ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাংলাদেশ হবে ‘পরাশক্তি’

ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ৪:১৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৯

বাংলাদেশ দলের কোচ হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, মিকি আর্থার, মাইক হেসন, চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতো হাই প্রোফাইলরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব পেয়েছেন রাসেল ডমিঙ্গো। অন্যদের থেকে বাংলাদেশ ‘দলের সঙ্গে মন দিয়ে কাজ করা’র আগ্রহ তাকে এগিয়ে দিয়েছে।

স্টিভ রোডসকে বিদায় দেওয়ার পর একজন হাই প্রোফাইল বিদেশি কোচই খুঁজছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞাপনও দিয়েছিল তারা। হাই প্রোফাইল বেশ কয়েকজন কোচ আবেদনও করেছিল। কোচ হওয়ার তালিকায় ডোমিঙ্গোর সঙ্গে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক কোচ মাইক হেসন, সদ্য পাকিস্তান দল থেকে বরখাস্ত হওয়া মিকি আর্থার, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার কিংবা শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মাহেলা জয়াবর্ধনে। নিঃসন্দেহে এরা সবাই হাই প্রোফাইল। কিন্তু তাদের সবাইকে পেছনে ফেলে কোচ হলেন ডমিঙ্গো।

যিনি স্বশরীরে ঢাকায় এসেছেন ইন্টারভিউ দিতে। নিজের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা প্রেজেন্টেশন আকারে উপস্থাপন করেছেন বিসিবি কর্মকর্তাদের সামনে। বিস্তারিত জানিয়েছেন তার কাজের পদ্ধতি। বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান, সেই ভিশনও জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, যতদিন বাংলাদেশের কোচ থাকবেন, ততদিন এখানকার ক্রিকেটারদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে নিজের সেরাটা ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করবেন ডমিঙ্গো।

কোচ হিসেবে নাম ঘোষণার পরই ইএসপিএন ক্রিকইনফো সাক্ষাৎকার নেয় ডমিঙ্গোর। সেখানেই তিনি বাংলাদেশ দল নিয়ে তার স্বপ্নের কথা জানান। জানালেন, তার অভিজ্ঞতা এবং কর্ম দক্ষতা সব কিছু দিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেটিং সিস্টেমের প্রতিটি লেভেলে কাজ করবেন এবং চেষ্টা করবেন বাংলাদেশ দলকে বিশ্ব ক্রিকেটাসনে আরও অনেক উপরে তুলে ধরতে। তিনি বলেন, ‘শেষ পাঁচ-ছয় বছরে ক্রিকেটে সবচেয়ে উন্নতি করা দেশ বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেট ভক্তরা অসাধারণ। বোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাতে নিশ্চয় কিছু পরিকল্পনা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা খুবই আগ্রহের সঙ্গে কাজ করছেন। নতুন অনেক ক্রিকেটার উঠে আসছে। আমাকে যা সবচেয়ে উচ্ছ্বসিত করছে তা হলো, বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তি হতে যা দরকার সবই ঠিকঠাক আছে বাংলাদেশের।’ নিজের কর্মপদ্ধতি নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনি তাদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন, কোনটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আমি আগেও অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। যেখান থেকে জাতীয় দলে খেলোয়াড়রা উঠে আসে। সুতরাং, আমি চাই যে নতুন খেলোয়াড়রা যেখান থেকে উঠে আসছে, সেখানে যুক্ত হতে। সেখানে আমি একটু ভূমিকা রাখার সুযোগ পেলে পরবর্তী কাজটা অনেক সহজ হবে বলে মনে করি।’

জাতীয় দল তো সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেখানে খেলোয়াড় উঠে আসার রাস্তাটা যদি মসৃণ হয় এবং সঠিক প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে উঠে আসে, তাহলে তা জাতীয় দলের জন্য পরবর্তী সময়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হবে। ডমিঙ্গো বলেন, ‘জাতীয় দলই তো আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু জাতীয় দলের নিচের স্তরগুলোতে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেখানেও আপনাকে সমানভাবে নজর দিতে হবে। কারণ, সেখান থেকেই তো আপনার খেলোয়াড়রা উঠে আসছে। নতুন খেলোয়াড়রা যেখান থেকে উঠে আসছে, সেখানে যদি আমি একটু ভূমিকা রাখতে পারি, তাহলে সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করি।’

বাংলাদেশ নিয়ে আগেই স্টাডি করে রেখেছেন ডমিঙ্গো। সেটা তার কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, পরবর্তী সেরা খেলোয়াড়টি কে, তা জানতে হাই পারফরম্যান্স কোচ ও ম্যানেজারের সঙ্গে কাজ করাটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। অনূর্ধ্ব-১৯ দল ইংল্যান্ডকে চারবার হারিয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়েছে। অর্থাৎ নিচের পর্যায়ে অবশ্যই কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে, যাদের জাতীয় দলের কাছাকাছি রাখা প্রয়োজন। খেলোয়াড়দের ভিত্তিটা আরও সম্প্রসারণ করা দরকার, তাদের উন্নতিও করাতে হবে যেন আগামী পাঁচ-ছয় বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে পারে।’

এবারই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে কোচ হিসেবে কাজ করবেন ডমিঙ্গো। ব্যাপারটা নিয়ে খুব রোমাঞ্চিত তিনি। তার ওপর, সহকারী হিসেবে যাদের পাচ্ছেন তারাও তার পরিচিত।

ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জি, বোলিং কোচ চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট, ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক-সবাই দক্ষিণ আফ্রিকান। ডমিঙ্গোও তাদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে। তার প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আগামী মাসে ঘরের মাঠে আফগানিস্তান টেস্ট। ৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে একমাত্র ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি।

 
Electronic Paper