চিরচেনা রূপে কমলগঞ্জের ২২ চা বাগান
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২২
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনায় ১৭০ টাকা মজুরিতে কাজে ফিরেছেন চা শ্রমিকরা। গত শনিবার (২৭ আগষ্ট) প্রধানমন্ত্রীর সাথে চা বাগান মালিক পক্ষের বৈঠক শেষে ১২০ টাকার মজুরির পরিবর্তে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারন করা হয়।
সোমবার ২৯আগস্ট দুপুরে সরেজমিনে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর, ফুলবাড়ি, পাত্রখোলা, শ্রীগোবিন্দপুর, মদন মোহনপুর, আলীনগর চা বাগান ঘুরে দেখা যায় পুরোদমে কাজে ফিরছেন চা শ্রমিকরা। দীর্ঘদিনের স্থবিরতা ভেঙে আবারও চা শ্রমিকদের পদচারণায় প্রাণ ফিরেছে চা বাগানগুলোতে। নারী চা শ্রমিকরা চায়ের সবুজের বুকে দাঁড়িয়ে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি তোলার চিরায়ত দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
শ্রমিকদরা কাজে যোগ দেয়ায় বাগানগুলো ফিরেছে চিরচেনা রূপে। বাগানগুলোতে দেখা মিলেছে শ্রমিকদের পাতা ছাঁটাই, পাতা উত্তোলন, ও চা তৈরীর জন্য চা পাতা পরিবহন করে কারখানায় নিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা।
ফুলবাড়ি বাগানের সেকশনের ভেতরে ঢুকতেই কথা হয় চা শ্রমিক জোৎস্না বাকতি, মিরা কুর্মী, পূর্ণিমা ভূমিজ, জয়া ভূমিজ, অর্চনা গোয়ালাসহ অনেকের সঙ্গে। তারা বলেন, ‘১৯ দিন ঘরে বসে ছিলাম। দুই বেলা আটা-রুটি, আর এক বেলা ভাত খেয়েছি। কোনও কোনও দিন কিছুই খেতে পারিনি। বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। আজকে কাজে আসছি, মজুরি পাবো, তারপর ডাল-ভাত খাইতে পারবো। ৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি করায় ভালো লাগছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি শ্রমিকদের কাজে ফেরার বিষয়ে দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে গতকাল রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকলেও অনেক বাগানে শ্রমিকেরা কাজ করেছে। আজ সোমবার আমাদের মনু-দলই ভ্যালির ২৩টি চা বাগানেই কাজ চলছে। দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৯ তারিখ থেকে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন চা শ্রমিকরা। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ৪ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এ সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসক দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধান হচ্ছিল না। সর্বশেষ ২৭ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেন।