সিরিজ জয়ের প্রতিশ্রুতি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১২:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২০
পরিবার ভীত ও শঙ্কিত, তাই পাকিস্তানে যাচ্ছেন না মুশফিকুর রহিম। তার সঙ্গে পারিবারিক একটি সম্পর্ক আছে মাহমুদউল্লাহর। তিনি তবে কিভাবে যেতে পারছেন? বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক জানালেন, কাজটি সহজ ছিল না তার জন্যও। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে, বুঝিয়ে তবেই তিনি আদায় করে নিতে পেরেছেন অনুমতি।
মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর স্ত্রী সম্পর্কে আপন বোন। পারিবারিকভাবে তাই বাংলাদেশের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার বেশ ঘনিষ্ঠ। তবে পাকিস্তান সফরের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দুই জনের পারিবারিক অভিজ্ঞতা দুই রকম। বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচ তো বহুদূর, কোনো অনুশীলন সেশনও বাইরে থাকতে চান না যিনি, সেই মুশফিক শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছেন, পরিবারকে শঙ্কায় রেখে তিনি যাবেন না পাকিস্তানে। একই মানসিক অবস্থা ছিল মাহমুদউল্লাহর আপনজনদেরও। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি পেরেছেন পরিবারকে অভয় দিতে।
সেই অনুমতিটুকু আদায় করতে অবশ্য যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। কাল সংবাদ সম্মেলনে সীমিত ওভারের বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘প্রথমে অবশ্যই কঠিন ছিল। কারণ আমার পরিবারও দুর্ভাবনায় ছিল। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর ওরা রাজি হয়েছে। এদিক থেকে আমি কিছুটা স্বস্তিতে থাকব, যেহেতু আমার পরিবার এতটা শঙ্কা অনুভব করবে না। পাকিস্তান আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাই দিচ্ছে।’
তবে মুশফিকের বাস্তবতাও খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন মাহমুদউল্লাহ। জানাচ্ছেন পূর্ণ সমর্থন, ‘মুশির সিদ্ধান্ত আমিও সমর্থন করি। পরিবারের একটা ইস্যু থাকেই সবসময়। কোনো ক্রিকেটারের বা যে কোনো মানুষের জন্য পরিবারের চেয়ে বড় কোনো কিছু হতে পারে না। মুশফিকের সিদ্ধান্তের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন আছে।’
আজ রাত আটটায় মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে লাহোরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে বাংলাদেশ দল। পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে এটা প্রথম সফর হবে টাইগারদের। এই দফায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে চলে আসবে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে খুব বাজে সময় কাটাচ্ছে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ওদিকে টাইগাররা দলে পাচ্ছে না মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের মতো অভিজ্ঞ দুজন ক্রিকেটারকে। সবমিলিয়ে কুড়ি ওভারের তিনটা ম্যাচ কঠিন পরীক্ষা বাংলাদেশের জন্য।
কিন্তু প্রতিপক্ষ কিংবা তাদের ফর্ম নিয়ে ভাবতে নারাজ। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে নিজেদের নিয়ে ভাবা বেশি জরুরি। মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা নয় নম্বরে, ওরা এক নম্বরে। টি-টোয়েন্টিতে তারা ধারাবাহিকভাবে খেলে আসছে। আমার মনে হয়, যেভাবে আমরা ক্রিকেট খেলেছি শেষ কয়েকটি সিরিজে, আমি খুব আশাবাদী যে ভালো কিছু ম্যাচ উপহার দিতে পারব। ইনশাআল্লাহ্ আমরা সিরিজ জেতার চেষ্টা করব।’
র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে সময়টা অবশ্য ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তানের। ফল হওয়া সবশেষ ৯ ম্যাচের কেবল একটি জিতেছে তারা, হেরেছে বাকি আটটিতে।
দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশড হয়েছে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে। ২০১৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ।
সবশেষ তিনবারের মুখোমুখি লড়াইয়ের দুটিতে জেতা দলটির চোখে সিরিজ জিতে ফেরার স্বপ্ন, ‘শেষ কয়েকটা সিরিজে পাকিস্তান হয়তো খারাপ করেছে। তবে তারা টি-টোয়েন্টিতে অনেক শক্তিশালী দল। তাদের দেশে খেলা। দেশের মাটিতে শেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারা নিয়ে তাদের হয়তো উদ্বেগ আছে।’
মাহমুদউল্লাহ আরো বলেছেন, ‘আমাদের মনোযোগ দিতে হবে আমরা কতটা ভালো খেলতে পারি সেদিকে। আমি মনে করি, এই টিমে যারা আছে তারা ভালো ফর্মে আছে। আমাদের বুঝতে হবে, যদি সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি তাহলে আমরা জিততে পারব। আমাদের ক্রিকেটটা আমরা কিভাবে প্রয়োগ করতে পারি, কিভাবে নিজেদেরকে ব্যবহার করতে পারি, ব্যক্তিগতভাবে এটা নিয়ে ভাবা আমি মনে করি জরুরি।’