ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাদকসেবী থেকে ফুটবলার

ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১২:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০

আয়াক্স থেকে হাকিম জিয়েখকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোয় কিনেছে চেলসি। মরক্কোর জাতীয় দলে খেলা এ ফুটবলারের উঠে আসার পথটা ছিল বেশ কঠিন। শৈশবে দূরে সরে গিয়েছিলেন ফুটবল থেকে হাকিম জিয়েখ। ইউরোপিয়ান ফুটবলে পরিচিত নাম। ২০১৮-১৯ চ্যাম্পিয়নস লিগ মৌসুমে নির্বাচিত সেরা ২০ ফুটবলারের একজন তিনি। ড্রিবলিং, ফিনিশিং, দূরপাল্লার শটে নজরকাড়া অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। আয়াক্স থেকে ৪৪ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০৪ কোটি টাকা) খরচায় তাকে এমনিতেই কেনেনি চেলসি। জানেন কি, এই জিয়েখের ফুটবলার হয়ে ওঠাই হতো না!

 

বাবার মৃত্যু ফুটবল থেকে অনেক দূরে ঠেলে দিয়েছিল তাকে। বানিয়েছিল মাদকসেবী।

জিয়েখের বয়স তখন ১০ বছর। কৈশোরে পা দেওয়ার সে সময়টা এমনিতেই ভীষণ প্রাণবন্ত থাকে। ভীষণ উচ্ছল। জিয়েখের জীবনে তা হয়নি। তখন ফুটবল ভালোবাসতেন। স্বপ্ন দেখতেন বড় ফুটবলার হবেন। কিন্তু বাবার আকস্মিক মৃত্যু তাকে ফুটবল থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। সেই বয়সেই ডুবে যান নিষিদ্ধ মাদকে।

ডাচ্? মা ও মরোক্কান বংশোদ্ভূত বাবার ঔরসে জন্ম জিয়েখের। নয় সন্তানের সংসারে জিয়েখ ছিলেন সবচেয়ে ছোট। ফুটবলার হয়ে ওঠায় সায় ছিল তার বাবার। স্থানীয় সৌখিন ক্লাব রিয়েল ড্রোনটেনে খেলায় সাহায্য পেয়েছিলেন বাবার। কিন্তু জিয়েখের বাবা ছিলেন অসুস্থ। মাল্টিপল স্কলেরোসিস (স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়) রোগে ভুগছিলেন তিনি।

এ নিয়ে ডাচ্ সংবাদমাধ্যম ‘দেল ভলসক্রান্ত’কে জিয়েখ বলেন, ‘রোগটা তাকে শেষ করে দেয়। সে খেতে, কথা বলতে কিংবা হাঁটতেও পারত না। তার আগে একবার হার্টঅ্যাটাকও হয়েছে। অনেক কাজ করার পাশাপাশি সে প্রচুর ধূমপানও করত।’

জিয়েখের পরিবার এ নিয়েই কোনোমতে চলছিল। কিন্তু সবচেয়ে বাজে ঘটনাটা ঘটল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে।

চেলসি মিডফিল্ডারের ভাষায়, ‘সবকিছু এখনো মনে আছে। এটা ছিল শীতের সময়, বড়দিনের পরপরই। শোয়ার ঘরে ছিল বাবা। বেশ অসুস্থ। সে রাতে তার পাশে থাকতে চাইলেও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তার বিছানার এক কোণে ঘুমিয়ে যাই। মাঝরাতে হুট করে ঘুম ভেঙে যায়। ওপরতলায় নিজের কামরায় চলে যাই। প্রায় রাত ৩টার দিকে শুনতে চাই পরিবারের বাকিরা কান্নাকাটি করছে। এসে দেখি বাবা মারা গেছে। তখন আমার বয়স ১০ বছর।’

এরপর জিয়েখের দুনিয়াটাই পাল্টে গেল। তার ভাষায়, ‘স্কুলে আর যাইনি। ফুটবল অপ্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। পুরো শেষ হয়ে যাই।’ ভীষণ কষ্টের সে সময় জিয়েখের জীবনের দেবদূতের মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন মরক্কোর সাবেক মিডফিল্ডার আজিজ দৌফিকার। উত্তর আফ্রিকার দেশটি থেকে নেদারল্যান্ডসে খেলা প্রথম ফুটবলার এই দৌফিকার। নেদারল্যান্ডসের ড্রোনটেন শহরে তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে এখন কাজ করছেন তিনি।

 
Electronic Paper