ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পার পেয়ে গেলেন সাকিবরা

ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১০:৩৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০১৮

বিশ্বজুড়ে ফুটবল উন্মাদনায় একটা ঘোরলাগা সময়ের অবসান হলো। সেই ঘোরে বাংলাদেশও ঘুরেছে গত ৩১ দিন ধরে। গণমাধ্যমও ছিল ফুটবলময়, অন্য খেলার সংবাদ ছাপা হলেও তা হয়েছে ‘শর্ত প্রযোজ্য’ সাইজে, অর্থাৎ পাঠকের চোখে পড়ার জন্য সে সংবাদ দেওয়া হয়নি। এ ফাঁকেই সবার অগোচরে ঘটে গেল বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের এক সর্বনাশা ঘটনা, সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি।   

ক্রিকেটাররা রীতিমতো বেঁচে গেলেন! এত বড় ‘অঘটনের’ পরও বিসিবির চোটপাট আর গণমাধ্যমের সেই তীক্ষ্ম সমালোচনা নেই। নেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো আক্রমণ। এর আরও একটি কারণ আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে যখন খেলা শুরু, বাংলাদেশ সময় তখন রাত ৯টা। মুশফিক-সাকিব-তামিমদের পাড় ভক্তটিও পর্যন্ত গোটা দিনের খেলা দেখার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কয়েকবার ভাবেন।
ব্যাটসম্যানরা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন একটি টেস্ট ম্যাচ পাঁচ দিনের। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা দুই টেস্ট খেললেন পাঁচ দিনে! যেন পাড়ার মাঠের খেলা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটা বাংলাদেশ ‘যাচ্ছেতাইভাবে’ হেরেছে বললেও কম বলা হবে। চার ইনিংসে দলের রান ৫০৪। ১০০ রানও করেননি কেউ। দেশের টেস্ট ইতিহাসে দুই টেস্টের সিরিজে এবারই সবচেয়ে খারাপ ব্যাটিং করল বাংলাদেশ।
টেস্ট ও টি-২০-তে বাংলাদেশের রেকর্ড এমনিতেও খুব একটা ভালো না। তাই বলে এত খারাপ! প্রথম টেস্টে অ্যান্টিগায় ৪৩ রানে অলআউট হয়ে লজ্জার শুরু। ব্যাটসম্যানরা অবশ্য বলতে পারেন, সিরিজের পরের তিন ইনিংসে তো তারা উন্নতির রেখা ধরেই হেঁটেছেন! তা ঠিক। ৪৩ থেকে তো পরে ক্রমেই লম্বা হয়েছে ইনিংসগুলো! ১৪৪, ১৪৯ ও ১৬৮।
চার ইনিংসে ৪০ উইকেটে ৫০৪ রান। প্রতি ১২.৬০ রানে একটি উইকেট। দুই টেস্টের সিরিজে চার ইনিংস ব্যাট করে এত কম রান আর কখনই করেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং গড়ও এত কম ছিল না কখনো। দুই টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশ এর আগের সর্বনিম্ন ৫৮০ রান করে ২০০১ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে।
সিরিজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ (৭৫)। টেস্ট সিরিজ হারলেই পিছিয়ে পড়তে হবে, এটা জানা ছিল। তবে সেটা হিসাব-নিকাশের নানা জটিলতা দিয়ে। বাংলাদেশ ধবলধোলাই হওয়ায় সে হিসাব-নিকাশের মধ্যে কাউকে যেতে দেয়নি। পরিষ্কার ১০ পয়েন্টের ব্যবধানে সাকিবদের চেয়ে এগিয়ে গেছেন জ্যাসন হোল্ডাররা।
বাংলাদেশকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে আটে আছে। আর ৮ পয়েন্ট খুঁইয়ে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নেমে গেছে বাংলাদেশ। নবম অবস্থান নিয়ে অবশ্য কোনো দুশ্চিন্তা নেই। দশে থাকা জিম্বাবুয়ের রেটিং পয়েন্ট যে দুই!
সমস্যাগুলো সবই মৌলিক। ভুল শট নির্বাচন, ফুট ওয়ার্কের অভাব, অকারণ ধৈর্যচ্যুতি এবং অপ্রয়োজনে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা-এর বাইরে বাজে ব্যাটিংয়ের কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তামিমও কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন নিজেদেরই। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর কাছে তার সরল স্বীকারোক্তি, ‘এখানে যা হয়েছে, সেটির কোনো ব্যাখ্যা নেই। আমরা কেবল আমাদেরই দোষ দিতে পারি। আমাদের ব্যাটিং ভালো হয়নি।’

 
Electronic Paper