ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

যে চরিত্রটি আমার পছন্দ নয়- দেবদাস

আনোয়ারা আজাদ
🕐 ২:২৫ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২১

যে চরিত্রটি আমার পছন্দ নয়- দেবদাস

লাইনটি পড়েই অনেকে রেগে যাবেন জানি। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই আমার। সেই যখন থেকে শরৎবাবুর বড়দি মেজদি শেষ করে দেবদাস হাতে উঠল, পরীণিতা তখনো হাতে ওঠেনি, পড়তে পড়তে বুকের ভিতর মোচড়ামুচড়ির শুরু তখন থেকেই বুঝলেন, একধরনের রাগ পুষে এসেছি। হুহ্। চরিত্র বটে একখান! মেরুদ-হীন!
সাহিত্য কী জিনিস, সাহিত্য বলতে কী বোঝায় এসব বোঝার বয়স তো ছাড়, শব্দটার সঙ্গেও তেমন পরিচিত হইনি সেই বয়সে, যখন এসব বই হাতে ধরতে শিখেছি। শুধু ভিতরে কী কী লেখা আছে সেসব গোগ্রাসে গিলতাম। বাবা-মা, ভাই-বোন আর স্কুলের শিক্ষক ও বন্ধুদের বাইরে একটি অন্য জগতে ঢুকে যাওয়া।

দু’একটি সিনেমা দেখা হয়েছিল বটে কিন্তু ছাপার অক্ষরের জগতে ঘুরে বেড়ানোর স্বাদ একেবারেই আলাদা। স্কুলের লাইব্রেরি থেকে বই তুলে এনে বাড়ি ফিরে কোনো রকমে খাওয়াদাওয়া সেরেই বই নিয়ে বসে যেতাম বিকেলের শেষ আলোয়। একারণেই বোধ হয় চোখের বারোটা বেজে গিয়েছিল সেই অল্প বয়সেই। বিকেলের শেষ আলোয় বই পড়া চোখের জন্য ক্ষতিকর শুনে থাকলেও পাত্তা দিতাম না। উফ। বইয়ের একটি একটি করে পাতা উল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে না দেখা জগতের একটি করে অধ্যায় উন্মোচিত হতে থাকলে কী পরিমাণ উত্তেজনা বৃদ্ধি পেত সে শুধু যারা পাতা উল্টোয় তারাই জানে! যারা পাতা উল্টায় না তাদের চিন্তা চেতনা ছোট্ট একটা পুকুরের জলের মতো কে না জানে। দিঘির টলটল জল আর তার স্বচ্ছতা তাদের চোখেও পড়ে না। আন্ধা আর কী!

শেক্সপিয়ারও চেনা হয়ে গেছে অষ্টম নবম শ্রেণিতে উঠেই। যতগুলো অনুবাদ ছিল লাইব্রেরিতে সব কটাই সাবাড় করেছিলাম। কিছুদিন পর ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’। বুঝি আর না বুঝি, এই যে ভিন্ন সমাজের জটিল সব চরিত্রের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছিলাম তাতেই ভাবনার জায়গাটায় বিশাল একটি ঝাঁকি খেত। চরিত্রগুলো ঘুমের ভিতরও হানা দিত। কোনো কোনো সময় বই হাতে থম মেরে বসে থাকতাম। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ারও ইতিহাস আছে। রোমিও জুলিয়েট পড়ে চোখের পানি নাকের পানি একাকার না হলেও কেমন জানি ভাবের মধ্যে ডুবে থাকতাম। আহা, প্রেম নিয়ে কী জটিল একটি অবস্থা। একজনের জন্য আরেকজনের এই যে আকুতি, এই যে বোধ, এসব তো বই পড়েই ভালো জেনেছি! নিজের ভিতর প্রেম তখনো জাগেনি বা সুযোগ হয়নি কিন্তু ঘোর তো একটা লাগতই!

অথেলো পড়ে কী যে একটা অবস্থা, বোঝাবার নয়। ঈর্ষা জিনিসটা ঠিক কোথায় কোথায় কাজ করে এবং কীভাবে ব্যবহৃত হয়, ওই বয়সে এসব বোঝার কথা না হলেও চরিত্রগুলো মাথায় হেঁটে বেড়াত। ডেসডিমোনা, এমিলিয়া, লেগোর চরিত্র নিয়ে ভাবার মতো পরিপক্বতা না থাকলেও পরবর্তীতে ঠিকই বুঝতে পেরেছি। আর বুঝতে পেরেছি বলেই না এমন চরিত্রের মানুষজনকে সহজে পড়ে ফেলি! যাবে কোথায় জাদু!

