ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নাইম তাণ্ডবের পরও ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের

ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০১৯

জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও হেরে গেল বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরুর আগেই জানা ছিল জিতলেই হবে ইতিহাস, মিলবে প্রথমবারের মতো ভারতকে তাদেরই মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে হারানোর গৌরব। কাজটা সহজ ছিল না একদমই। মাঠে প্রতিপক্ষ ১১ খেলোয়াড়, সঙ্গে গ্যালারিতে উপস্থিত প্রায় হাজার চল্লিশেক দর্শক। তার ওপর সাম্প্রতিক সময়ের অস্থির অবস্থাও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে।

এত সবকিছু পাশ কাটিয়েই সিরিজটি খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। যার শেষ ম্যাচে সমীকরণ দাঁড়ায় জিততে পারলেই হবে ইতিহাস। তরুণ নাইম শেখের সাহসী ব্যাটিংয়ে সে পথে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিণতি হয়েছে প্রতিবারের মতোই, তীরে এসে তরী ডোবানো। সিরিজের শেষ ম্যাচে ৩০ রানে হেরে গেল টাইগাররা।

রবিবার ভারতের নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে স্বাগতিকরা প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে স্বাগতিক ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন স্রেয়াশ আয়ার। এছাড়া ৫২ রান করেন লোকেশ রাহুল।

১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তরী শুরুতেই কঠিন ঝড়ের মধ্যে পড়ে। নাঈম শেখ দলের হাল ধরেন। তবে প্রথমবার সিরিজ জয়ের গন্ধ পেয়েও শিরোপা ছোঁয়া হলো না টাইগারদের।

মোমেন্টাম শুধু ব্যাটিংয়ে নয়, বোলিংয়েও পেয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নামা ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মাকে তুলে নেয় বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই অন্য ওপেনার শেখর ধাওয়ান ফিরে যান। ভারতের রান তখন ৩৫। একই ওভারে শূন্য রানে ব্যাট করা শ্রেয়াস আয়ারের ক্যাচ মিস করে বোলিংয়ের মোমেন্টাম হাত ছাড়া করেন তরুণ আমিনুল ইসলাম। সেই শ্রেয়াস আয়ার এবং কেএল রাহুল ৫৯ রানের বড় জুটি গড়ে ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে দূরে নিয়ে যান। শ্রেয়াস আয়ার তিন চার এবং পাঁচ ছক্কায় খেলেন ৩৩ বলে ৬২ রানের ইনিংস। তিনে নামা কেএল রাহুলের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৫২ রান।

জবাব দিতে নামা বাংলাদেশ শুরুতে হারায় লিটন দাস এবং সৌম্য সরকারকে। তরী ডুবে যাওয়ার যেন শুরু। আগের দুই ম্যাচে ভালো খেলা সৌম্য এ ম্যাচে গোল্ডেন ডাক মারেন। শুরুর ১২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা নাঈম শেখ এবং মোহাম্মদ মিঠুন সামাল দেন। দুজনে যোগ করেন ৯৮ রান। মিঠুন ২৮ বলে ২৭ রান করে যখন ফিরে যান দলের রান তখন ১৩ ওভারে ১১০। ইএসপিএনের দেওয়া ম্যাচ প্রেডিকশন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা ৭৮ ভাগ!

কিন্তু পরের বলেই আউট হয়ে ফিরে যান দলের সেরা ভরসা মুশফিকুর রহিম। দিল্লিতে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে জেতান তিনি। এবার সিরিজ জয়ে তিনি কিছু একটা করবেন সেই আশা দেখছিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত কিছু নয় বরং মুশফিকের কাছে ভক্ত এবং দলের আশা ছিল হালটা ধরে ম্যাচটা শেষ করার। কিন্তু তিনিও সৌম্যর মতো গোল্ডেন ডাক মারেন। নাঈম হাসান ৪৮ বলে ১৬৮.৭৮ স্ট্রাইক রেটে ১০ চার ও দুই ছক্কায় ৮১ রান করে ফেরেন। দল ১২৬ রানে হারায় ৫ উইকেট। তখনো আশা ছিল দলের। কিন্তু ক্রিজে থাকা মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে মাঠে নামা দলের শেষ ভরসা তরুণ আফিফ হোসেন গোল্ডেন ডাক মারতেই সব আশা শেষ হয়ে যায় দলের।

আফিফ আউট হওয়ার পর মাহমুদুল্লাহ-আমিনুলরা খুব বেশি এগোতে পারেননি। বাংলাদেশ তাই ৪ বল থাকতে ১৪৪ রানে অলআউট হয়। ভারতে প্রথমবার সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখা দলটা হারে ৩০ রানে। টি-২০ ফরম্যাট বিবেচনায় যা ছোট হার নয়। ভারতের হয়ে দিপক চাহার ৩.২ ওভারে মাত্র ৭ রান খরচা করে নেন ৬ উইকেট। টি-২০ ফরম্যাটের সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি। নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে উইকেট নেওয়া চাহার নিজের চতুর্থ এবং বাংলাদেশ ইনিংসের শেষ ওভারে পরপর দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করেন।

 

 
Electronic Paper