বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ চায় এমন অর্জন
সাইদ রহমান
🕐 ১১:০২ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০১৯
ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুঃসময়টা দিন দিন যেন আবছা হয়ে আসছে। মনে করার চেষ্টা করুন, মাঠে প্রতিপক্ষের শক্তির নিছে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে আপনি শেষ কবে দেখেছেন-নিশ্চয়ই পরিষ্কারভাবে মনে করতে পারছেন না! যে সময় ‘জয় নয়, অংশগ্রহণ’ই বড় কথা’-এই মর্মে বাংলাদেশ মাঠে নামত, সেটা যেন অস্পষ্ট হয়ে ওঠা দূরের কোনো সীমানা।
একটার পর একটা অর্জন টাইগারদের নিয়ে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রে। অন্তত গত এক দশকে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার মতো উত্থান হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে-এটা স্বীকার করতে কসুর করেন না ক্রিকেটবোদ্ধারা। তারপরও অনেক অর্জনের ফাঁকে একটা আক্ষেপ লুকিয়ে ছিল এত দিন-অনেক দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয় তো হলো কিন্তু কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা তো ছুঁয়ে দেখা হলো না। মাঠের টাইগারদের সঙ্গে সঙ্গে খচখচানিটা ছিল গ্যালারির টাইগারদের মধ্যেও।
শেষ পর্যন্ত সেটা মিলল, সঙ্গে কাটল গেরোও। বাকি থাকল এই অসাধারণ অর্জনটাকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত টেনে নেওয়া। সেটা যেমন ক্রিকেটারদের চাওয়া তেমনি প্রত্যাশাটা ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সব দায়িত্বশীলদের। আর দেশের লাখ-কোটি ক্রিকেটভক্তদের কথা না হয় নাই বললাম।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ফাইনালের আগে ভেসে বেড়াচ্ছিন একটা প্রশ্ন-এবারও কী খালি হাতে ফিরতে হবে? ব্যাটিংয়ে নামার আগে যে সমীকরণ দাঁড়িয়েছিল টাইগারদের সামনে তাতে যেন ওই আশঙ্কাটাই ফিরে ফিরে আসছিল, ছয়টি ফাইনাল থেকে তো খালি হাতে ফেরা হলো, আর কত?
অবশেষে গত এক দশকের শাপমোচন হলো। এ সময়ে ওয়ানডে ও টি-২০ মিলিয়ে ছয়-ছয়টি টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেও শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে গত বৃহস্পতিবার ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে এ শিরোপাখরা কাটিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
ট্রফিটা যত বড় অর্জন তার চেয়ে আরও বড় অর্জন হলো বিশ্বকাপের ঠিক আগে আত্মবিশ্বাসটাকে তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার এই সুযোগ। যেটা বাকি নয়টি দলের আর কারও ভাগ্যে জুটল না। এবার বুকভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে উঠবে টিম টাইগাররা। দেশবাসীর প্রত্যাশাও তাই অনেক উঁচুতে-এই সাফল্যটাকেই অনুবাদ করতে হবে বিশ্বকাপের মাঠে।
প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও বললেন একই কথা-‘এটা সত্যিই খুব অসাধারণ এক মুহূর্ত। বিশেষ করে ফাইনালের এমন এক জয়ের জন্য আমরা বহু দিন ধরেই অপেক্ষা করছিলাম। আমি মনে করি, খুবই সঠিক এক সময়ে এই জয়টা পেলাম।
সামনেই বিশ্বকাপ, আশা করি-এই জয়ের ধারা আগামীতেও বিরাজমান থাকবে। এখানে খেলতে পেরে সত্যিই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে যখন সবকিছুই আপনার সঙ্গে ভালো ঘটবে তখন প্রত্যেকটি বিষয়ই বেশ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এই টুর্নামেন্টে আমরা শুরু থেকেই ভালো ক্রিকেট উপহার দিয়ে আসছিলাম। এক ম্যাচ না হেরেও এই ট্রফিটা হয়তো আমাদেরই প্রাপ্য ছিল। এখন আমাদের নজর বিশ্বকাপের দিকে।’
ফাইনাল ম্যাচে জয়ের নায়ক মোসাদ্দেকের ভাষ্যও একই-সাফল্যটাকে বিশ্বকাপেও নিয়ে যেতে হবে। ‘আমরা প্রথম কাপ জিতলাম, সেটিও দেশের বাইরে। আমাদের জন্য এটা অনেক বড় ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্বকাপের আগে অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেলাম। আমি মনে করি, আমাদের ব্যাটিং ও বোলিং ইউনিট যা আছে, এখানকার মতো খেলতে পারলে বিশ্বকাপেও ভালো কিছু করতে পারব। নিঃসন্দেহে আমরা খুব ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে যাচ্ছি।’