সুরমা-রক্তি নৌপথে চাঁদাবাজির অভিযোগ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৯:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৯
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সুরমা ও রক্তি নদীর কয়েকটি পয়েন্টে প্রকাশ্যে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নৌপথে চাঁদাবাজি রুখতে ২৮ জন নৌ পুলিশের বহর থাকলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে নৌ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। তবে নৌ পুলিশের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কোনো চাঁদাবাজকে ধরা যাচ্ছে না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেতে যেতেই উৎপাতকারীরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, এই নদীতে চাঁদাবাজিতে যারা জড়িত তারা খুবই ভয়ঙ্কর। চাঁদাবাজদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। জানা যায়, সরকারের শুল্ক স্টেশন থেকে রয়েলিটিকৃত এলসির মাধ্যমে কয়লা, বালু, নুড়িপাথর, চুনাপাথর কিনে সারাদেশে জোগান দেন ব্যবসায়ীরা।
এসব আমদানিকৃত পণ্য বহনের মাধ্যম জামালগঞ্জ উপজেলার এসব নদীপথ। নদীপথে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছানো হয় বালু-পাথর, কয়লা ও চুনাপাথর। আর যাতায়াতের সময় নদীপথে বাল্কহেড ও ছোট-বড় স্টিলবডি নৌকা চলাচলের সময় দুর্লভপুর-গজারিয়া, মান্নানঘাট নামক স্থানে এলেই নদীতে ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌকা দিয়ে জোর করে চাঁদা আদায় করছে দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ চক্রের হোতারা।
সুনামগঞ্জ মালবাহী নৌযান ফেডারেশন লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, অসাধু কিছু ব্যক্তির ইন্ধনে প্রতিনিয়তই এমন চাঁদাবাজি হচ্ছে। চাঁদাবাজির বন্ধের জন্য তিনি জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বাল্কহেড কার্গো সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সুরমা ও রক্তি নদীতে কোনো ধরনের চাঁদা দাবি সম্পূর্ণ বেআইনি।
চাঁদাবাজির ব্যাপারে দুর্লভপুর ঘাট ইজারাদার রুবেল মিয়া বলেন, সরকারিভাবে আমাকে যেভাবে ইজারার নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে, আমি সেভাবে টোল আদায় করছি। আমি কোনো ধরনের অনিয়ম করিনি। গজারিয়া নদী ঘাটের ইজারাদার ইয়াকবিরের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএর আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদীবন্দর, ভৈরবের উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আশুগঞ্জ-ভৈরব নিয়ন্ত্রণাধীন সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের অন্তর্গত গজারিয়া এলাকায় সুরমা নদী ও বৌলাই শাখা নদীর মোহনায় ওঠা-নামাকৃত মালামালের এলসি ও বার্জিং চার্জ আদায় পয়েন্ট হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে ইজারা দেওয়া হচ্ছে। চলতি নদীতে মালবাহী নৌযান থেকে চাঁদাবাজি বন্ধে সেখানকার নৌ-পুলিশ রয়েছে।