ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভাবনায় সিরিজ-ভ্রমণ দুটোই

ক্রীঢ়া ডেস্ক
🕐 ২:০৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২০

পাকিস্তান সফরে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। তাও একবার নয়, তিন তিনবার। প্রতিবারই ভ্রমণ ঝক্কি বেশ ভাবাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও ক্রিকেটারদের। কারণ তিন হাজার কিলোমিটার দূরত্ব বাংলাদেশ দলকে পাড়ি দিতে হবে প্রায় দশ ঘণ্টায়! আকাশ পথে তা এক রকম অবিশ^াস্যই বলা চলে। কিন্তু ওরকম ভ্রমণক্লান্তির দিকে যেতে চায় না বাংলাদেশ। সফরটা সহজ করার ভানায় আছে বিসিবি।

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি লাহোরের কোনো ফ্ল্যাইট নেই। টাইগারদের পৃষ্ঠপোষক কাতার এয়ারওয়েজ। তাদেরও লাহোর যাওয়ার কোনো উপায় নেই। প্রথমে ঢাকা থেকে কাতারের দোহায় যেতে হবে। সেখানে লাগবে সাড়ে চার থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। দোহা থেকে লাহোরে আসতে লাগবে প্রায়ই একই সময়। মজার বিষয় হচ্ছে ঢাকা থেকে দোহা যাওয়ার পথে বিমানটি যাবে পাকিস্তানের আকাশ পথ দিয়েই!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এমন ভ্রমণ ক্লান্তির পর টি-টোয়েন্টি সিরিজটা বাংলাদেশ ঠিকঠাক খেলতে পারবে তো? দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে বিসিবিও। তাই ক্রিকেটারদের ভাড়া করা উড়োজাহাজে পাকিস্তানে নেওয়ার চিন্তা করছে তারা। টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বিসিবি দলকে বিশেষ ভাড়া করা বিমানে (চার্টার্ড ফ্লাইট) লাহোরে পাঠানোর কথা ভাবছে। তাই জটিল ওই পথে না গিয়ে ভাড়া করা উড়োজাহাজে যাওয়াটাই বাংলাদেশ দলের জন্য শ্রেয়। এ প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন বলেছেন, ‘চার্টার্ড বিমানে গেলে ভাড়া প্রায় একই পড়বে। আমরা তাই সম্ভাব্য সেরা বিকল্প খুঁজছি। এখনো অবশ্য বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি, তবে এটা নিয়ে কাজ চলছে।’

পাকিস্তান সফরের এই ভ্রমণ বিষয়টা ভাবাচ্ছে ক্রিকেটারদেরও। কাল অনুশীলনেও এনিয়ে নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টা করতে দেখা গেল তাদের। অনুশীলন শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে এসে এনিয়ে সরাসরি অবশ্য কিছু বলেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রচারমাধ্যমের সামনে তিনি শুধু কথা বললেন সদ্য সমাপ্ত বঙ্গবন্ধু বিপিএল, নিজের পারফরম্যান্স এবং আসন্ন কুড়ি ওভারের সিরিজ নিয়ে। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হতে পারেননি, তবে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন শান্ত। ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংসটা নতুন করে চিনিয়েছেন তিনি। খুলনা টাইগার্সের হয়ে বিপিএল খেলা বাঁ-হাতি ওপেনার পরের ম্যাচে করেছিলেন অপরাজিত ৭৮। টুর্নামেন্টে ১১ ম্যাচে ৩৪.২২ গড়, ১৪৩.৯২ স্ট্রাইকরেটে ৩০৮ রান করা নাজমুল সুযোগ পেয়েছেন পাকিস্তান সফরের টি-টোয়েন্টি দলে। পুরো টুর্নামেন্টে তার ব্যাটিং গড়ই ছিল সবচেয়ে বেশি।

খুলনার হয়ে ওপেনিং পজিশনে ব্যাটিং করেছেন নাজমুল। জাতীয় দলে যে এই পজিশনে তার খেলার সুযোগ নেই সেটি টিম ম্যানেজমেন্ট এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। ওপেনিং পজিশনে দারুণ এক টুর্নামেন্ট খেলা নাজমুল অবশ্য এ নিয়ে ভাবছেনই না, ‘পজিশন নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। যেহেতু দলে সুযোগ পেয়েছি, যেকোনো পজিশনে খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। যেখানেই খেলব চেষ্টা করব ভালো করার। যেখানেই ব্যাটিং করি ভালো খেলার চেষ্টা করব।’

পজিশন নিয়ে চিন্তা নেই। তবে নিজের পছন্দ-অপছন্দ নিশ্চয়ই আছে। নাজমুল অবশ্য এ ভাবনাও ভাবতে চাইছেন না। বরং বিষয়টি দেখছেন এভাবে, ‘সাধারণত আমি টপ অর্ডারে খেলি। ওখানে নামলে তো অবশ্যই ভালো। যেটা বললাম, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে যেখানে নামায়, যেকোনো পজিশনে আমার রান করা উচিত। বড় বড় ব্যাটসম্যানরা যেকোনো পজিশনে ব্যাটিং করে এবং রান করার সক্ষমতা রাখে। ওভাবেই আমি চিন্তা করছি যে যেখানে ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসবে, সেখানে ভালো করার চেষ্টা করব।’

পাকিস্তানে যেহেতু খেলতে যাচ্ছেন, নিরাপত্তার প্রসঙ্গ বারবার আসছে। নাজমুল বলছেন, তার ভাবনাজুড়ে এখন শুধুই ক্রিকেট, ‘এসব নিয়ে আসলে চিন্তা করছি না। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খেলাটায় মনোযোগ রাখছি। যেহেতু এগুলো আমাদের হাতে নেই, এগুলো নিয়ে চিন্তা করছি না। একবারও ভাবিনি। গতবারও আমি গিয়েছি পাকিস্তানে (২০১৮ সালে ইমার্জিং টিমের হয়ে)। এগুলো নিয়ে একবারেই চিন্তা করছি না। ম্যাচ নিয়ে ভাবছি।’

পাকিস্তানে আগে খেলেছেন বলে নাজমুলের বেশ ভালো ধারণা তৈরি হয়েছে লাহোরের উইকেট সম্পর্কে, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমরা যে উইকেটে খেলে এসেছি, সেটা খুব ভালো ছিল। স্পোর্টিং উইকেট ছিল। বোলাররা যদি ভালো জায়গায় বোলিং করে তাহলে বোলাররা সাহায্য পায়, ব্যাটসম্যানরাও সাহায্য পায়। যদি আমাদের পরিকল্পনা এবং শক্তিমত্তা অনুযায়ী খেলতে পারি (টি-টোয়েন্টি সিরিজে) তাহলে অবশ্যই বড় রান করা এবং বোলাররা নিয়মিত উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য রাখে।’

 
Electronic Paper