এক গোলেই ভূকম্পন
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:৪৮ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০১৮
মেক্সিকোর হার্ভিং লোজানো বিশ্বকাপে তাদের উদ্বোধনী ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিরুদ্ধে জয়সূচক একমাত্র গোল করেন। ওই গোলে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠেন মেক্সিকোবাসী। খেলার ৩৫ মিনিটের মাথায় বলটি যখন নেট স্পর্শ করে তখন ফুটবলপ্রেমীরা এমনভাবে লাফাতে শুরু করলেন যে তাদের পদভারে কেঁপে উঠল দেশটির মাটি।
দেশটির কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে এও বলা হলো- সমর্থকদের লাফালাফিতে দেশটিতে মৃদু ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু আসলেই কি এরকম হতে পারে?
দেশটিতে ভূমিকম্প ইনস্টিটিউট অব জিওলজিক্যাল অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক ইনভেস্টিগেশন বলছে, সেসময় আসলেই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির এক টুইট বার্তায় দাবি করা হয়েছে, ‘রাশিয়ায় ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে জার্মানির বিরুদ্ধে মেক্সিকোর গোল করার পর উল্লাসের কারণে মেক্সিকো সিটিতে কৃত্রিম ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়েছে।’
ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের বিরুদ্ধে গোল হওয়ার পর মেক্সিকোর সমর্থকরা যখন উল্লাস করতে শুরু করে তখন স্থানীয়ভাবে তাদের দুটো সিসমোমিটারে ভূকম্পনের মাত্রা ধরা পড়তে শুরু করে। এই ইনস্টিটিউটের ব্লগে বলা হয়: ‘খেলার ৩৫ মিনিট সাত সেকেন্ডের সময় মেক্সিকো একটি গোল দিয়ে দেয়, তখন আমাদের মনিটিরং সিস্টেমে ভূকম্পনের একটি মাত্রা ধরা পড়ে। এই কম্পনের ত্বরণ ছিল ৩৭মি/এস২ যা মেক্সিকো সিটির ভেতরে কমপক্ষে দুটো সেন্সরে ধরা পড়ে। বড় ধরনের উল্লাসের কারণেই সম্ভবত এই কম্পনের সৃষ্টি হয়েছে।’
তবে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে এও উল্লেখ করা হয়েছে, এ ধরনের কম্পন খুব একটা বড় ঘটনা নয়। তারা বলছেন, সমবেত সমর্থকরা যেখানে উল্লাস করছিল তার খুব কাছে অবস্থিত অত্যন্ত স্পর্শকাতর এসব যন্ত্রে এই কম্পন ধরা পড়ে।
ইনস্টিটিউট অফ জিওলজিক্যাল অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক ইনভেস্টিগেশনের ব্লগে এটা পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয়েছে এই কম্পন এতটাই মৃদু যে তা সাধারণ লোকজনের পক্ষে অনুভব করা বা বুঝতে পারা সম্ভব নয়।
এ রকম ঘটনা কিন্তু আগেও ঘটেছিল ১৯৮৮ সালে আমেরিকান এক ফুটবল টুর্নামেন্টের সময়। লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং অবার্নের ম্যাচের সময় লুইজিয়ানা যখন খেলার একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করে তখন টাইগার স্টেডিয়ামে এরকম ভূকম্পনের সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞান বিভাগে স্থাপিত সিসমোমিটারে ধরা পড়েছিল এই ভূকম্পন। এরপর থেকে ওই ম্যাচটি পরিচিত হয়ে ওঠে ‘ভূমিকম্পের খেলা’ হিসেবে।