করোনায় ক্রীড়াবিদদের নিলাম প্রতিযোগিতা
ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১২:০২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২০
করোনায় খেলোয়াড়দের মধ্যে বেড়ে উঠেছে করুণা। আর তাইতো যার যা অবস্থান থেকে অসহায়দের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তারা। তবে নতুন করে যোগ হয়েছে খেলোয়াড়দের নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ নিলামে তোলা। যে সম্পদে আঁকড়ে আছে বাংলাদেশকে সুখ্যাতি বয়ে দেওয়ার অর্জন।
স্মৃতি সম্মৃদ্ধ এই সম্পদগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যবহৃত ক্রীড়া সামগ্র। ক্রিকেটারদের রয়েছে যেমন- জার্সি, ব্যাট, গ্লাভস, ক্যাটস, উইকেটের স্টাম্প, সানগ্লাস, ক্যাপ ইত্যাদি। তেমনি ফুটবলারদের রয়েছে বুট, জার্সি। শুটারদেরও রয়েছে রাইফেল, পদক, জার্সিসহ ইত্যাদি। তাদের এগুলো জমা রাখার লক্ষ্য একটাই, যদি বয়োবৃদ্ধ কালে কখনো বিক্রি করে কাজে আসে কিংবা কোন অসহায়দের সাহায্যার্থে কাজে আসে।
বাংলাদেশে নিলামে কোন কিছু তোলা এবং বিক্রি করাতে প্রথম নাম লিখালেন সাকিব আল হাসান। ২০ লাখ টাকায় তিনি বিক্রি করেছেন, ২০১৯ লন্ডন বিশ^কাপে চমক দেখানো ব্যাটটি। মাশরাফি নিলামে তুলতে যাচ্ছেন তার জার্সি, মুশফিক তুলছেন শ্রীলঙ্কায় ডাবল সেঞ্চুরি করা ব্যাটটি, আশরাফুল তুলছেন দুটি ব্যাট, সবচে কম বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরি করা এবং ন্যাট-ওয়েস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চমক দেখানো ব্যাটটি।
ক্রিকেটারদের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনের অন্যান্য খেলোয়াড়রা নিজেদের পছন্দের ক্রীড়া সামগ্রীগুলো নিয়ে নেমে এসেছেন নিলামে। সাবেক ফুটবলার আলফাজ আহমেদ নিজের ঐতিহাসিক নিলামে তোলার ঘোষণা দিলেন। প্রয়াত ফুটবল তারকা মোনেম মুন্নার স্ত্রী সুরভী মোনেম বিক্রি করতে চাচ্ছেন তার স্বামীর একটি জার্সি।
২০০২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শুটার আসিফ হোসেন খান এগিয়ে এসেছে তার সেই সোনার পদকটি নিয়ে। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই সোনার পদক জিতে হৈইচৈই ফেলে দিয়েছেন আসিফ। ভারতের নামী শুটার অভিনব বিন্দ্রাকে পরাজিত করেন। তিনি বলেন, ‘করোনায় এই সময় মানুষের পাশে দাড়াতে চাই। তাই এই সিদ্ধান্ত।’
জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক স্ট্রাইকার রোকনুজ্জামান কাঞ্চনও বিক্রি করতে চান তার খুব প্রিয় একটা জার্সি। বাদ থাকেননি ফুটবলার শাহাজাদ উদ্দিন টিপু। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ প্রথমবার সাফ ফুটবল জিতেছিল ঢাকায়। তাতে বড় অবদান রাখেন কাঞ্চন। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২-১ গোলের জয়ে প্রথম গোলটি তার।
যদিও গোল্ডেন গোল মতিউর মুন্নার। ফাইনালে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র গোল কাঞ্চনের। পরে টাইব্রেকারে জেতে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে ৩ গোল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন স্ট্রাইকার কাঞ্চন।
কাঞ্চন বলেন, ‘২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ টুর্নামেন্ট জয় ছিল আমাদের দীর্ঘ প্রতিক্ষার ফল। আমরা প্রথমবার এই টুর্নামেন্ট জিতেছি। এই জয়ে অবদান রাখতে পেরে সব সময়ই গর্ব অনুভব করি। টুর্নামেন্টে ফাইনালের জার্সিটি আমার খুবই প্রিয়। এটি করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহয়তায় উৎসর্গ করছি। নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ করোনায় অসহায় মানুষদের জন্য ব্যয় করব।
আলফাজ আহমেদ আগেই ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু সাফ গেমসের যে জার্সিটি পরে তিনি ফাইনালে গোল করেছিলেন সেটি নিলামে তুলতে চেয়েছেন। মোনেম মুন্নার স্ত্রীও জানান, ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে চারজাতি টুর্নামেন্ট জয়ে মুন্নার জার্সিটি তিনি নিলাম করতে চান। ২০১৩ সালে কাঠমান্ডুতেই সাফ ফুটবলের ফাইনাল পরিচালনা করার জার্সিটি নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্য সাতক্ষীরার এক ব্যবসায়ী ২ লাখ টাকায় জার্সিটি কেনার আগ্রহ জানিয়েছেন।