অগ্রাধিকারে টেস্ট ক্রিকেট
ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ০৭, ২০১৯
একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। ক্রিকেটের এই সংস্করণে যে কোনো দলকেই হারানোর সামর্থ্য রাখে টাইগাররা। তবে ওয়ানডেতে যতটা উজ্জল বাংলাদেশ, ততটাই বিবর্ণ অন্য দুই ফরমেটে। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন সাকিব-তামিমরা। টেস্ট ক্রিকেটেও পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে বছরের বছর সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তারা।
আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত হবে কুড়ি ওভারের পরবর্তী বিশ্বকাপ। কার্যত বিশ্বমঞ্চ নয়, বাংলাদেশের ভাবনায় আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। যাকে টেস্টের বিশ্বকাপ বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারতের মতো পরাশক্তিরা ইতোমধ্যে এই টুর্নামেন্টে মিশন শুরু করে দিয়েছে। আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিজানে নেমে পড়ছেন সাকিব অ্যান্ড কোং।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে অগ্রাধীকার দিয়ে ঢেলে দল সাজাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যার প্রথম পর্বটা গেছে কোচিং স্টাফ রদবদলের মধ্যে দিয়ে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ পরবর্তী প্রায় কোচশূন্য হয়ে পড়া বিসিবি একে একে পূরণ করেছে শূন্যস্থানগুলো। যদিও চট্টগ্রাম টেস্ট ও ত্রিদেশীয় সিরিজে সবাইকে এক বিন্দুতে মেলানো যায়নি।
অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে আগামী মাসে; ভারত সফরে। ওখানেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এরপরই দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজ দিয়েই চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হবে টাইগারদের। যেখানে পূর্ণাঙ্গ কোচিং স্টাফ থাকছে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে। সম্প্রতি খবরটা নিশ্চিত করেছেন বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান।
চ্যাম্পিয়নশিপের অভিষেক আসর বিধায় ভারত সফরে টেস্ট সিরিজকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে বিসিবি। এ জন্য জাতীয় দলে থাকা খেলোয়াড়দের এনসিএলে দুই রাউন্ড খেলা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে তারা। এ ছাড়া গত দুই মাসে ভারত সফরে বিসিবি যে দুটি দল পাঠিয়েছে দুটোতেই ছিলেন টেস্ট দলের কয়েকজন নিয়মিত সদস্য। ভারত সফরের টেস্ট সিরিজের গুরুত্ব কতটুকু তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন আকরাম, ‘ভারত সেরা দল। ঘরের মাঠে তারা আরও শক্তিশালী। এটা আমাদের কঠিন সফর হবে। এই সফর দিয়ে আমাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে। এটা মাথায় রেখেই কিন্তু আমরা দুবার দুটি দল পাঠিয়েছি ভারতে। টেস্টের কথা ভাবনায় রেখে আমরা পরিকল্পনা করেছি যে জাতীয় লিগে খেলোয়াড়েরা দুটি রাউন্ড খেলবে।’
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকার নেপথ্য কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম ফিটনেস সমস্যা। জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটারেরই ফিটনেসে ঘাটতি আছে। তবে শুধু জাতীয় দল নয়, এর বাইরে থাকা ঘরোয়া ক্রিকেটারদেরও নজরে এনেছে বিসিবি। জোর দিয়েছে বিপ টেস্টে। গত মৌসুমে এই টেস্টের উত্তীর্ণর নম্বর ৯ থাকলেও এবার তা বাড়িয়ে ১১-তে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে ফিটনেস নম্বর বাড়ানোয় এ বছর খেলোয়াড়দের কিছুটা ছাড় দিচ্ছে বিসিবি। কিন্তু ভবিষ্যতের ভাবনা মাথায় রেখে হয়তো পরবর্তীতে আর ছাড় দেওয়া হবে না। তাই ফিটনেস নিয়ে হেলার সুযোগ নেই।
প্রথম দফায় বিপ টেস্টে বেশিরভাগ ক্রিকেটার পেরিয়েছেন মানদণ্ড। হতাশার তথ্য হচ্ছে- অভিজ্ঞ অনেক ক্রিকেটারই পরীক্ষায় উতরাতে পারেননি। দ্বিতীয় দফায় কাল তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ যাত্রায়ও ব্যর্থ হয়েছেন রুবেল হোসেন, সোহাগ গাজী মোহাম্মদ আশরাফুল ও আব্দুর রাজ্জাক। শেষের দুজনের টেস্ট ক্যারিয়ার কার্যত বলেই ভাবা হচ্ছে। কিন্তু ভাবনার বিষয় হচ্ছে পেসার রুবেলের বিপ টেস্টে ১০ নম্বর পাওয়াটা। অন্য দুই সিনিয়র পেসার আল আমিন হোসেন (১২) ও মোহাম্মদ শরীফ (১১) উত্তীর্ণ হয়েছেন। ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস পেয়েছেন ১১.১। ১০.১ করে নাসির হোসেন ও তুষার ইমরান।
সোহাগ গাজী থেমেছেন ৯.৮ করে। বিপ টেস্ট আপাতত শেষের দিকে। বিসিবি নির্বাচক হাবিবুল বাশার জানালেন আজ জাতীয় লিগের দল দেওয়া হবে। এই দলগুলোর ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সই মূল্যায়ন হতে পারে ভারত সফরের জন্য। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের অভিষেক ম্যাচের অংশ হতে নিশ্চয়ই সবাই চাইবেন সবটুকু নিংড়ে দিতে। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে টাইগারদের দিন-বদলের অভিজান শুরু হচ্ছে এখান থেকেই।