চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ
ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ৩:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। মাঝে ছোট ছোট দুটি জুটি বিপর্যয় কিছুটা কাটানোর ইঙ্গিত দিলেও কাজের কাজ আসলে কিছুই হয়নি। একের পর এক উইকেট যাচ্ছেই।
৯৯ রানে মুমিনুল আউট হওয়ার পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাধেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ১৬ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তিনিও। মূলতঃ রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মিডল স্ট্যাম্পের ওপর থাকা বলতে সুইপ করতে যান মাহমুদউল্লাহ। এতে যা হবার তাই হলো। সরাসরি বোল্ড হয়ে যান তিনি।
এর পরে মুশফিকের সঙ্গে মিলে লিটন দাস গড়ে তোলেন ২৫ রানের জুটি। কিন্তু ভারতীয়দের সাঁড়াসি বোলিংয়ের সামনে সংগ্রামী ইনিংস খেলেও টিকতে পারলেন না মুশফিক। ১০৫ বল খেলে ৪৩ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। ১৪০ রানের মাথায় মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড আউট হন তিনি।
৫ উইকেটে ১৪০ থেকে মুহূর্তের মধ্যেই ৭ উইকেটে ১৪০ হয়ে যায় বাংলাদেশের। মুশফিকের পরের বলেই মোহাম্মদ শামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজ।
চা বিরতিতে এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান। লিটন দাস ব্যাট করছেন ৩০ বলে ২১ রান নিয়ে।
এর আগে ভারতের ইন্দোরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ম্যাচটি শুরু হয়েছে। এদিন, সকাল সাড়ে ৯টায় টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলপতি মুমিনুল হক।
টস জিতে ব্যাট করতে নামার পরই হয়তো বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা বুঝতে পেরেছেন, তারা কি ভুলটাই না করে ফেলেছেন।
দ্রুত দুই ওপেনারকে হারিয়ে যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ, তখন দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক এবং ব্যাটমসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু এ দু’জন ১৯ রানের জুটি গড়ার পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে বাধ্য হন। ৩৬ বল খেলে ১২ রান করে মোহাম্মদ শামির বলে ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন। এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি।
টসের পর ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও জানিয়েছেন, টস জিতলে এই উইকেটে প্রথমে বোলিংই নিতেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এই উইকেটে কিছুটা ঘাস রয়েছে। আর ঐতিহাসিকভাবে ইন্দোরে টেস্টের প্রথম দিনটা বোলারদের জন্যই বেশ উপযুক্ত। সুতরাং, টস জিতলেও আমরা বোলিং নিতাম। আমাদের দলে তিন পেসার রয়েছে। এই উইকেটটা তাদের জন্য একেবারেই উপযোগি। একই সঙ্গে তারা রয়েছে খুব ফর্মে। দ্বিতীয় দিন থেকেই এই উইকেটটি আবার ব্যাটিংয়ের জন্য তরতাজা হয়ে উঠবে। এ কারণেই আমরা বোলিংটাই প্রথমে করার চিন্তা করেছিলাম।’
ভারত যতটা ছন্দে আছে ততটাই টেস্টে বিবর্ণ অবস্থা বাংলাদেশের। সবশেষ টেস্টে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে নাকানি-চুবানি খেয়েছে টাইগারারা। প্রকৃতির সুবিধা নিয়েও পঞ্চম ও শেষ দিনে বৃষ্টিভেজা টেস্টে মান বাঁচাতে পারেনি স্বাগতিক শিবির। রশিদদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত হেরেই গেছে। এবার মুমিনুলদের সামনে অশ্বিন-জাদেজাদের ঘূর্ণি সামলাবার চ্যালেঞ্জে। তাতে দল কতটুকু উতরাতে পারে সেটাই কার্যত দেখার।
৭ ব্যাটসম্যান ও ৪ বোলার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। দলে জায়গা পেয়েছেন মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন।
টেস্ট র্যাংকিং ও শক্তিমত্তায় ভারতের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে বাংলাদেশ। আইসিসি র্যাংকিংয়ে ১ নম্বরে আছে কোহলি অ্যান্ড কোং। সেখানে ৯ নম্বরে আছেন টাইগাররা।
তবু তাদের হালকাভাবে নিচ্ছেন না মেন ইন ব্লুরা। একাদশে এক পরিবর্তন এনে শক্তিশালী দল গঠন করেছে ভারত। বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ নাদিমের স্থানে ঢুকেছেন ইশান্ত শর্মা। ৩ পেসার ও ২ স্পিনার নিয়ে দল সাজিয়েছে তারা।
বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ চৌধুরী ও ইবাদত হোসেন।
ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি ও উমেশ যাদব।