ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কমেন্টিবক্সে আথারের বাংলাদেশ ক্রিকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১২:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২০

আথার আলী খান। সম্প্রতি তিনি নিজেই নিজের নামের সঠিক বানানের কথা শোনালেন, আতাহার নয়, আথার আলী। এক সময় জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছিলেন। আকরাম, নান্নু, বুলবুলদের সঙ্গে জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। এখনো ক্রিকেট থেকে হারিয়ে যান নি। ধারাভাষ্যকার হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বাঙালি ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা নিয়ে অনঢ়গল কথা বলে যাচ্ছেন। এটি করতে গিয়েও তার জীবনের শুরুটা ছিল বেশ কষ্টের। তার কারণ, জাতীয় দলের টানা পরাজয়ের গ্লানি যে তাকেও কমেন্ট্রিবক্সেও শুনতে হত- বাংলাদেশ কেন যে খেলতে আসে! প্রতিটি কটু কথা যেন আথারকে দংশন করত। তবে সাহস হারা হননি।

বললেন, ধৈর্য আর বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন বুনেছি। কমেন্ট্রিবক্সে আথারের দেখা বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে উঠে আসল নানা কথা যা ‘দৈনিক খোলা কাগজের’ পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হল-

বাংলাদেশে আত্মবিশাসী বিশপ
বিশ্বের বরেণ্য ধারাভাষ্যকাররা এখন তার বন্ধু। বাংলাদেশের শুভাকাক্সক্ষী। তেমনি একজন হচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বিশপ। ছিলেন পৃথিবী কাঁপানো পেসার। এই লোকটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর প্রচণ্ড আস্থা রেখেছেন। এমন কি আথারের পছন্দের ধারাভাষ্যকারদের একজন হলেন বিশপ।

মিডিয়াকে তিনি বলেন, ‘ধারাভাষ্য কক্ষে আমার প্রিয় ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ। তার সঙ্গে ধারাভাষ্য করতে গিয়ে উপভোগ করি। এই নয় যে ম্যাচ নিয়েই আমরা শুধু কথা বলি। আমরা কিন্তু ম্যাচ চলাকালে সবকিছু নিয়েই গভীরভাবে আলোচনা করি। দুই ধারাভাষ্যকার যদি পরস্পরের কথা বোঝেন এবং একে অপরকে প্রশ্ন করে, এরপর দর্শকদের কাছে উত্তর পৌঁছে দেন তাহলে সেই ধারাভাষ্য বেশ জমে ওঠে। বিশপ তাই করেন। এতে আমার কাছে অসাধারণ অনুভূতি হয়, নিজেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’

আথার আরও জানান, ‘ইয়ান বিশপ বাংলাদেশের ওপর সবসময় বিশ্বাস রেখেছেন। তিনি জানতে চাইতেন, কেন ভালো হচ্ছে না। কেন খারাপ খেলছে, এটা কিন্তু বলতেন না। বলতেন- তোমার দল তো ভালো, কেন পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে না। এটা আমাকে অনেক প্রেরণা দিত।’

জিওফ বিশ্বাসই করেনি বাংলাদেশ জিতবে
দুটি ম্যাচের কথা বলি। একটি শ্রীলঙ্কা অন্যটি অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ। যে ম্যাচটিতে রিয়াদ অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছে।
২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটি। রিয়াদ বিশ্বকাপে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করেছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে আমি কমেন্ট্রি টিমে ছিলাম না। আমি খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। এক বন্ধুর সঙ্গে প্রত্যেক ম্যাচ মাঠে বসে দেখছিলাম। একটা খাবার জায়গায় আমার সঙ্গে বিবিসি’র রেডিও ধারাভাষ্যকারদের দেখা হয়। তার অফারে আমি বিবিসি রেডিও ধারাভাষ্যনা দেই বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি। আমার সঙ্গে স্যার জিওফ বয়কট ছিলেন। পুরো ম্যাচে যতবার তার সঙ্গে ছিলাম, ও একবারও বিশ্বাস করছিল না যে বাংলাদেশ এই ম্যাচটা জিতবে। আমি শুরু থেকেই বলছিলাম- একটা পার্টনারশীপ হলে আমরা জিতে যেতে পারি। সে বিশ্বাস করতে পারছিল না ইংল্যান্ড হারতে পারে। তবে এই অনুভূতি এখন পুরোপুরি বদলে গেছে।’

রিয়াদের ছক্কায় অবাক ব্রেট লি
বিশ্বকাপের ধারাবাহিকতা রিয়াদ ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কায় নিদহাস ট্রফিতেও বজায় রেখেছিল। আথার জানান, একটা সময় ভাবা হত বাংলাদেশকে হারানো কঠিন হবে না। ধারাভাষ্য কক্ষে এমন একটা অনুভূতির দেখা মিলত। এখন কিন্তু সেটা নেই। এখন একদমই নেই। এখন বাংলাদেশ দল যখন মাঠে নামে, সবাই ভাবে-ধরতে আসছে, খাইছে আমারে, বাবারে বাবা! একটু ভয়ে থাকে। এটাই এখনকার বাস্তবতা।
ঐ ম্যাচে রিয়াদের ছক্কার মাইর দেখে বিস্ময় প্রকাশ করলেন ব্রেট লি। অবাক হয়ে দেখছেন ছক্কার মারটি। সে বলেই ফেলল- এটা কি ভাবে হল। আমার মনে হয় ব্রেট লি ভাবে নি বাংলাদেশ জিতবে। এমন কি অন্যান্য ধারাভাষ্যকাররাও ভাবেনি এমন কিছু। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশ জিতল ২ উইকেটে।

 
Electronic Paper