ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় নাকাল সুনামগঞ্জের জনপদ

শহীদনূর আহমেদ
🕐 ১২:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও পানি ধীরগতিতে কমায় দুর্ভোগ বেড়েই চলছে বানভাসি মানুষদের। তৃতীয় দফা বন্যায় টানা এক মাসের ওপরে পানিবন্দি রয়েছেন জেলার কয়েক লাখ মানুষ। দুর্ভোগ আর ভোগান্তির নিরসনের শেষ না হতেই ফের দুঃসংবাদ দিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভারতে হিমালয়ের পাদদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুরমার সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানানো হয়েছে এক বিজ্ঞতিতে। ফলে ৪র্থ দফায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বানভাসি মানুষ।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ভারীবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় ২৫ জুন। এর সপ্তাহখানেক পর পরিস্থিতির যখন উন্নতি হচ্ছিল, তখন ১০ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়। এতে জেলার সবকটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন।

বন্যায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনো জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি থাকাকালীন তৃতীয় দফায় ২১ জুলাই বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। যার ভয়াবহতার মাত্রা ছড়িয়ে পড়ে সর্বক্ষেত্রে। টানা এক মাসের ওপরে সময় বন্যা পরিস্থিতি জনদুর্ভোগে পরিণত হয়।

এদিকে গতকাল সোমবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় এলাকা পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা এলাকায় অতিবৃষ্টি বা ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি হতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।

তৃতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জে এখ লাখ আট হাজার ১২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ৪০ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে মাছ খামারিদের বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ। প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সড়কপথে ক্ষতি হয়েছে এমন তথ্য দিয়েছে এলজিইডি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দীর্ঘস্থায়ী এই বন্যায় সুনামগঞ্জে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে।

সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফুল মিয়া বলেন, ৩য় দফা বন্যাসহ টানা এক মাস ধরে পানিবন্দি রয়েছেন এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। বন্যায় মানুষের বসতঘর, রাস্তাঘাট, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে হচ্ছে বানভাসি মানুষের। বন্যার্ত মানুষের সাহায্যে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ধীরগতিতে পানি কমায় মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। ভারতের হিমালয় পাদদেশে অতিবৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

 

 
Electronic Paper