শ্রীমঙ্গলে 'বঙ্গবন্ধু ধান-১০০' এর পরীক্ষামূলক চাষ সফল
আতাউর রহমান কাজল, শ্রীমঙ্গল
🕐 ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ০৪, ২০২৩

শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক চাষ করে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে 'বঙ্গবন্ধু ধান-১০০'। তুলনামূলকভাবে কম খরচ ও কম সময়ে উচ্চফলনশীল এবং পোকামাকড়, রোগবালাই প্রতিরোধ গুনসম্পন্ন এ ধান আবাদ করে বেশি ফলন পাওয়ায় আগামীতে এ ধানের আবাদ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্হানীয় কৃষক ও কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা রকেন্দ্র শর্মা জানান, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ এর জীবনকাল ব্রি ধান ৭৪ এর প্রায় সমান। কিন্তু ফলন ব্রি ধান ৭৪ এর চেয়ে বেশি। এই ধানে জিংকের পরিমান বেশি এবং চাল মাঝারী চিকন। বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ এর গড় ফলন ৭.৭ মে: টন। সঠিক পরিচর্যা করা হলে ৮.৮ মে: টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।
তিনি আরো বলেন, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে ব্রি হাইজিংক সমৃদ্ধজাত এই ধান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট 'বঙ্গবন্ধু ধান-১০০' নামে অবমুক্ত করে।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুমা পাল জানান, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ শ্রীমঙ্গলে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ১৫ একর জমিতে চাষ করা হয়। এরমধ্যে উপজেলার কালাপুর ও ভুনবীর ইউনিয়নে দুইটি প্রদর্শনী প্লট স্হাপন করা হয়। প্রদর্শনী প্লটে কৃষি অফিস থেকে সকল প্রকার রাসায়নিক সার, বীজ, কীটনাশক বিনামুল্যে কৃষকদের দেয়া হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের পারের টং গ্রামের সফল চাষী মো. নাজমুল হাসান বলেন, আমি এবার ৩ বিঘা জমিতে বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ চাষ করেছিলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার আমি ধান কাটা শেষ করেছি। আমি এ ধান চাষ করে বিঘা প্রতি ২১-২২ মন ফলন পেয়েছি। যা অন্যান্য ধানের তুলনায় ৫-৬ মন বেশি হওয়ায় আমি খুব খুশি।
তিনি বলেন, আমি এবার এ ধান থেকে বীজ সংরক্ষণ করব। আগামীতে আরো বেশি জমিতে এ ধান চাষ করব।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান জানান, এবার শ্রীমঙ্গলে বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ এর ফলন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৬.৭ টন। যা অন্যান্য ধানের তুলনায় বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ তে সময় কম লাগে অর্থাৎ ১৪৫ দিন থেকে ১৪৮ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জিংক বেশি থাকায় এই বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে কার্যকর ভুমিকা রাখবে। এবার এই ধানের ফলন দেখে অনেক কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আশা করছি আগামীতে শ্রীমঙ্গলে এ ধানের আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
কৃষি কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আরো বলেন, রোগ-বালাই, পোকা-মাকড়ের আক্রমন রোধ করার ক্ষমতা থাকায় বেশি ফলনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ধানের উৎপাদন খরচও কম। তাছাড়া এ ধানে জিংকের পরিমান বেশি থাকায় বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পুষ্টিহীনতা দুরীকরণসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
