মহাসড়কে পাথর, ঘটছে দুর্ঘটনা
কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
🕐 ৯:১৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৯
সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য সব সময় চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এ জন্য অনেক সময় সাধারণ মানুষ অথবা তৃতীয় পক্ষও দায়ী থাকে। সড়ক-মহাসড়কের স্থানে স্থানে মাটি, বালু ও পাথরসহ বিভিন্ন জিনিস রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীরা। এতে করে প্রায় সময় ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এভাবেই মাটি, বালু ও পাথর রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে দেখা যায়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজের আখের গোছাতে এ অপকর্ম করে থাকেন। অথচ তাদের এ খামখেয়ালিপনার কারণে প্রাণ দিতে হয় সাধারণ মানুষকে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ৮০ কিলোমিটার পড়েছে হবিগঞ্জ অংশে। এর মধ্যে অন্তত ১৫-২০টি স্থানে মাটি, বালু, পাথর অথবা বিভিন্ন জিনিসপত্র রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বালু ও পাথর রেখে সব চেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হবিগঞ্জে মাধবপুর বাজারে মহাসড়কের পাশে দীর্ঘদিন ধরে পাথর রেখে ব্যবসা করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। প্রতিদিন সেখানে তারা ট্রাক দিয়ে পাথর লোড-আনলোড করে আসছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। অসাধু পাথর ব্যবসায়ীরা একসময় মহাসড়কের পাশে পাথর রেখে ব্যবসা করলেও এখন তারা সড়কের অনেক অংশ দখল করে নিয়েছে। ফলে প্রায় সময়ই ওই স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ী এরশাদ আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের ওপর পাথর রেখে ব্যবসা করে আসছে একটি অসাধু চক্র।
ফলে এখানে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু ব্যবসায়ীরা নয়, পৌরসভার কন্ডাকটারেরাও মহাসড়কের ওপর পাথর রেখে কাজ করাচ্ছেন। এ ছাড়া বাজারের কয়েকজন মার্কেটের মালিকরাও এমনটাই করছেন।’
পৌরসভার ওয়াটার প্লান্ট কাজে নিয়োজিত এবি ওয়াটার কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমরা এখানে কোনো পাথর রাখি না। আমাদের কাজের জন্য আনা পাথর মহাসড়কের পাশে আনলোড করে সঙ্গে সঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।’ এতে কি মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হচ্ছে, কিন্তু অন্য কোথাও জায়গা না থাকায় আমরা করছি। আর করব না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিকা দে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পাথরগুলো জব্দ করে এসেছি। সেখানে কাউকে না পাওয়ার কারণে জরিমানা করতে পারিনি। তবে আর যেন কেউ মহাসড়কের ওপর পাথর না রাখতে পারে সে জন্য প্রশাসনের নজরদারি থাকবে।’