চার বছর কাঞ্চন সেতুতে মেয়াদহীন টোল আদায়
মাহবুব আলম প্রিয়, রূপগঞ্জ
🕐 ৬:০১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৭, ২০২১
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রশস্ত হলেও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটি প্রশস্ত নয়। ফলে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে কোনো প্রকার যানবাহন বিকল হয়ে পড়লে যানজট লেগে যাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক চিত্রের অংশ। আর এ চিত্রকে নিত্যদিনে রূপ দিতে পুরোটাই দায়ী এখন কাঞ্চন সেতুতে আদায় করা টোল প্রক্রিয়া। আবার নারায়ণগঞ্জ সওজের পক্ষ থেকে মেয়াদ ছাড়াই এ সেতুর টোল আদায় করার কারণে পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকদের রয়েছে ক্ষোভ।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর ও সিলেটের সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০০৬ সালের অক্টোবরে। সে সময় উদ্বোধনের পরবর্তী ১০ বছর পর্যন্ত টোল আদায় করার কথা বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালে টোল আদায়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চার বছর ধরে চলছে টোল আদায়।
এ অঞ্চলে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার সঙ্গেও পর্যাপ্ত জনবল নেই। ফলে সাধ্যমতো যানজট মোকাবিলা করে আসছি। আরও পুলিশ সদস্য বাড়িয়ে দেওয়া হলে যানজট নিরসন করা সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন। এদিকে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর এ কাঞ্চন সেতুর টোল আদায় নির্ধারিত সময়সীমা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ব্যস্ততম এ সেতুতে টোল আদায় করে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে। আর এ সেতুতে চলাচলরত যানবাহন থেকে প্রতিদিন পরিবহনগুলো থেকে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার টোল আদায় করছে নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগ। যদিও সওজের দাবি, সরকাররে সিদ্ধান্তেই টোল আদায় করা হচ্ছে এ সেতুতে।
এর আগে সরকারের সেতু মন্ত্রণালয় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর রাজধানী ঢাকায় প্রবেশের জন্য চারটি সেতু নির্মাণ করে। এরমধ্যে রয়েছে কাঁচপুর সেতু, ডেমরা-তারাব সেতু, মুড়াপাড়া-ইছাখালী সেতু ও কাঞ্চন সেতু। এসব সেতুর মধ্যে শুধুমাত্র কাঞ্চন সেতুতেই মেয়াদ চলে যাওয়ার পরও টোল আদায় করা হচ্ছে টোল।
অভিযোগ রয়েছে, সওজ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসাধু ব্যক্তিবর্গের যোগসাজশে মাসিক হারে গোপন লেনদেন করে স্থানীয়ভাবেই চলছে পাঁচ শতাধিক পরিবহন। ব্যস্তবহুল ঢাকা-বাইপাস রুটে যানবাহনের বাড়তি চাপ আর টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
কাঞ্চন সেতু প্রকল্প ও টোলপ্লাজার পরিচালক মোহাম্মদ কারিবুল ইসলাম বলেন, করোনা পরবর্তীতে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। এখানে টোল আদায়ের জন্য ১৮ জন লোক নিয়োজিত রয়েছে। মাঝে মধ্যে যানবাহনের চাপ না থাকলে একটি বা দুটি টোল বন্ধ রাখা হয়। তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে দায়িত্ব পেয়েই টোল আদায় কাজে নিয়োজিত আছি। টোল আদায়ের মেয়াদকাল শেষ হয়েছে বলে জানা নাই।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহা. জহিরুর ইসলাম বলেন, কাঞ্চন ব্রিজের টোল আদায়ে আউটসোর্সের মাধ্যমে আদায় করা হচ্ছে। এটাকে পিপিপি প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এ টোল আদায় অব্যাহত থাকবে। আর কাঞ্চন সেতুতে সরকারের সিদ্ধান্তেই টোল আদায় করা হচ্ছে। আমরা তদারকি করছি মাত্র।
তিনি আরও বলেন, এই সড়কটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) আওতায় চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান। ফলে এ টোল আদায় প্রক্রিয়াকে পুরো ৪৮ কিলোমিটার সড়কে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হবে। পুরো সড়কটি টোল রোড হবে কাজ শেষ হওয়ার পর ২৫ বছরের জন্য।