঠে কাজ করছেন তারা। ঘর হতে বের হওয়ার জন্য মুভমেন্ট পাস বা যথাযথ কাগজ দেখাতে না পারলে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। জনসচেতনতা সৃষ্টি ও সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অপ্রয়োজনে বের হওয়া যানবাহন আটক করা হচ্ছে।

মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ ইয়াছিনুল হক বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত ফোর্স নিয়ে ডিউটি করছি, মানুষকে বুঝাচ্ছি, মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছি এরপরও কিছু মানুষ নিয়ম মানছে না। তবে অব্যাহত অভিযানে আগের চেয়ে সবক্ষেত্রেই অনেকটা উন্নতি হয়েছে, আমরা অভিযান অব্যাহত রাখলে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারব। তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা চান তিনি।

আর জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণ হার কমাতে এবং সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। সরকারি নির্দেশনা অনুসারে জরুরি খাতের যানবাহন ছাড়া কোনো প্রকার যানবাহন চলবে না। অপ্রয়োজনে কেউ ঘর থেকে বের না হতে প্রচারণা, জনসচেতনতা সৃষ্ঠি এবং বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রতীকী জরিমানা করা হচ্ছে। মানুষ সচেতন হচ্ছেন। অতীতের মতো সকলের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সিভিল সার্জন অফিসের দেয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জেলায় মোট আক্রান্ত ২ হাজার ২শ ২৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৩২ জন। আর এখন পর্যন্ত ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

 
Electronic Paper