ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ৩:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

এগিয়ে থেকেও ভারতকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ১৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের ৯ ব্যাটসম্যানই ব্যর্থ হয়েছেন দুই অংক ছুঁতে। তাতে বৃথাই গেছে মোহাম্মদ নাঈমের ৮১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটা। সতীর্থদের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে ভারতের কাছে ৩০ রানে হেরেছেন মাহমুদউল্লাহরা।

বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে স্বপ্নের সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেছে বাংলাদেশের। ইন্দোরে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে তাই ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলাদা করেই সময় ব্যয় করেছেন ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি। তা ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ভগ্নদশা নতুন কিছু নয়। গেল সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের কাছে টাইগাররা হেরেছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। এবার ভারতের কাছে দিতে হবে অগ্নিপরীক্ষা।

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব মুমিনুল হকের কাঁধে। এই সিরিজ দিয়ে অভিষেক হয়ে যেতে পারে দুই নতুন মুখ সাইফ হাসান ও এবাদত হোসেনের। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিই খুলে দিয়েছে তাদের স্বপ্নের দুয়ার।

ভারতের বিরুদ্ধে এই সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশ শুরু করবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ মিশন। কিন্তু এই মিশনের জন্য কতটা প্রস্তুত টাইগাররা? প্রশ্ন ওঠাটা অমূলক নয়। এমনিতেই ব্যাটিং নিয়ে দুর্ভাবনা, তার ওপর পুরনো একটা সমস্যা। টেস্টে কুড়ি উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে কি-না- প্রতিটি সিরিজের আগেই এ নিয়ে কথা হয়।

এবারো প্রসঙ্গটা সামনে এলো। সাকিবের অনুপস্থিতিতে রোহিত-কোহলিদের মতো ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিতে পারবে তো বাংলাদেশের এই বোলিং বিভাগ?

মোহাম্মদ মিঠুন বেশ আত্মবিশ্বাসী। জানান ভারতকে দুবার গুটিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা আছে বাংলাদেশের। কাল মিঠুন বলেছেন, ‘বিশ্বাস করি এটা (ভারতের ২০ উইকেট নেওয়া) সম্ভব। আমি একজন ব্যাটসম্যান, আমার আউট হতে একটা বলই লাগে। এটা সব ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আমরা যদি চাপ তৈরি করতে পারি, যে বোলিং ইউনিট আছি যদি সুশৃঙ্খল বোলিং করতে পারি, অবশ্যই সম্ভব। আমরা ওদের সম্মান করি। ওরা বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি। বিশেষ করে দেশের মাটিতে ওরা অনেক বেশি শক্তিশালী। আমরা এই সিরিজের দিকে তাকিয়ে আছি।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সিরিজে তিন ম্যাচে ভারত উইকেট হারিয়েছে ২৫টি। সিরিজে প্রোটিয়াদের দাঁড়াতেই দেননি কোহলিরা। এমন ছন্দে থাকা দলের বিরুদ্ধে সাকিব ও তামিমের অনুপস্থিতি বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই টের পাবে। মিঠুন আশাবাদী, সম্মিলিত পারফরম্যান্সই এই যুগলের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। তবে দুজনকেই মিস করবেন মিঠুন, ‘অবশ্যই সাকিব, তামিমের অভাব অনুভব করব। তারা আমাদের সেরা খেলোয়াড়। তবে এটা নিয়ে পড়ে থাকার সুযোগ নেই। ওদের অভাব পূরণ করতে দল হিসেবে আমাদের ভালো খেলতে হবে। সাকিব ভাইয়ের পরিবর্তিত খেলোয়াড় আমাদের নেই। তারা থাকলে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে দিত। যেহেতু নেই সেটি চিন্তা করে যারা আছি, কীভাবে ভালো করতে পারি সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছি।’

প্রায় তরুণ একটা দল টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু টেস্ট সংস্করণ একেবারেই ভিন্ন। মিঠুনের মতে দল হিসেবে খেলতে পারলে টেস্টেও ভালো করতে পারবে বাংলাদেশ, ‘আমাদের দলটি ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং, বোলিং দুই দিক থেকেই দলে ভালো ভারসাম্য আছে। যখন আমরা দল হিসেবে খেলতে পারি তখন আমরা ভালো করি। জিততে হলে আমাদের একজন-দুইজনের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। পুরো দলেরই ভালো করতে হবে। বিশেষ করে ভারতের মতো দলের বিপক্ষে ইউনিট হিসেবে খেলতে পারলে আমাদের সম্ভাবনা থাকবে।’

আগামীকাল প্রথম টেস্ট খেলতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। দলের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মিঠুন বলেছেন, ‘ওদের দুর্বল দিক খুঁজে বের করার চেয়ে নিজেদের শক্তির জায়গা নিয়ে বেশি ভাবছি। ভারতের মাটিতে কোনো দলই সুবিধা করতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে এখানে ভালো ক্রিকেটটা খেলতে পারি। ওদের দুর্বলতা খুঁজতে গিয়ে আমার মনে হয় আমাদের মনোযোগ, পরিকল্পনা থেকে দূরে সরে যাব।’

টেস্টে লড়াইয়ের আগে টি-টোয়েন্টি থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিচ্ছেন মিঠুন, ‘যদি পেছনে তাকাই, এই সফরের আগে কেউ আশা করেনি যে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে দেবে। তবে আমাদের বিশ্বাস ছিল। আমরা যখনই মাঠে নামি জেতার জন্যই নামি। আমাদের আত্মনিবেদনে কিন্তু ঘাটতি নেই।’

টেস্ট খেলা মূলত ধৈর্য্যরে খেলা। এগোতে হয় সেশন ধরে ধরে। বাংলাদেশও এই ফর্মুলায় হাঁটতে চায় বলে জানান মিঠুন, ‘টেস্টে প্রতিটি সেশন জেতা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিনের প্রথম সেশন যেমন গুরুত্বপূর্ণ শেষ দিনের শেষ সেশনও তাই। আমরা যত বেশি সেশন জিতব আমাদের সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে।’

 
Electronic Paper