ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মৌলভীবাজারে কফি উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভাবনা

আতাউর রহমান কাজল, শ্রীমঙ্গল
🕐 ৫:৪০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২২

মৌলভীবাজারে কফি উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভাবনা

মৌলভীবাজারে কফি চাষের জন্য কৃষি বিভাগ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি অধিদপ্তর বিনামূল্যে কফির চারাও বিতরণ করেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, জেলার পাহাড়ি ও সমতল ভূমিতে কফির দুটি জাত- ‘এরাবিকা’ ও ‘রোবাস্টা’ পরীক্ষামূলক চাষে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। ফলে চায়ের পাশাপাশি এ অঞ্চলে কফি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমদ জানান, মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলা, রাজনগর, কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন পাহাড়ি ও সমতলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় দুই হাজার কফির চারা বিতরন করা হয় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে। ওইসব স্থানে কফির বাগানও সৃজন করা হয়। বর্তমানে এসব বাগানে কফির ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে কোন প্রকল্প না থাকায় জেলায় কফির ব্যাপকহারে চাষ সম্ভব হচ্ছে না।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, তিনি ফিনলে চা কোম্পানীকে ২০০ কফির চারা দিয়েছেন। তারা খুব শীঘ্রই কফি বাগান করবে।

শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন চা বিজ্ঞানী জানান, এখানকার আবহাওয়া, মাটি, জলবায়ু চা, রাবার, লেবু, আনারস, কাঠাল ও কফি চাষের উপযোগী। তিনি বলেন, কফি চায়ের মতো একটি দীর্ঘজীবী উদ্ভিদ। তাই চায়ের অনুরুপ কফির ফলনও খুব ভাল হতে পারে এ অঞ্চলে। যে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমান বেশি সে মাটিতে কফি চাষ উপযোগী।

সূত্র জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তথা বাংলাদেশে বর্তমানে কফি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। বড় বড় হোটেলগুলোতে কফির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

সূত্রটি আরো জানায়, মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানে রাস্তার পাশে, চা বাগানের বিভিন্ন সেকশনের ফাঁকা জায়গায় বেশ কয়েক হাজার ‘রোবাস্টা’ কফির চারা লাগানো হয়। এখানে কফি চাষ সফল হয় এবং নিয়মিত ফল দিচ্ছে কফি গাছগুলো।

মাথিউড়া চা বাগানের সিনিয়র সহকারি ব্যবস্থাপক আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, কফি উৎপাদনের জন্য কোন কারখানা না থাকায় কফি চাষ কোন কাজে আসছে না।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, জেমস ফিনলে চা কোম্পানী ১৯৮০ সালে শ্রীমঙ্গলের সোনাছড়ায় প্রায় ৫৬০ একর জমিতে কফি বাগান গড়ে তুলে। ‘ফিনলে কফি’ নামে পরিচিত সেই কফি তখন আন্তর্জাতিক হোটেলগুলো ক্রয় করত। পরে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গিয়ে কফি উৎপাদন অলাভজনক হবার প্রেক্ষাপটে ১৯৯২ সালে ওই কোম্পানি কফি চাষ বন্ধ করে দেয়।

সরকারি প্রণোদনাসহ প্রকল্প আকারে মৌলভীবাজার জেলায় কফির চাষ করলে এ অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে যেমন লাভবান হবে তেমনি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, কফি চাষে সম্ভাবনাময় মৌলভীবাজার জেলায় কফি উৎপাদনের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রকল্প গ্রহণ করে কৃষি বিভাগকে কাজে লাগালে জেলার সমতল ও পাহাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে কফি উৎপাদন সম্ভব। প্রয়োজন শুধু উদ্যোগ আর আন্তরিকতার। সেই সাথে প্রয়োজন একটি প্রসেসিং প্লান্ট।

 
Electronic Paper