গ্রিনিজকে ঘিরে আলোর মেলা
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ২:২৫ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৮
চারদিকে ক্যামেরার ফ্লাশ ঝলসাচ্ছে। কেউ বা মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলতে ব্যস্ত, কেউ একটু হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে সামনে এসে দাঁড়ালেন সাবেক পেস বোলার আনিসুর রহমান।এক গাল হেসে বুকে জড়িয়ে ধরলেন আনিসকে। বললেন, ‘সেই একইরকম স্লিম আছ! মনে হচ্ছে ১৯৯৭ সালে ফিরে গেলাম।’
হ্যাঁ, ১৯৯৭ সাল ফিরে এসেছিল কাল ঢাকার এক পাঁচ তারকা হোটেলে। ফিরে এসেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের বাক বদলে দেওয়া ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের স্মৃতি। কারণ, ঢাকায় এসেছেন সেই ট্রফি জেতানো বাংলাদেশের সাবেক কোচ, সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান গর্ডন গ্রিনিজ। বাংলাদেশকে আইসিসি ট্রফি জিতিয়ে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিয়ে যাওয়া এই কোচ বিশ্বকাপ চলা অবস্থায়ই বাংলাদেশের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি পেয়েছিলেন। তারপর দুই বার বাংলাদেশে পা রাখলেও এবার ব্যাপারটা একটু আড়ম্বর করেই করা হলো। কিংবদন্তি এই সাবেক ক্রিকেটারকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে দেওয়া হলো এক সম্বর্ধনা। এই সম্বর্ধনার জবাব দিতে গিয়েই গ্রিনিজ বললেন, ‘বাংলাদেশে আসাটা আমার কাছে কোনো বিদেশ ভ্রমণ নয়; এটা আমার দেশে ফেরার মতো ব্যাপার। হয়তো যতো নিয়মিত আসা উচিত, তা পারি না। কিন্তু বাংলাদেশ আমার হূদয়ে আছে।’
গর্ডন গ্রিনিজকে সম্বর্ধনা দিতে গতকাল এক হয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের কয়েকটি প্রজন্ম। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ছিলেন অনুষ্ঠানে। এ ছাড়া ছিলেন বিসিবির সাবেক ও বর্তমান পরিচালকরা। আলো হয়ে ছিলেন ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি ও ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ দলের খেলোয়াড়রা। তাদের সাথে আলাদা আলাদা করে ছবিও তুললেন কিংবদন্তি এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান। এ ছাড়া এসেছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটাররাও। তারা কাছ থেকে দেখলেন এই বাংলাদেশের ইতিহাস বদলে দেওয়া মানুষটিকে।
সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানটা অবশ্য খুব প্রলম্বিত হয়নি। প্রথমেই গ্রিনিজের ভূমিকা ও তার সাথে বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক তুলে ধরে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বিসিবি সভাপতি যথার্থই বলেছেন, ‘আমরা গর্ডন গ্রিনিজের নাম শুনে এবং তার অসামান্য খেলা দেখে বড় হয়ে উঠেছি। তিনি ছিলেন একটা প্রজন্মের কাছে ব্যাটিংয়ের প্রতীক। কিন্তু এই গর্ডন গ্রিনিজ বাংলাদেশের জন্য তার চেয়ে বেশি কিছু। তিনি বাংলাদেশকে একটা নতুন উচ্চতায় তুলে দিয়েছিলেন।’
এরপর গ্রিনিজ তার বক্তৃতায় এই দেশের সাথে তার সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। বক্তৃতাশেষে ১৯৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফির দলের পক্ষ থেকে গ্রিনিজের হাতে স্মারক তুলে দেন প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দূর্জয়। এরপর বিসিবির পক্ষ থেকে দুটি স্মারক উপহার দেওয়া হয়। সেই সাথে দেওয়া হয় ৫ লাখ টাকার পুরষ্কার।
এই পুরষ্কারের অর্থ গ্রিনিজ তার চ্যারিটি ফাউন্ডেশনে দান করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।