মাধবপুর লেক উন্নয়নে এনটিসির আপত্তি
হৃদয় ইসলাম, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
🕐 ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০১৯
মৌলভীবাজারের পর্যটন উপজেলা কমলগঞ্জকে সমৃদ্ধ করেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জল প্রপাত, আদিবাসী খাসিয়া পুঞ্জি, মণিপুরী পল্লীসহ বিভিন্ন চা বাগান। দেশী বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম স্থান হচ্ছে মাধবপুর লেক।
দিনে দিনে এখানে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। তবে পর্যটকদের সেবা দানে মাধবপুর লেকের উন্নয়নে পর্যটন করপোরেশন সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) আপত্তির কারণে এ টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর লেকে আসা পর্যটক বহনকারীদের যানবাহন প্রবেশকালে এনটিসির মালিকানাধীন মাধবপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ একটি টোকেনের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন। তবে চা বাগানের চার দিকের উঁচু টিলার মধ্যবর্তী প্রায় এক বর্গ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা মাধবপুর লেকে পর্যটকদের সেবাদানে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। লেক এলাকায় একটি ছোট ছাউনি ও একটি ছোট টয়লেট ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া সঠিকভাবে লেকটি পরিচর্চা ও আগত পর্যটকদের তদারকেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।
পর্যটকদের আরও আকৃষ্ট করে তাদের সেবা ও নিরাপত্তাদানে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আবেদনে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন মাধবপুর লেক উন্নয়নে সাড়ে ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। গৃহীত প্রকল্পটি কাজ শুরুর উদ্যোগ নিয়ে মাধবপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেছিলেন এনটিসির বোর্ডের অনুমতি সিদ্ধান্ত ছাড়া এ কাজটি করা যাবে না।
এ অবস্থায় কমলগঞ্জে নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোগদানের তিন মাস পর এনটিসি কর্তৃপক্ষ জানায় তাদের বোর্ড মাধবপুর লেক উন্নয়নে অনুমতি দেয়নি।
মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু জানান, এনটিসিও সরকারি প্রতিষ্ঠান। পর্যটন করপোরেশনও সরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে চা বাগান করা হয়েছে। এখানে মাধবপুর লেকের পর্যটন উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হলে কিভাবে এনটিসি আপত্তি জানায়? তিনি মনে করেন জেলা প্রশাসক চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মাধবপুর লেকের উন্নয়নের কাজ করতে পারেন।
মাধবপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মুরাদ চৌধুরী বলেন, তিনি ছুটিতে আছেন। এ সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, এ আপত্তি প্রত্যাহার না করলে পর্যটন করপোরেশনের বরাদ্দকৃত সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা ফিরে যাবে। লেকটিকে জেলা প্রশাসনভুক্ত করতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে নতুন করে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। জমিটুকু সরকারের আর এনটিসি বন্দোবস্ত নিয়ে চা প্লান্টেশন করেছে মাত্র। তিনি মনে করেন এক সময় এনটিসিকে তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করতে হবে।