ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ওভারপাস নির্মাণে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্তের আশঙ্কা

আবু নাসের রতন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
🕐 ৪:১০ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০২২

ওভারপাস নির্মাণে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্তের আশঙ্কা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন মহাসড়কে ওভারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। শহরের বাইপাস সড়কের পুনিয়াউট থেকে বিরাসার মোড় পর্যন্ত এই ওভারপাস নির্মাণ। সেই ওভারপাসের পিলার নির্মাণ করা জেলা সদরের পৌর এলাকার টাউন খালের মধ্যখানে। ইতোমধ্যেই পিলার বেইজ ঢালায়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে।এতে করে খাল দিয়ে নৌকা চলাচলসহ খালে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন করছেন সচেতন মহল।

এ কারণে খালটি হারাবে তার শত বছরে ঐতিহ্য। টাউন খালটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের তিতাস নদীর কান্দিপাড়া টানবাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের গোকর্ণঘাট দিয়ে আবার তিতাস নদীতে মিলিত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার সড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পৈরতলা সেতুসংলগ্ন স্থানে টাউন খালের মাঝামাঝি অংশে প্রকল্পের রেলওয়ে ওভারপাসের পিলার স্থাপনের জন্য পাইলিংয়ের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, তিতাস নদীর সঙ্গে যুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টানবাজার ও কান্দিপাড়া এলাকা থেকে খালটি শুরু হয়ে শহরের গোকর্ণঘাট দিয়ে আবার তিতাসের সঙ্গেই মিলিত হয়েছে। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। প্রায় দশ বছর আগে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে খালের দুই পাড়ে সিসি ব্লক ফেলা হয় এবং নির্মাণ করা হয় ফুটপাত ও রেলিং। কিন্তু তখন অভিযোগ ওঠে, সৌন্দর্য বর্ধনের নামে খালটি মেরে ফেলা হয়েছে। এরপর থেকে জেলা পরিষদ বা পৌরসভা কেউই খালের রক্ষণাবেক্ষণ করেনি। সময়ের সঙ্গে কমে এসেছে খালের প্রশস্ততা ও গভীরতা। এর মধ্যে সম্প্রতি শহরের দক্ষিণ পৈরতলা এলাকায় ওভারপাস নির্মাণের জন্য খালের বুকে পড়ছে পিলার।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম সাহেদ মিয়া বলেন, খালের মাঝখানে পিলার নির্মাণ করলে খালের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যাবে। শত বছরের পুরনো খালের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর ফারুক বলেন, খালের মাঝখানে পিলার হলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। নাব্য সংকট দেখা দেবে। পানি ফুলে দুই পাশের পাড়সহ বাড়িঘর ভেঙে খালে পড়বে। এটি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রকল্প, তাই শুরুতে কিছু বলিনি।

নদীর নিরাপত্তা ও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা সামাজিক সংগঠন নোঙরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, খালের মাঝখানে পিলার নির্মাণের বিষয়টি নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তাতে কোনো সাড়া মেলেনি। মাঝখানে পিলার হলে নাব্য সংকট, নৌকা চলাচলসহ পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, খালের মাঝখানে দুই মিটার দৈর্ঘ্য পিলার নির্মাণ করা হবে। খালের ওই অংশে খনন করে প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত প্রশস্ততা বাড়ানো হবে। আশা করা যায়, তখন কোনো সমস্যা হবে না।

জেলা প্রশাসক শাহ্গীর আলম বলেন, চার লেন একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প। প্রকল্প কমিটি একটি বিকল্প উপায় বের করেছে। তারা ওই অংশে পিলারের দুই পাশে খালের প্রশস্ততা বাড়িয়ে দুই পাড়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

 

 
Electronic Paper