ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শ্রেণিকক্ষের অভাবে মাটিতে পাঠদান

তোফায়েল পাপ্পু, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)
🕐 ৬:১২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০১৯

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৩য় দফায় জাতীয়করণকৃত ১২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে একটি বিদ্যালয় জাগছড়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সঙ্কট থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ না থাকায় স্কুলের পাশে চা বাগানের হাসপাতালের একটি রুমে চালানো হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।

তাছাড়া বিদ্যালয়ে নেই কোনো বসার ব্যবস্থা, নেই নিরাপদ খাবার পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও অবকাঠামো ব্যবস্থা।

জানা গেছে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়নি। দোচালা টিনের ঘরের মাত্র দুটি শ্রেণি কক্ষে ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে দুই শিফটে কোনোরকমে পাঠদান করা হচ্ছে। এদিকে প্রয়োজনের তুলনায় চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চ কিছুই নেই বিদ্যালয়টিতে। ছাত্র ছাত্রীদের মাটিতে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে।

স্কুলের বাহিরে টেবিল বসিয়ে অফিস বানিয়ে কোন রকমে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক তাদের দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সকালের শিফটে দুটি কক্ষে ১ম ও ২য় শ্রেণীর পাঠদান এবং বিকেলের শিফটে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর পাঠদান কার্যক্রম চালায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায, বিদ্যালয়টির ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষের মেঝেতে বসে ক্লাস করছে। ওই শ্রেণীতে ক্লাস করাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকা সালমা আক্তার। তিনি বলেন, গরমের মধ্যে ক্লাস করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ছাত্র ছাত্রীরা গাদা গাদি করে মাটিত বসেছে। তাতে তাদের লেখা পড়ার সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বেশ কষ্ট পায়। বিদ্যালয়ে বিদ্যমান ১টি শ্রেণী কক্ষে পর্যাপ্ত পরিমাণ বেঞ্চ নেই, ভাঙ্গা কয়েকটি বেঞ্চ দিয়ে কোন রকমে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্রেণী পাঠদান। অপর আরেকটি শ্রেণী কক্ষে কোন বেঞ্চ’ই নেই।


বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাখি, রঞ্জিতা, রবি দাস, তানজিলা, রিত্তিক, সুমনসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা ভালোভাবে ক্লাস করতে পারছি না। মাটিতে বসে আমাদের ক্লাস করতে হয়। তাতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। গরমে আমরা একদম বসতেই পারি না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানী দাস বলেন, স্কুলে শ্রেণী কক্ষ সঙ্কটের কারণে ছাত্র ছাত্রীদরে মেঝেতে বসিয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে। শ্রেণী কক্ষ সঙ্কটের কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও হয়েছে। তারা শুধু নতুন ভবনের আশ্বাস দিচ্ছেন।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পরেশ কালেন্দি বলেন, শ্রেণী কক্ষের অভাবে মাটিতে বসিয়ে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান দেয়া হচ্ছে। অতি দ্রুত বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত আসনের ব্যবস্থাসহ পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম তালুকদার জানান, এই বিদ্যালয়ের সমস্যার কথা অবগত আছেন। অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোতে নতুন ভবনের কাজ চলছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এই বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে। এছাড়াও সকল সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সর্বাত্তক চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।

 
Electronic Paper