ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে ভাসছে মরা মাছ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
🕐 ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ০৫, ২০১৯

দেশের বৃহৎ জলপ্রপাত হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত। কিন্তু, সম্প্রতি সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ বিভিন্ন অন্য জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠেছে। তবে, ঠিক কি কারণে মাছ এবং জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে তার কারণ জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষের ধারণা, মাধবকুণ্ডর উজানে মাছ ধরার জন্য পাহাড়ি লোকজন বিষলতার রস প্রয়োগ করতে পারে। যা ভাটিতে নেমে মাধবকুণ্ডর মূল জলপ্রপাতের মাছ এবং অন্য প্রাণীর ক্ষতি করছে।

এদিকে গত শনিবার সকালে এ ঘটনা লক্ষ্য করার পর থেকে মাধবকুণ্ডের মাছ এবং জলজ প্রাণী মারা যাওয়ায় জলপ্রপাত এলাকার বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। 

জলপ্রপাতের পানিতেও দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। তবে পানি পরীক্ষা করে মাছ মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে কোনো ধরনের রাসায়নিক জাতীয় বিষ পাওয়া যায়নি।

মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক, বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সকালে পর্যটক, পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন মাধবকুণ্ডের ছড়ার পানিতে মাছসহ বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী ভেসে উঠতে দেখেন। মৃত মাছের কারণে মাধবকুণ্ড পর্যটন এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। জলপ্রপাতের পানিতেও দুর্গন্ধ রয়েছে। মৃত জলজ প্রাণীর মধ্যে রয়েছে পাহাড়ি বামাস মাছ, কাঁকড়া, পুঁটি, ব্যাঙ, পাহাড়ি চিংড়ি, শুকনো জায়গায় বিচরণে সক্ষম পাহাড়ি মাছ পিপলা, ছোট বাইন, সরপুঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের জলজ কীটপতঙ্গ।

পরে গত শনিবার দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ও মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের কর্মীরা মরা মাছ পানি থেকে তুলে সরিয়ে নেন। তবে গতকালও বেশ কিছু মাছসহ বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী পানিতে ভেসে থাকতে দেখা যায়।

স্থানীয় লোকজনের ধারণা, পাহাড়ি ছড়ায় অনেক ধরনের মাছ থাকে। এই মাছ ধরার জন্য মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের ওপরের অংশে উজানে কেউ বিষ প্রয়োগ করতে পারে। ওপর থেকে গড়িয়ে পড়া জলপ্রপাতের পানিতে দুর্গন্ধ রয়েছে।

গতকাল সেখানে ঘুরতে আসা পর্যটক ইসমাইল বলেন, ‘মাধবকুণ্ড ঝরনার পানিতে নেমেছি। কিন্তু পানিতে গন্ধ ছিল। তাই খুব বেশি ভালো লাগেনি।’

মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের কর্মী সামির আহমদ বলেন, ‘গত শনিবার সকালে এসে দেখি মাছ মরা। পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। তাই মাছ তুলে ফেলেছি। সেদিন (গত শনিবার) নয়টা মরা বামাস মাছ তুলেছি। এ ছাড়া কাঁকড়াসহ বিভিন্ন ধরনের অনেক মাছ ছিল।’

বড়লেখা উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কুলাউড়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি আজ (সোমবার) জেনেছি। এরপরই লোক পাঠিয়েছি। মাছ মরার কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে পানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে পানির মান স্বাভাবিক আছে। পানিতে কোনো সমস্যা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পানিতে রাসায়নিক জাতীয় বিষও পাওয়া যায়নি। ধারণা করছি একজাতীয় বিষলতা আছে। বিষলতা পিসে কেউ রস প্রয়োগ করে থাকতে পারে, যেটাতে মাছ মারা যেতে পারে। আগামীকাল মঙ্গলবার (আজ) সকালে কিছু ওষুধ দিব। যাতে পানিতে বিষের প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়। আর মাছ মারা যাবে না। একই সঙ্গে মাছ মরার প্রকৃত কারণ জানতেও অনুসন্ধান চলছে।’

 
Electronic Paper