পর্দা উঠল টোকিও অলিম্পিকের
ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১০:০০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২১
করোনায় থমকে যাওয়া টোকিও অলিম্পিক গেমস নিয়ে ছিল নানা হতাশা, তর্ক-বিতর্ক। অবশেষে গতকাল নীরবে পর্দা উঠেছে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ অলিম্পিকের। গতকাল বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় প্রায় দর্শকশূন্য গ্যালারিতে টোকিও অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়। আটষট্টি হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিতি ছিলেন বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদ ও অতিথিবৃন্দ। করোনাভাইরাসের কবল থেকে রক্ষা পেতেই আয়োজকদের এই বিধিনিষেধ দিয়েই শুরু হলো গেমসে পদক লড়াইয়ের যুদ্ধ।
অনুষ্ঠানের শুরু হয়েছে একটি ভিডিওর মাধ্যমে। এরপর মার্চ পাস্ট শুরুর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শান্তিতে নোবেল জয়ী বাংলাদেশি ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তখন তার হাতে ছিল অলিম্পিকের লোগো সংবলিত অলিম্পিক লরেল। টোকিওর আসরের শুভকামনা জানান তিনি।
করোনা মহামারীর কারণে এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানমালাও ছিল ভিনমাত্রার। যেখানে শুরুতেই ভিডিওর মাধ্যমে করোনাকালীন দৃশ্যাবলী স্থান পায়। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে করোনাভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত বিশ্বের চিত্র। ঘরবন্দি মানুষ। এই কঠিন সময়ে অ্যাথলেটদের কীভাবে কাটাতে হয়েছে, প্রস্তুতি নিতে হয়েছে, তা তুলে ধরেন তোসুবাতা আরিসা; যিনি একই সঙ্গে নার্স ও বক্সার। ফিট থাকতে একাকি ট্রেড মিলে দৌড়েছেন আর্সিয়া; যার মধ্যে ফুটে উঠেছে করোনা মহামারীর সময়ে সারা বিশ্বের অ্যাথলেটরা ঘরে একা অনুশীলন চালিয়ে যেতে কতটা কষ্ট করেছেন।
এরপর ক্রীড়াবিদদের মার্চ পাস্ট। সবার আগে ছিল গ্রিস, যারা অলিম্পিক গেমসের প্রথম আয়োজক। এরপর অলিম্পিকসের রিফিউজি দল এবং সবশেষে আসে স্বাগতিক জাপান দল। সব মিলিয়ে ২০৭টি দেশ এবারের আসরে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন সাঁতারু আরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশের হয়ে এই আসরে অংশ নেবেন মোট ৬ অ্যাথলেট। বাকিরা হলেন-সাঁতারু জুনাইনা আহমেদ, দুই আর্চার রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী, স্প্রিন্টার জহির রায়হান ও শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকি।
টোকিওর অলিম্পিকস স্টেডিয়ামে আনা হয় অলিম্পিক রিং। তাতে ফিরে আসে টোকিওর ১৯৬৪ আসরের স্বস্মৃতিও। অলিম্পিকস রিংয়ের সাতটি বৃত্ত তৈরি করা হয়েছে সেই গাছের কাঠ দিয়ে, যে গাছগুলো ১৯৬৪ সালের অ্যাথলেটরা লাগিয়েছিলেন।
গ্যালারিতে বসে টোকিও বাসীর উদ্ভোধনী দেখার সুযোগ না হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের দর্শকের মতোই টিভিতেই তাদের দেখতে হল এই মহাযজ্ঞ। কিন্তু এরপরেও অতি উৎসাহী ব্যক্তিদের এতে বয়েই গেছে। তারা স্টেডিয়ামে ঢোকার সুযোগ নেই জেনেও ঠিকই অলিম্পিক স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন, শত শত মানুষ।
স্টেডিয়ামের পাশে অলিম্পিক মিউজিয়ামের সামনে দর্শক ভিড় করে অলিম্পিক রিংয়ের সঙ্গে ছবি তুলছিলেন। এই উৎসাহী ব্যক্তিদের একজন মাকো ফুকুহারা। স্টেডিয়ামের বাইরে কেন দাঁড়িয়ে আছেন- এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা আবহের জন্য এসেছি, এই আলোকসজ্জা (স্থানীয় সময় রাত আটটায় উদ্বোধন) ও আতশবাজি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখব, এই আশায় আছি। আর না পারলেও অন্তত অনুষ্ঠানের একটু স্বাদ পাচ্ছি। এত দিন পর্যন্ত মনেই হয়নি অলিম্পিক হচ্ছে। কিন্তু এখন স্টেডিয়ামের বাইরে আসার পর মনে হচ্ছে, অলিম্পিক আসলেই হচ্ছে।’
দীর্ঘদিন ধরে টোকিওতে আছেন তাইওয়ানের নাগরিক হান ই-তিং। সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠানে আতশবাজি দেখার আশায় আছেন হান ই-তিং, ‘এক বছর ধরে অপেক্ষায় আছি, খুবই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি। এক বছর পেছানোতে খুব খারাপ লেগেছে। অবশেষে এখন হচ্ছে এবং আবহটা দারুণ লাগছে।’