ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ছাতকে জনপ্রতিনিধিদের মতবিরোধ

ফেরত গেল এডিপির টাকা

শহীদ নূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ
🕐 ৯:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০১৮

ছাতকে সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধিদের মতবিরোধ ও সমন্বয়হীনতার কারণে সরকারি কোষাগারে ফেরত গেল এক কোটি ১৭ লাখ টাকা। ফলে উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ১৩টি ইউনিয়নের মানুষ।

উপজেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত এডিপির প্রকল্পগুলোর কাজ না হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে সরকার দলীয় কোনো জনপ্রতিনিধি দায় ভার নিচ্ছেন না।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর ইউনিয়নে পাঁচটি প্রকল্পে চার লাখ ৪০ হাজার টাকা, নোয়ারাই ইউনিয়নে একটি প্রকল্পে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা, ছাতক সদর ইউনিয়নে তিনটি প্রকল্পে চার লাখ ৪০ হাজার টাকা, কালারুকা ইউনিয়নে চারটি প্রকল্পে ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকা, চরমহল্লা ইউনিয়নে পাঁচটি প্রকল্পে চার লাখ ৪০ হাজার টাকা, উত্তর খুরমা ইউনিয়নে চারটি প্রকল্পে আট লাখ ৯০ হাজার টাকা, সিংচাপইড় ইউনিয়নের একটি প্রকল্পে পাঁচ লাখ টাকা, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নে তিনটি প্রকল্পে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা, জাউয়াবাজার ইউনিয়নের তিনটি প্রকল্পে পাঁচ লাখ টাকা, গোবিন্দগঞ্জ সৈয়দেরগাঁও ইউনিয়নে তিনটি প্রকল্পে পাঁচ লাখ টাকা, ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নে চারটি প্রকল্পে পাঁচ লাখ টাকা, দোলারবাজার ইউনিয়নের তিনটি প্রকল্পে চার লাখ ৪০ হাজার টাকা, ভাতগাঁও ইউনিয়নের তিনটি প্রকল্পে পাঁচ লাখ টাকা এবং বিবিধ প্রকল্পে ৩২ লাখ টাকা ও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন এবং সংস্কার কাজসহ এক কোটি ১৭ লাখ টাকার প্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল।
উপজেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বছরের শুরুতেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ফান্ডে এক কোটি ১৭ লাখ টাকার কাজ বরাদ্দ হয়। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা থেকে উন্নয়নের স্বার্থে প্রত্যেক ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রকল্প জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় পাঁচ মাস আগে প্রত্যেক ইউপি চেয়ারম্যান নিজ নিজ উন্নয়ন প্রকল্প উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে জমা দেন।
ছাতক উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিলাল আহমদ এডিপি প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের পরিবেশ সুশৃঙ্খল নয়। উপজেলা পরিষদে গত মার্চ মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মাসিক সমন্বয় সভা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে পরিষদের গণ্ডগোলের কারণেই এডিপি প্রকল্প বাতিল হয়েছে।’
ছাতক সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রত্যেক চেয়ারম্যান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথা সময়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছেন। এডিপি ফান্ডের টাকায় এলাকার উন্নয়ন কাজ না হওয়ায় বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণ।
ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী আবুল মনসুর মিয়া বলেন, ‘এডিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বশেষ গত ৬ জুন উপজেলা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হলেও বাস্তবায়নের সময় অতিক্রম হওয়ায় এক কোটি ১৭ লাখ টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়।’
উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল বলেন, ‘এডিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে একাধিক বৈঠক করেও নানা জটিলতায় বিষয়টি সুরাহা করা যায়নি। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সময় অতিক্রম হওয়ায় গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকারি এ বরাদ্দ বাতিল হয়ে যায়। প্রকল্প বাতিলের জন্য কারা দায়ী এটা সবারই জানা আছে।’

 
Electronic Paper