ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাজেটে হতাশ হাওরবাসী

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
🕐 ৭:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০১৯

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’ শিরোনামে গত বৃহস্পতিবার দেশের ৪৮তম বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জনসন্তুষ্টির কথা বাজেটে বিবেচনা করে বেশকিছু চমক দেখানো হলেও সু-সংবাদ আসেনি হাওর অঞ্চলের জনসাধারণের।

তাদের প্রত্যাশা ছিল, হাওরবাসীর দুঃখগাথা জীবন সংগ্রামের কথা বিবেচনা করে এবারের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ ও পরিকল্পনা রাখা হবে। হাওরের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রেখে এবারের বাজেট পেশ করা হবে। কিন্তু বাজেট উপস্থাপনের পর হাওরবাসীর জন্য তেমন কোনো সু-সংবাদ না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

বাজেটে বলা হয়েছে, কৃষিক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে প্রায় এক হাজার ২৬১ কোটি টাকা বেশি। কৃষির উন্নয়নের জন্য স্বাভাবিক বিনিয়োগের অতিরিক্ত হিসেবে কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ও কৃষি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎচালিত সেচ যন্ত্রের ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ বিলের ওপর ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান অব্যাহত থাকবে।

আগামী অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া মোকাবেলায় প্রায়োগিত গবেষণার মাধ্যমে বন্যা, খরা, লবণাক্ত ও অধিক তাপমাত্রা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদার করা হবে। শস্যের বহুমুখীকরণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ, জৈব বালাই ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জনপ্রিয়করণ, খামার যান্ত্রিকীকরণ জোরদার করা হবে। বহুমুখী পাটপণ্য উদ্ভাবনের গবেষণা কার্যক্রম চলমান থাকবে। তবে আমদানি খরচ যাই হোক না কেন আগামী অর্থবছরেও রাসায়নিক সারের বিক্রয়মূল্য অপরিবর্তিত রাখা হবে। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলহানির ঘটনা নিত্যনৈমিত্ত্যিক। এ থেকে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি হতে কৃষকদের রক্ষার্থে ‘শস্যবীমা’ একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করা হবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন খাতে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বাজেটের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাতে গত বছর বাজেট বরাদ্দ ছিল ৮৮৪ কোটি টাকা, এ বছর তা দ্বিগুণ করে এক হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাজেটে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে গবেষণার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ সংশ্লিষ্ট চারটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর, এফফএমডি ও পিপিআর রোগ দমনে কার্যকর মডেলের সম্প্রসারণ, প্রাণী খাদ্য সংরক্ষণে ডোল পদ্ধতির সম্প্রসারণ, বিভিন্ন বিষয়ে ৩৫টি গবেষণা বাস্তবায়ন, তিনটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের কর্ম পরিকল্পনা রয়েছে। অথচ হাওরের প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের জন্য বাজেটে কোনো বিষয় উপস্থাপনা করা হয়নি।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির হবিগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য এমদাদুল হোসেন খান বলেন, কৃষিবান্ধব এ সরকারের প্রতি হাওরবাসীর অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বাজেট নিয়ে এখন হাওরের জনগোষ্ঠীর হতাশা ছাড়া কিছুই নেই।’ পরিবেশ আন্দোলনের হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, হাওর বাদ দিয়ে যে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। সে বাজেট সফল হতে পারে না।’

 
Electronic Paper