ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল

রোগীর খাবার গায়েব

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
🕐 ১০:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯

হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন আড়াইশ’ জন রোগীর খাবার দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র একশ জন রোগীকে। বাঁকি দেড়শ’ রোগীর খাবার গায়েব করে পেলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেই হিসেবে প্রতিদিন তিনবেলায় সাড়ে চারশ’ রোগীর খাবার গায়েব করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও পরিবেশন করা হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার। আর দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারতো আছেই। যে কারণে সুস্থ হওয়ার জন্য ভর্তি হওয়া রোগীরা আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে। চুক্তি অনুযায়ী মাথাপিছু যে পরিমাণ খাবার দেওয়ার কথা, সেই পরিমাণ না দেওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে রোগীদের মাঝে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের ৫টি ওয়ার্ডে রয়েছে ১০০টি শয্যা। তবে প্রতিদিন সেখানে রোগী ভর্তি থাকেন কমপক্ষে আড়াইশ’। হাসপাতালটি আড়াইশ’ শয্যায় উন্নিত হওয়ার পর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তি অনুযায়ী ২৫০ জন রোগীর মাঝে প্রতিদিন তিনবারে মাথাপিছু ১২৫ টাকার খাবার পরিবেশন করার কথা। কিন্তু ১০০ শয্যায় অবস্থানকারী রোগীর বাইরে বাকি দেড়শ রোগীকে দেওয়া হচ্ছে না কোনও খাবার। সেই হিসেবে প্রতিদিন তিনবেলায় সাড়ে চারশ রোগীর খাবার গায়েব করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

চুক্তি অনুযায়ী মাথাপিছু নির্দিষ্ট রয়েছে ২৪০ গ্রাম চাল, ১৫০ গ্রাম মাছ অথবা মাংস, ১৫ গ্রাম তেল এবং ১৫ গ্রাম ডাল, পাউরুটি, কলা, ডিমসহ অন্যান্য খাবার। তবে এর অর্ধেকও দেওয়া হচ্ছে না রোগীদের।

আজম বিবি নামে এক রোগীর স্বজন জানান, পাঁচদিন ধরে তার জন্ডিস আক্রান্ত মেয়ে অনিতাকে (৫) নিয়ে তিনি হাসপাতাল রয়েছেন। একদিন সকালে একটি পোল্ট্রি মুরগীর ডিম, ছোট সাইজের কলা এবং নামেমাত্র এক টুকরো পাউরুটি পেলেও বাকি চারদিন কিছুই পাননি। এছাড়া দুপুরে এবং রাতে দুদিন ছোট এক টুকরো মাছ পেলেও বাকি তিনদিন জুটেছে শুধু এক টুকরো ডিম, অল্পকিছু ঝুল আর খানিকটা ডাল অথবা সব্জি। প্রতিবেলাই দেওয়া হচ্ছে পুরাতন এবং দুর্গন্ধযুক্ত খাবার। যা খাওয়া তো দূরের কথা মুখের সামনেই নেওয়া যায় না।

সুজেতা আক্তার এক রোগী বলেন, তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে জ্বর সেরে উঠলেও পুনরায় আক্রান্ত হয়েছেন ডায়রিয়ায়। এজন্য প্রতিদিন খাওয়া অস্বাস্থ্যকর খাবারকেই দায়ী করেন তিনি।

হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতীন্দ্র চন্দ্র দেব জানান, বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী আজিজুর রহমান জানান, আমরা সঠিকভাবেই খাবার পরিবেশন করে থাকি। তবে তার সঙ্গে কথা না বলে বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের সঙ্গে আলাপ করতে বলেন তিনি।

 
Electronic Paper