ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুঃস্বপ্নের মাইলফলক

ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০১৯

ক্যারিয়ারের ৭০০তম গোল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কোথায় বাঁধভাঙা আগ্রাসী উল্লাস করবেন তা নয়; পর্তুগিজ যুবরাজ মাইলফলকের গোল উদযাপন করলেন সাদামাটাভাবে। পেনাল্টি থেকে বুলেট গতির শটে ইউক্রেনের জালে বল জড়িয়ে শুধু একটু-আধটু মুচকি হাসলেন।

এরপর ২ হাতের তর্জনি আঙুল ওপরের দিকে তুলে বোধহয় সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। যেমনটা নিয়মিত করে থাকেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। রোনালদোর এই সাদামাটা উদযাপনের কারণ- তার দল পর্তুগাল যে হারের মুখে!

রোনালদোর ঐতিহাসিক গোলও হার থেকে বাঁচাতে পারেনি পর্তুগিজদের। পরাজয়ের ব্যবধান যা কমিয়েছে মাত্র। পরশু রাতে ইউরো বাছাইপর্বের ম্যাচে ইউক্রেনের মাঠে ২-১ গোলে হেরে গেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এই জয়ে ষষ্ঠ দল হিসেবে ইউরো ২০২০ মূলপর্বের টিকিট নিশ্চিত হয়ে গেল আন্দ্রে শেভচেঙ্কের দলের।

ম্যাচের ২৭ মিনিটের মধ্যে ২ গোল হজম করে বসে পর্তুগাল। ইউক্রেনকে এগিয়ে দেন ইয়ারেমচুক। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড নিয়েছিলেন শেরি ক্রিস্টোভ; কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ে বল রুখে দেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই পাত্রিসিও। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ফিরতি শটে গোল করেন ইয়ারেমচুক।

২১ মিনিট পর দ্বিতীয়বার উল্লাসে মেতে ওঠেন শেভচেঙ্কোর ছাত্ররা। ডি-বক্সে বল পেয়ে প্লেসিং শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফরোয়ার্ড আন্দ্রে ইয়ারমোলেঙ্কো। জোড়া গোল পিছিয়ে থাকা পর্তুগাল আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। তবে জোরাল কয়েকটা আক্রমণ তারা ঠিকই করেছিল।

অবশেষে ৭২ মিনিটে লড়াইয়ে ফেরে পর্তুগাল। ডি-বক্সে হ্যান্ডবল করেন তারাস স্তেপানেঙ্কো। পরিনাম- দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া হন। পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। স্পট কিক থেকে রোনালদো করেন বহুল প্রত্যাশিত গোলটি। কিন্তু শেষ কুড়ি মিনিটে ১০ জনের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সমতায় ফিরতে পারেনি ফার্নান্দো সান্তোসের দল।

ইউরো বাছাইয়ে এনিয়ে টানা চার ম্যাচে গোল করলেন রোনালদো। জাতীয় দলের হয়ে তার গোল সংখ্যা এখন ৯৫টি। গোলসংখ্যা একটা বাড়তে পারত। কিন্তু ম্যাচের শেষ মুহূর্তে রোনালদোর হেড ফিরে আসে ইউক্রেনের ক্রসবারে লেগে। তাতে হারের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাদের।

নাটকীয় এই জয়ে ‘সি’ গ্রুপের প্রথম দল হিসেবে বাছাইপর্বের গণ্ডি পার হলো ইউক্রেন। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৯। এক ম্যাচ কম খেলে ৮ পয়েন্ট পিছিয়ে যথারীতি দুইয়ে থাকল পর্তুগাল। তাদের খুব কাছেই আছে সার্বিয়া। পরশু রাতে অন্য ম্যাচে লিথুয়ানিয়ার মাঠে ২-১ গোলে জিতেছে সার্বিয়ানরা।

রাতটা ছিল ইংল্যান্ডেরও। ইউরো বাছাইয়ে ৪৩ ম্যাচ ও ১০ বছর পর হারের স্বাদ পাওয়া ইংলিশরা পরশু জয়ে ফিরেছে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে। চেক প্রজাতন্ত্রের মাঠে ২-১ গোলের হারটাই তাতিয়ে দিয়েছিল থ্রি লায়নদের। সেই আগুনে পুড়ে ছাই হলো বুলগেরিয়া। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে বুলগেরিয়াকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। এই দলটাকেই গত মাসে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিলেন গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।

ইংলিশদের বড় জয়ের নায়ক রাহিম স্টার্লিং ও রস বার্কলি। দুজনই করেছেন জোড়া গোল। অন্য গোল দুটির মালিক হ্যারি কেন ও মার্কাস রাশফোর্ড। বুলগেরিয়ার মাঠ সোফিয়া গার্ডেনে প্রথমার্ধে ৪ গোল করা ইংল্যান্ড দ্বিতীয়ার্ধে করেছে আরও ২টি। শেষ দিকে কালাম উইলসনের শট পোস্টে না লাগলে জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারত।

এই জয়ে ছয় ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি গ্রুপের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ইংল্যান্ড। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চেক প্রজাতন্ত্র দুই এবং ১১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে আছে কসোভো। মন্টিনিগ্রো ও বুলগেরিয়া সমান তিন পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে আছে।

ইংল্যান্ডের গোল উৎসবের রাতে হোঁচট খেয়েছে ইউরোর গত আসরের রানার্সআপ ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। টানা ৪ জয়ের পর এদিন ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে তুরস্কের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করেছে দিদিয়ের দেশামের দল। বাছাইপর্বে প্রথমবারের দেখায় তুর্কিদের মাঠে ২-০ গোলে হেরেছিল ফরাসিরা।

চেনা দুর্গ প্যারিসে ৭৬ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোল করে প্রতিশোধের আভাস দিয়েছিল ফ্রান্স। অতিথিদের লিড এনে দেন অলিভার জিরার্ড। কিন্তু সেই গোলের আনন্দের স্থায়িত্ব হলো ৫ মিনিট। স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান কান আইহান। এই ড্রয়ে ৮ ম্যাচে ২ দলেরই পয়েন্ট থাকল সমান ১৯।

তবে গোলগড়ে এগিয়ে শীর্ষে আছে তুরস্ক, ফ্রান্স দুইয়ে। কিন্তু দুই কেউ নির্ভার হতে পারছে না। তিনে থাকা আইসল্যান্ড যে খুব বেশি পিছিয়ে নেই। ব্যবধান মাত্র ৪ পয়েন্টের। সোমবার রাতে এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে অ্যান্ডোরাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে গত বিশ্বকাপে চমক আইসল্যান্ড।

 
Electronic Paper