ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভারতীয় শিবিরে জোড়া আঘাত

ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০১৯

বাইশ গজের ব্যাট-বলের যুদ্ধের আগে ভাগ্য নির্ধারণী লড়াইয়ের সুবিধাটা নিজেদের অনুকূলে থাকলেও টাইগারদের ছন্নছাড়া ব্যাটিং দেখেছে সবাই। পরিণাম- বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে কাঁটায় কাঁটায় দেড়শ রানে। কাল প্রথম দিনের খেলা শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান করেছে বিরাট কোহলির দল। পরে দ্বিতীয় দিনের সকালটা ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহীর নৈপুণ্যে দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ফিফটি করা চেতেশ্বর পুজারা এবং পরে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন সিলেটের এ পেসার। এর মধ্যে কোহলিকে কোনো রানই করতে দেননি রাহী। তিন বল খেলে শূন্য রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৭ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৪৫ রান।

দিনের প্রথম সাফল্যটা প্রথম ওভারেই পেয়ে যেতে পারতেন রাহী। ব্যক্তিগত অর্ধশতকের অপেক্ষায় থাকা পুজারা অফস্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারি সজোরে কাট করলে, তা ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় থার্ড স্লিপের কাছে।

ইন্দোর টেস্টে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেও ভারতীয় পেস আক্রমণের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। মুমিনুলরা যে উইকেটে টিকে থাকার সংগ্রাম করেছেন সেখানেই সাবলীল ব্যাটিং করেছে ভারত। কাল প্রথম দিনের খেলা শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান করেছে বিরাট কোহলির দল। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের চেয়ে ৬৪ রানে পিছিয়ে আছে তারা।

প্রথম দিনের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলতে রোহিত শর্মাকে ৬ রানে ফেরাতে পারাটা। স্বাগতিকদের সংগ্রহ তখন ১৪। শুরুর ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামলে নিয়েছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও চেতেশ্বর পূজারা। হাফসেঞ্চুরির আভাস দিয়ে দিন শেষ করেছেন তারা। আগারওয়াল ৩৭ এবং পূজারা ৪৩ রানে অজেয় থেকে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ মিশনে বাংলাদেশের শুরুটাই হলো বিস্ময় দিয়ে। ম্যাচের আগে ভারত অধিনায়ক যে ‘জুজু’র ভয়ে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন সেই মুস্তাফিজুর রহমানকে রাখাই হলো না একাদশে। একাদশে পেসার মাত্র দুজন। সেখানে ভারতের পেসার তিনজন- ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ শামি। এই ত্রয়ীই মূলত ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। প্রথম দুজন উইকেট নিয়েছেন দুটি করে। শেষের জনের শিকার একটি বেশি। স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ঝুলিতে গেছে দুই উইকেট।

কাল হলকার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ৫৮.৩ ওভারে। ম্যাচের আগে স্পিন সামলানোয় বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল টাইগাররা। এর প্রভাব একাদশেও দিয়েছিল। কিন্তু অতিথিদের পরিকল্পনা বুমেরাং হয়ে গেল প্রথম সেশনেই। সবুজ ঘাসের উইকেটে সামি-যাদবদের সুইং সামলাতে গিয়েই খাবি খেতে হয়েছে দলকে। ২৭ রানের মধ্যে শুরুর ৩ উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকে টাইগারদের টপ অর্ডার। ১২ রানে ফিরে যান দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস। দুজনই আউট হলেন ব্যক্তিগত ৬ রানে। ধাক্কাটা সামলে ওঠার আগেই ১৩ রানে বিদায় নিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। পরে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নেমে পড়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল। কিন্তু দলীয় সেঞ্চুরির আগ মুহূর্তে ফের আঘাত। বিচ্ছিন্ন হন মুমিনুল-মুশফিক। অশ্বিনের বলে বোল্ড হয়ে ৩৭ রানে বিদায় নেন মুমিনুল; ভাঙে ৬৮ রানের জুটি।

এই জুটি ভাঙতে পারত আরও আগেই। যাদবের বলে স্লিপে বিরাট কোহলিকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন মুশফিক। ৩ রানে জীবন পাওয়া মুশফিক সুযোগ পেয়েছেন আরও দুটি। ব্যক্তিগত ১৫ ও ৩৪ রানে বেঁচে গিয়েও হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি। মুশফিক ফিরেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রানে। শুরুতে রাহানেকে ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছিলেন তার সঙ্গী মুমিনুলও।

এই দুজনের আউটের পরই ফের তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং। শেষ ৭ উইকেট সফরকারীরা হারায় ৫১ রানে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও লিটন দাস আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। প্রথমজন ১০ ও দ্বিতীয় জন ২১ রানে সাজঘরের পথ ধরেন।

বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ চৌধুরী ও ইবাদত হোসেন।

ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি ও উমেশ যাদব।

 
Electronic Paper