নতুন বছরে ডমিঙ্গোর চ্যালেঞ্জ
ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ৯:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
আইসিসি টেস্টখেলুড়ে দেশের মর্যাদা বাংলাদেশ পেয়েছে প্রায় দুই দশক হতে চলল। কিন্তু এতদিনেও দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পারেনি টাইগাররা। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ কতটা অসহায় সেটা ফুটে উঠেছে ভারত সফরে। দুই টেস্টেই বাংলাদেশ হেরেছে আড়াই দিনে! ভারতে যাওয়ার আগে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের মতো নতুন দলের কাছে হেরেছে টাইগাররা। প্রকৃতির সুবিধা নিয়েও হার ঠেকাতে পারেননি সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা।
স্বাভাবিকভাবেই টনক নড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে বোর্ড। সেটা নতুন কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ বোর্ডের চাওয়াকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে কাজটা যে সহজ নয় সেটাও মানছেন তিনি। বুধবার ক্রিকেট বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘আমাদের টেস্টে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এটা দলের জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আমি জানি বিসিবি টেস্ট ম্যাচের ওপর অনেক জোর দিচ্ছে। (ক্রিকেটারদের) ম্যাচ ফি বাড়িয়েছে (প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে)। এটা বিশাল একটা ব্যাপার। এটা শুধু টেস্ট খেলোয়াড়দের জন্যই নয়, যারা টেস্ট খেলতে খেলতে চায় তাদের জন্য বড় একটা সুযোগ।’
বাংলাদেশ কোচের মতে টেস্ট ক্রিকেটে ম্যাচ ফি বাড়ানোর মধ্য দিয়ে নতুন কিছু খেলোয়াড় আসবে দলে, ‘ম্যাচ ফি বাড়ানো হয়েছে এটা নিশ্চিত করতে যেন, তারা শুধু লিগ এবং টি-টোয়েন্টিতে মনোযোগ না দেয়। আশা করছি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু নতুন খেলোয়াড় আসবে। টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতি করতে আমাদের উচিত ভারতকে অসুরণ করা।’
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপাতত ক্রিকেটের বাইরে আছেন নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ডমিঙ্গোর বিশ্বাস শিষ্যদের সম্মিলিত পারফরম্যান্স সাকিবের অভাব পুষিয়ে দিতে পারে, ‘সাকিব চার ওভার বোলিং এবং তিনে ব্যাট করতো। ওর অনুপস্থিতি দলের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমাদের দলে অনেক ব্যাটসম্যান আছেন যারা বোলিংও করতে পারেন। সাকিব যা করতো এটা যদি ওরা করতে পারে তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা।’ বিশ্বকাপে ভরাডুবি না হলেও অভিযান ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। রবিন লিগ রাউন্ড পদ্ধতিতে হওয়া ইংল্যান্ড-ওয়েলস বিশ্বকাপে টাইগাররা জিতেছে তিনটি ম্যাচ। মাশরাফিদের ব্যর্থতায় বলির পাঁঠা হয়েছেন প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। ইংলিশ কোচকে বাদ দিয়ে রাসেল ডমিঙ্গোকে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিশ্বকাপের তিন জয় বাদ দিলে গত বছর উল্লেখযোগ্য সবচেয়ে বড় সাফল্য বলতে ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতা। সিরিজ জেতারও সুযোগ ছিল টাইগারদের। কিন্তু তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে হাতের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন কোহলি-রোহিতরা। সেই আফসোসটা এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রধান কোচ ডমিঙ্গোও আফসোস করলেন।
বিদায়ী বছরের পারফরম্যান্সকে শিক্ষা হিসেবে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। যা এ বছর কাজে লাগাতে চান তিনি, ‘গেল বছরটা বাজে কেটেছে আমাদের। আশা করছি ওই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারব। টেস্টে উন্নতি করতে আমাদের উচিত ভারতকে অনুসরণ করা। এটা রোমাঞ্চকর একটা বছর। আমরা মনে হয় আটটা টেস্ট ম্যাচ পাচ্ছি (আসলে দশটা)। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় আসর আছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের কিছু সফরও আছে। এটা ব্যস্ত একটা বছর কিন্তু খুব উত্তেজনাপূর্ণ।’
নতুন বছরে ডমিঙ্গোর চ্যালেঞ্জ শুরু হচ্ছে পাকিস্তানের বিপক্ষে সফর দিয়ে। তিন দফায় পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে টাইগাররা। আগামী সপ্তাহে প্রথম সফরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই সিরিজের অনুপ্রেরণা তিনি খুঁজে নিচ্ছেন গেল বছরের পারফরম্যান্স থেকে। ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘আমি এমন একটা দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি যাদের বিশ্বকাপটা কেটেছে হতাশায়। একটা দলকে এসব বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়। সম্ভবত দল খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আপনি দেখুন আমার সময়ে বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে আমরা বড় একটা পদক্ষেপ নিয়েছি। ভারত, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা সিরিজ আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’