ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভাড়া ভবনেই চলছে নবীগঞ্জ পৌরসভার কাজ

ছনি চৌধুরী, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)
🕐 ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৯, ২০২১

ভাড়া ভবনেই চলছে নবীগঞ্জ পৌরসভার কাজ

প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রথম শ্রেণির খেতাবপ্রাপ্ত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভার নিজস্ব কোনো ভবন তৈরি হয়নি। নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাড়া করা ভবনেই চলছে পৌরসভা কার্যক্রম। এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নেই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। রাস্তাঘাটের অবস্থাও ভালো নয়। সড়কের বাতিও ঠিকমতো জ্বলে না।

সূত্র বলছে- পৌর পরিষদের কাছে ভবন বাবদ বেশ কয়েক লাখ টাকা বকেয়া পায় উপজেলা পরিষদ। কিন্তু তা মানতে নারাজ পৌর মেয়র। তিনি এ তথ্য অস্বীকার করে বলেন ‘ভবন ভাড়া নেওয়া তো প্রশ্নই উঠে না।’

সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে স্থাপিত নবীগঞ্জ পৌরসভা ২০০৫ সালে ‘গ থেকে ‘খ’ শ্রেণিতে ও ২০১৩ সালে খ থেকে ক (প্রথম) শ্রেণিতে উন্নিত হয়। ১ম শ্রেণির খেতাবপ্রাপ্ত এ পৌরসভার আয়তন ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার। পৌর এলাকায় রয়েছে ৩টি হাটবাজার, একটি কসাইখানা, ৪২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ইট সলিং রাস্তা ৮.১ কিলোমিটার, কাঁচারাস্তা ৩.৯ কিলোমিটার। এ ছাড়াও পাঁকা ড্রেন রয়েছে ৬ কিলোমিটার, কাঁচা ড্রেন ৪.১ কিলোমিটার, সড়কবাতি পাঁচশ।

উপজেলা পরিষদের প্রায় ২০ শতাংশ জায়গায় এক তলা জরাজীর্ণ ভবনের সাতটি কক্ষ নিয়ে ‘ভাড়ায় চলছে’ পৌরসভার কার্যক্রম। পৌরসভার কার্যক্রম শুরুর পর উপজেলা পরিষদকে নিয়মিত ভাড়া হিসেবে কোনো টাকা পরিশোধ করা হয়নি। বকেয়া পড়েছে কত লাখ টাকা? তার হিসেবও মিলেনি।

নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম বলেন, উপজেলা পরিষদের একটি পরিত্যক্ত ভবনে ভাড়া নিয়ে নবীগঞ্জ পৌরসভার কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের কাছে বেশ কয়েক লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। এনিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায়ও আলোচনা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসার কিংবা নাগরিক সেবা প্রদানের ব্যবস্থাও তেমন ভালো নয়।
কোনোরকমে গাদাগাদি করে দাপ্তরিক কার্যক্রম সারছেন কর্মরত ব্যক্তিরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মচারী বলেন, ‘আমরা নিজেরাই ঠিকমতো বসতে পারি না। সেবা দেব কীভাবে? যা দেই তা ই যথেষ্ট’

কর্মকর্তারা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে মৃদু ভূমিকম্প হলেই আমরা প্রাণ ভয়ে অফিস থেকে বের হয়ে আসি। অনেকটা আতঙ্কের মাঝেই অফিসের কার্যক্রম সারতে হয়।

নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, পৌরসভার উল্লেখযোগ্য যে কয়েকটি সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা নিজস্ব ভবন এখনো নির্মাণ করা হয়নি। আমার পরিষদ আসার পর নিজস্ব ভবনের জন্য অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। বর্তমানে ৪র্থ তম পরিষদ। এর আগে আরও ৩টি পরিষদ গেছে। বিগত ৩ পরিষদে ১৭ বছর সময় গেছে। সেখানে ভবনের জায়গা নির্ধারণের কোন ব্যবস্থা হয়নি।

বকেয়া প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ পৌরসভার কাছে টাকা পাবে এটা প্রশ্নই উঠেনা। এমন তথ্যও জানা নেই।’

সচেতন মহলের ভাষ্য, প্রথম শ্রেণির নবীগঞ্জ পৌরসভার নিজস্ব ভবন নেই, এটি দুঃখজনক। নির্বাচনের সময় মেয়র প্রার্থীরা নবীগঞ্জ পৌরসভার জন্য নিজস্ব ভবন নির্মাণের আশ্বাস দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি।

 
Electronic Paper