ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অর্থ সংকটে গ্রন্থাগার বন্ধ

মাহমুদ এইচ খান, মৌলভীবাজার
🕐 ৯:১৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৫, ২০১৯

নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সংকটে টানা তিন মাস থেকে বন্ধ রয়েছে মৌলভীবাজার গণগ্রন্থাগার। আটকা রয়েছে স্টাফদের বেতন ভাতা, বিদ্যুৎ ও পত্রিকা বিল। এ অবস্থায় কোনো সমাধান না পেয়ে গ্রন্থাগার পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, গ্রন্থাগারিকসহ সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

গ্রন্থাগার পরিচালনার জন্য একজন গ্রন্থাগারিক, একজন সহকারী গ্রন্থাগারিক, একজন পিয়ন ও একজন ঝাড়–দার কর্মরত থাকলেও তাদের দীর্ঘদিনের বেতন বকেয়া রয়েছে। যার ফলে তারা সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। একই সঙ্গে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম মুহিবও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এছাড়া গ্রন্থাগারের বিদ্যুৎ বিল বাকি পড়েছে দুই লাখ ২৪ হাজার টাকা। আর্থিক অবস্থা নাজুক হওয়ায় সরকারি তিনটি এসি না লাগিয়ে ফেলে রাখায় তা নষ্ট হয়ে গেছে। পত্রিকার বিল বাকি আছে ২৫ হাজার টাকা। যা পরিশোধ করতে না পেরে ও সংশ্লিষ্টরা পদত্যাগ করায় গ্রন্থাগারটি বন্ধ রয়েছে। তবে অভিযোগ আছে, গ্রন্থাগারের নিজস্ব ফান্ডে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা থাকলেও তা উত্তোলনের জন্য কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না সভাপতি জেলা প্রশাসক।

গণগ্রন্থাগার সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার গণগ্রন্থাগারে ১৬ ধরনের প্রায় ১১ হাজার বই আছে। প্রতিবছর সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ৩০ হাজার টাকা অনুদান দেয়। তাতে থাকে বই কেনা বাবদ ১৫ হাজার টাকা এবং উন্নয়নের জন্য ১৫ হাজার টাকা।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২৫-৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে থাকে। জেলা পরিষদ দেয় ১০ হাজার টাকা। এছাড়া আজীবন সদস্যদের ফি হচ্ছে আয়ের উৎস। কমিটি সক্রিয় না থাকায় সেসব আয়ও বন্ধ হয়ে আছে।

সাংস্কৃতিক কর্মী কল্লোল দাস বনি বলেন, মৌলভীবাজার গণগ্রন্থাগার আমাদের ঐতিহ্য। এ জেলার শিল্প-সাহিত্যের প্রাণকেন্দ্র। সেটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে আছে। কেউ কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। গণগ্রন্থাগারের মতো প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে উদাসীনতার কারণ জানি না। তবে যে কোনো মূল্যে গ্রন্থাগার চালু দেখতে চাই।

গ্রন্থাগারিক শোভাময় রায় সজল বলেন, প্রায় দুই বছর থেকে আমিসহ স্টাফদের সব বেতন-ভাতা বন্ধ। পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম নেই। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় কর্মচারীও নেই। সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। দীর্ঘদিন আমার নিজ খরচে গ্রন্থাগার চালু রেখেছি, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। এপ্রিল মাস থেকে গ্রন্থাগার পুরোদমে বন্ধ রয়েছে।

গ্রন্থাগার নিয়মিত চালাতে হলে আয়ের উৎস, কর্মচারীদের বেতন ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। পাঠক বাড়াতে নতুন নতুন বইও বাড়াতে হবে।

 
Electronic Paper