ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সিলেটে তরুণী ধর্ষণ: আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

দিপু সিদ্দিকী, সিলেট
🕐 ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৪, ২০২০

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনায় প্রধান আসামি সাইফুরসহ আটজনের বিরুদ্ধে পৃথক ধারায় দুটি অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। প্রধান আসামি সাইফুর রহমানের সঙ্গে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান ওরফে রনিকে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায়ও অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত ২২ নভেম্বর অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য ৩৪৭ পৃষ্ঠার এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে তরুণীকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে সরাসরি ধর্ষণের সঙ্গে অভিযুক্ত করা হয়েছে সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, শাহ মো. মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি ও অর্জুন লস্করকে। আর তরুণীকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার আগে একটি বাসায় এক দফা ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় দুজনকে। তারা হলেন- মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার মো. আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিজবাউল ইসলাম ওরফে রাজন। ছাত্রাবাসে ধর্ষণ ঘটনায় সহায়তা করা ও ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার অভিযোগে রবিউল হাসান ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে মামলায় অভিযুক্ত করা করা হয়েছে। কোনো পদে না থাকলেও গ্রেফতার হওয়া সবাই এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ডিএনএ রিপোর্টে ছয়জনের নমুনা ম্যাচ করেছে। বাকি দুজনকে সহযোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে ৪৯ জনকে সাক্ষী করা হয়। মোট ৩৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। 

জানা যায়, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার দুই মাস পর গত ২৯ নভেম্বর অভিযুক্ত আট আসামির ডিএনএ রিপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে। এর আগে গত ১ ও ৩ অক্টোবর দুদিনে এ মামলায় গ্রেফতার আটজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের পর ঢাকায় সিআইডির বিশেষায়িত ল্যাবে তা পরীক্ষা করা হয়।

২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার তদন্তে এজাহারে উল্লেখ চার আসামিসহ আরও দুই আসামির ধর্ষণে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পায় পুলিশ। মামলার পর র?্যাব ও সিলেট জেলা পুলিশের অভিযানে আটক আটজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সবাই ৫ দিন করে রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গত ২২ নভেম্বর অস্ত্র আইনে সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

এছাড়াও গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসানের ছাত্রত্ব এবং সার্টিফিকেট বাতিল করে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়।

 
Electronic Paper