ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নাব্য সংকটে নৌজট

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পাটলাই নদী পথের নাব্যতা সংকটের কারণে নৌ-জট লেগে আছে। এ নদীর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক জড়িত। নদীর তলদেশ খনন না করার বালু-পাথর বহনকারী স্টিল বডির শত শত নৌযান আটকা পড়েছে। ফলে ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ১৫-২০ দিনের বেশি সময় লাগছে। এ সুযোগে বিভিন্ন পয়েন্টে স্থানীয় সংঘবদ্ধ কিছু চক্র চাঁদাবাজি করছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, মালামাল পরিবহনে তাহিরপুরের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাইরের জেলা ও উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই। বর্ষা ও হেমন্তে নৌ-পথই ভরসা। প্রতি বছর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ছড়া, বাগলী, চাড়াগাঁও- এ তিনটি শুল্ক স্টেশন থেকে কোটি কোটি ঘনফুট কয়লা, চুনাপাথর, বালু ও নুড়ি পাথর ক্রয় করে ভৈরব, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ, আশুগঞ্জ, ফতুল্লাসহ সারাদেশে এখানকার ব্যবসায়ীরা যোগান দেন।

এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলা সদরের ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভপুর, মধ্যনগরসহ পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা, কমলাকান্দা, মহোনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ভৈরবসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে বিভিন্ন মালামাল নৌ-পথে পরিবহন করে যোগাযোগ রক্ষা হয়। এসব পণ্য পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম নদীপথ। তবে নদীগুলোর নাব্যতা সংকটের কারণে অক্টোবর মাস থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা পড়ে। এতে বিপন্ন হচ্ছে নদী পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকা। দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার নৌযান শ্রমিকরা পাটলাই নদীতে দিনের পর দিন আটকা পড়ে মানবেতন জীবনযাপন করছেন।

নৌ শ্রমিক সাজিদ মিয়া, রফিক উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, পাটলাই নদীর নাব্যতা হারানোর ফলে এ সময়ে পাটাবুকা থেকে কানামইয়া বিল পর্যন্ত নৌ-জটের সৃষ্টি হয়েছে। এ নদীটি বড়ছড়া থেকে শ্রীপুর বাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার, সোলেয়মানপুর এলাকায় পাটলাই নদীর শাখা নদী পাইকর তলা নদীতে দুই কিলোমিটার, বৌলাই নদীটি সেলাইমানপুর ও তাহিরপুর থেকে সুলেমানপুর পর্যন্ত শুকিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

কয়লা ব্যবসায়ী রফিক উদ্দিন জানান, নাব্যতা সংকটের কারণে ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ১৪-১৫ দিন সময় লাগে। এতে সময় মতো মালামাল ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো যায় না। এ পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে।

তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, পাটলাই নদীর নব্যতা হারানোর কারণে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ নৌ-জটের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আটকে পড়া নৌ-যানের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি টহল রয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, প্রতি বছর নৌ-জটের কারণে নৌ-মালিক-শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এ থেকে মুক্তির জন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।

 
Electronic Paper