স্বাভাবিক জন্মদানে তৃতীয় স্থানে করাব ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র
সহিবুর রহমান, হবিগঞ্জ
🕐 ৬:৫৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
আমাদের এই মধ্যম আয়ের দেশে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যু উন্নতির পথে একটি প্রধান বাধা। ইউনিসেফের তথ্যমতে, বাংলাদেশে নবজাতকের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অপরিণত অবস্থায় জন্ম, সংক্রমণ এবং শ্বাসকষ্টের মতো ডেলিভারিকেন্দ্রিক জটিলতার কারণে। মৃত সন্তান প্রসবের হারও উদ্বেগজনক। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার ২০০ নারীর মৃত্যু হয় গর্ভকালীন, প্রসবকালীন এবং সন্তান জন্মের পর সৃষ্ট জটিলতায়।
অধিকাংশ মায়েরই মৃত্যু ঘটে কোনো চিকিৎসক বা দক্ষ ধাত্রী ছাড়া বাড়িতে সন্তান প্রসবের সময়। এ ছাড়া গর্ভধারণকালে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে মাতৃত্বকালীন সেবা না নেওয়ার কারণেও অনেক মায়ের মৃত্যু হয়। এক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার ‘করাব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র’র একদল কর্মী।
গত জানুয়ারি মাসে এই কেন্দ্রে ৭৫টি স্বাভাবিক প্রসব হয়। এতে স্বাভাবিক জন্মদানের সফলতায় সারা দেশের ৪ হাজার পাঁচশ’ ইউনিয়ন কেন্দ্রের মধ্যে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে কেন্দ্রটি। এ সফলতার মূলে রয়েছে একটি দলগত প্রচেষ্টা।
একদল প্রাণোচ্ছ্বল কর্মীর আন্তরিকতায় উপজেলা, জেলা, বিভাগ পেরিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম এক নিরাপদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে করাব ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। করোনা মহামারীর সময়ও শিশু জন্মদান, প্রসূতি মায়ের কাছে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার সেবা অব্যাহত রেখেছিল কেন্দ্রটি।
সেখানকার কর্মীরা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিক সুচিত্রা রানী দাশ, উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. ফরাশ উদ্দিন, পরিবার কল্যাণ সহকারী রাজিয়া সুলতানা সীমা, পরিবার পরিবার পরিদর্শক সনজিত সিনহাসহ কেন্দ্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে একটি দল সার্বক্ষণিক অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের মধ্যে সেবা ও পরামর্শ প্রদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে ‘করাব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে’ সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা স্বাভাবিক প্রসব সেবা চালু হয়। এই কেন্দ্রে বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ৬০-৭০টি স্বাভাবিক প্রসব হয়। এখানে ২০১৯ সালে ৩৮৬টি ও ২০২০ সালে ৫২৬টি স্বাভাবিক প্রসব হয়।
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক সনজিত সিনহা বলেন, এটা অনেক বড় অর্জন। আমাদের টিমের সকল সদস্যের আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আমরা এই সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। লক্ষ্য অর্জনে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি, জনগণের প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা সহজে তাদের কাছে পৌঁছে দিতে।