ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গোয়াইনঘাটে সরকারি সহায়তায় ৩৩০ পরিবারের ঘর

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
🕐 ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০

জমি আছে, ঘর নেই- এমন মানুষদের টিনের ঘর করে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় টিনের ঘরের বরাদ্দের সাথে নিজের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে আধা পাকা ঘর করে দিচ্ছেন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাওঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল।

বরাদ্দের টাকা আসার পর চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করেন। কীভাবে ঘরগুলো ভালোভাবে করা যায়, তার পরিকল্পনা করেন। ঠিকাদার বা অন্য কারও মাধ্যমে ঘরগুলো তৈরি করলে সব অর্থ ব্যয় করেও ভালো ঘর পাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেয়। এ অবস্থায় নকশা অনুযায়ী টিনের ঘর তৈরি করতে তারা স্থানীয়ভাবে একটি বাজেট তৈরি করেন। তাতে দেখা যায়, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলেও টিনের ঘর তৈরিতে তাদের ব্যয় দাঁড়াচ্ছিল এলাকাভেদে ৯৯ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তখন পরামর্শক্রমে আধা পাকা ঘর তৈরি করতে শুরু করেন। তারা একটা পৃথক বাজেট করে। দেখা যায়, স্থানভেদে কোনোটিতে ব্যয় হয় ১ লাখ ১ হাজার থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই বাজেট দেখে চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত দেন, তারা সব ঘর পাকা করবেন। দরিদ্র মানুষ আধা পাকা ঘর পাবে। তার এই উদ্যোগের ফলে মানুষ যেমন ভালো ঘর পাচ্ছে, তেমনি সরকারি টাকার সদ্ব্যবহার প্রশংসিত হচ্ছে এলাকায়। এই প্রক্রিয়ায় তালিকাভুক্ত ৩০টি দরিদ্র পরিবারই আধা পাকা ঘর পাচ্ছে এই ইউনিয়নে। ইতিমধ্যে অধিকাংশ ঘর তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেছে।

চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল জানান, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে এক লাখ ৭০ হাজার গরীবদেরকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক লাখ ১৫ হাজার ঘর তৈরি হয়ে গেছে। প্রকল্পের আওতায় নন্দীরগাঁও ইউনিয়নে ৩০টি ঘরের জন্য ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। অর্থাৎ প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ এক লাখ টাকা। এই টাকা দিয়েই স্থানীয় প্রশাসন নির্দেশিত টিনের ঘরের বদলে আধা পাকা ঘর করে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে জানায়, গত বছরের অক্টোবর মাসে শুরু হয় উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৩২৪টি আর নন্দীরগাওঁ ইউনিয়নে ৩০টি ঘর তৈরির কাজ। সরকারিভাবে প্রতিটি ঘরের মাপ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১৬ ফুট লম্বা আর সাড়ে ১০ ফুট চওড়া। সঙ্গে ৫ ফুটের একটি বারান্দা ও একটি বাথরুম। পাকা ভিটির ওপর টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনি থাকবে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ জানান, নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল একটা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের মিনা বেগম, ভানু বিবি, আয়শা খাতুন বলেন, আমরা ছেলে মেয়েদের নিয়ে জমির ওপর পাটখড়ির বেড়ার ঘরে বসবাস করতাম। হাজার চেষ্টা করেও পাকা ঘরে ঘুমানোর সামর্থ্য ছিল না আমাদের। এখন ইট দিয়ে পাকা ঘর করে দিয়েছে সরকার।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিব বলেন, জমি আছে গৃহ নেই, নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধীকার প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যায়ে ৩৩০টি ঘর নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে শুধুমাত্র নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল তার ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত ৩০ লাখ টাকা দিয়ে টিনের ঘরের পরিবর্তে আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। বাকি ৯ টি ইউনিয়নের ঘর গুলোকে প্রকল্পের ডিজাইনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে।

 
Electronic Paper