দেশে ফেরার আকুতি
হৃদয় ইসলাম, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
🕐 ৩:৩২ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০২০
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্র দিয়ে ভারতে গমন করে আটকা পড়েছেন বেশকিছু বাংলাদেশি। একইভাবে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন বেশকিছু ভারতীয় নাগরিক। চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্রটি না খোলা পর্যন্ত তারা নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আটকে পড়া এসব মানুষ নিজ দেশে ফিরতে চান।
চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দুই দেশের সরকারি নির্দেশনায় সব অভিবাসন কেন্দ্রের মত এক মাসেরও অধিক সময় ধরে এ কেন্দ্রটিতে যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। ফলে ভারতের উত্তর ত্রিপুরার কৈলাশহর, ধর্মনগরসহ বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু বাংলাদেশি নাগরিক আত্মীয়ের বাড়িতে আটকা পড়েছেন। একইভাবে বেশকিছু ভারতীয় নাগরিক কমলগঞ্জের শমশেরনগর, কুলাউড়া সদর, শরীফপুর, মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল ও সিলেট শহরে আত্মীয় বাড়িতে আটকা পড়েছেন। অভিবাসন কেন্দ্রটি না খোলা পর্যন্ত তারা নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না।
সিলেট শহরে আত্মীয় বাড়িতে আটকা পড়া ভারতের কৈলাশহর লক্ষ্মীপুর গ্রামের শিক্ষার্থী নাদিয়া ফারজানা জানান, তিনি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কয়েকদিন আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার ধারণা ছিল ভারতে ও বাংলাদেশে প্রথম দফা লকডাউন শেষ হলে তিনি চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্র দিয়ে দেশে ফিরতে পারবেন। তার পাসপোর্টে ভিসায় একমাত্র চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্র উল্লেখ আছে। তিনি বর্তমানে আগরতলা অভিবাসন কেন্দ্র ব্যবহার করে ভারতে গেলেও প্রথমত ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত আগরতলা থেকে কৈলাশহরে রেল ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেহেতু তার দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর পপুলার ফার্মেসির পার্থ প্রতীম দে বলেন, করোনা সংক্রমণের কয়েকদিন আগে তার স্ত্রী ভারতের ত্রিপুরার ধর্মনগরে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। অভিবাসন কেন্দ্রটি যাত্রী যাতায়াতে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার স্ত্রী সেখানে আটকা পড়েছেন। তিনিও একমাত্র চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্র ছাড়া দেশে ফিরতে পারছেন না।
সোনালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখার ব্যবস্থাপক রিপন মজুমদার জানান, গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিক ভ্রমণ কর জমা দিতে এ শাখায় আসছেন। তবে চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় তাদের ভ্রমণ কর গ্রহণ করা হয়নি।
চাতলাপুর অভিবাসন কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক জামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আটকাপড়া ভারতীয় নাগরিকরা প্রতিদিনই তাকে ফোন করে তথ্য জানতে চান। তেমনিভাবে ভারতে আটকাপড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বজনরাও ফোন করছেন। দুই দেশে আলোচনা মাধ্যমে আটকা পড়া এসব নাগরিকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর না হলে যখন সরকারি নির্দেশনায় অভিবাসন কেন্দ্র খুলবে তখনই এসব নাগরিক নিজ নিজ দেশে ফিরতে পরবেন।