ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সিলেটে সাব-রেজিস্ট্রারবিহীন সাত মাস

দলিল সম্পাদনে ভোগান্তি

দিপু সিদ্দিকী, সিলেট
🕐 ১১:০২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ০৬, ২০১৮

নেই কোনো হাঁকডাক। নেই দলিল হাতে মুহুরি কিংবা ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যস্ততা। দলিলে স্ট্যাম্প সাঁটানোর টুক টুক শব্দও নেই। সব সুনসান। কেউ কেউ আসছেন, আবারও হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এমন চিত্র সিলেট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের। সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে এ অফিসে স্থবিরতা চলছে। স্থায়ী সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় দলিল সম্পাদনের হারও কমেছে এক-তৃতীয়াংশ।

অন্য অফিসের একাধিক সাব-রেজিস্ট্রার সময় সুযোগ বুঝে সিলেটে সাব-রেজিস্ট্রারের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করলেও ৩১ অক্টোবরের পর থেকে স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী কোনো সাব-রেজিস্ট্রারই নেই। ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সিলেট সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন দলিল সম্পাদনকারী ক্রেতা-বিক্রেতারা। তা ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন অফিসের কর্মচারী, দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেন্ডাররা।

সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রারে সপ্তাহের ৫টি কার্যদিবসে গড়ে ৩শ দলিল সম্পাদন হয়ে থাকে। স্থায়ী সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় এ দলিল সম্পাদনের হার এক-তৃতীয়াংশ কমে এসেছে। অনেকে সময়মতো দলিল রেজিস্ট্রারি করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সিলেট সদর উপজেলার আলী আজমল বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তিনি দলিল সম্পাদনের জন্য সাব-রেজিস্ট্রারের অপেক্ষা করছেন। অফিসের লোকজন জানিয়েছে, স্থায়ী সাব- রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়েছে সরকার। উনি যোগদান করলে পরে দলিল সম্পাদন হবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ একান্ত অপারগ হলে জমি বিকিকিনি করে। কেউই শখ করে সম্পত্তি বিক্রি করে না। প্রয়োজনের সময় দলিল সম্পাদন করতে না পেরে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

তোয়াব আলী নামের এক জমি বিক্রেতা বলেন, জমি বিক্রি করে তিনি বিদেশ যাচ্ছেন। তার ভিসা টিকিট কনফার্ম হলেও সাব-রেজিস্ট্রার না থাকার কারণে তিনি জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে পারছেন না। এ কারণে জমির ক্রেতা টাকা পরিশোধ করছেন না। বাইরের উপজেলা থেকে আসা সাব-রেজিস্ট্রার নিয়মিত অফিসে না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধাজনক সময় মিলছে না। ফলে তার ভিসা টিকিট কনফার্ম হওয়ার পরও বিদেশ যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সিলেট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিস সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবর মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিলেট সদরে স্থায়ী সাব-রেজিস্ট্রার নেই। এ কারণে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেকে নির্ধারিত সময়ে নকল না পেয়ে মামলায় সময় প্রার্থনা করতে হচ্ছে। গত ৩১ অক্টোবরের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত কোনো সাব-রেজিস্ট্রারও নেই। এ কারণে নকলনবিসরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জের দায়িত্বে থাকা ইলিয়াস উদ্দিন জেলা রেজিস্ট্রারের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি সপ্তাহে একদিন অফিস করতেন। সম্প্রতি সিলেটে নতুন জেলা রেজিস্ট্রারের পদায়নের কথা আমরা জানতে পেরেছি।

এদিকে, সাব-রেজিস্ট্রার না থাকার কারণে যেমন নকলনবিসরা তাদের অফিসে অলস সময় কাটাচ্ছেন, পাশাপাশি রেকর্ডরুমও বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ নকল সংগ্রহ করতে বেগ পাচ্ছেন।

 
Electronic Paper