যতদূর মনে পড়ে, বিদেশি লেখকদের মধ্যে শেক্সপিয়ারের অনুবাদগুলোই বেশি ছিল স্কুলের লাইব্রেরিতে। লাইব্রেরিতে প্রথম যে বইটি পড়েছিলাম নাম মনে আছে। ‘কালু সর্দার’। কালু সর্দারের মতো বইও ছিল শহরের নামকরা একটি স্কুলের লাইব্রেরিতে! লেখক কে ছিল মনে না থাকলেও নামটা ঠিক মনে আছে। পড়ার পর কালু সর্দারকে দেখতে খুব মন চাইছিল! বেশ ড্যাশিং টাইপের চরিত্র ছিল সেটা। ছোটবেলাটাই এমন সরল ছিল।

তো দেবদাস পড়ার সময়টাতে আলোচনা হলে সমবয়সীরাও একজন একজন করে গপাগপ পড়ে ফেলছে। দেবদাসের কুচুরমুচুর চরিত্র নিয়ে ফিসফাস আর হাহা হিহি আলোচনা হয় তাদের সঙ্গে। কেউ নায়কের পক্ষে তো কেউ নায়িকার পক্ষে। নায়িকাকে আমার তেমন শক্তও মনে হয় না। চন্দ্রমুখীর চরিত্রও তখন সম্পূর্ণ নতুন আমাদের কাছে। পুরুষের বেদনা লাঘবের জন্য যে ওরকম জায়গারও ব্যবস্থা থাকে তখনই অবগত হয়েছি! নারীর বেদনা লাঘব করার তেমন কোনো জায়গা আছে কি? জানি না এখনো। আদতে নারী নিজেই সব সামলে নেয়। কারও কাঁধের দরকার পড়ে না। দু’একজন খুব বেশি ভাগ্যবতীর কথা আলাদা যারা অন্যের সহানুভূতি আদায় করতে পারে। বাকিরা সব নিজেই সামলে নেয়। হিন্দু শাস্ত্রে তো আর এমনি এমনি দশভূজার কথা বলা হয়নি!

এদিকে মদ খেয়ে নায়িকার বাড়ির সামনে পড়ে মরে যাওয়া নায়কের কথা নিয়ে জোরেশোরে আলোচনা করার সাহস নেই কারও। মদ খাওয়া ব্যাপারটা তখন এতটাই পাপ কাজ মনে হতো যে নায়কের এই পরিণতি ঠিক কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে তাই ভেবে পেতাম না আমরা। তবে পার্বতীর জন্য মায়া লাগত খুব। আহারে বেচারি! পার্বতীরা এখনো বেচারিই থেকে গেলরে পাগলি! এখনো জোর করে অসম বিয়েতে বসতে হয় অনেক মেয়েকে।

যাই হোক, ইতোমধ্যেই বয়েজ স্কুলের ছেলেপুলেরা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাইকেল নিয়ে পিছন পিছন আসা শুরু করেছে যেটা বেশ উপভোগ করতাম আমরা। রিকশার পিছন পিছনও আসতে দেখেছি দু’একজনকে। আহা কিশোরীবেলা! যা কোনোদিন আর ফিরে আসবে না। কোন ছেলেটা কার পিছনে যাচ্ছে এটা নিয়ে খুব মজা করতাম আমরা। ছেলেটা দেখতে কেমন, হ্যাবলা না স্মার্ট! হ্যাবলা ছেলেগুলো অবশ্য সাহসই পেত না পিছন পিছন ঘোরার। পরে অবশ্য এই হ্যাবলাগুলোরই দু’চারজন খুব ভালো জায়গায় চাকরি, সুন্দরী বউ সবই পেয়েছে। তো সেই স্মার্টগুলোর দু’একজন চিঠিফিটিও পাঠাতে শুরু করেছে একে ওকে দিয়ে। বান্ধবীদের নিজের নিজের চিঠি শেয়ার করে হাসাহাসিও একটা আনন্দের অধ্যায় ছিল নিঃসন্দেহে! তো বেশ কয়েকজনের চিঠিতেই দেখা গেল উত্তর না পেলে হুমকি দিচ্ছে দেবদাস হয়ে যাবে বলে। আরে জ¦ালা! দেবদাস হয়ে যাবে মানেটা কী? পার্বতীর মতো প্রেম করলাম কখন যে হুমকি দেওয়া শুরু! দু’একবার কথাটথা বললেই কি প্রেম হয়ে যায় নাকি রে বাবা! পাক্কা প্রেম হবে, নাকের জল, চোখের জল হবে তবেই না হুমকি ধামকি! ভয় কিন্তু পেয়েছিলাম, সত্যিই যদি ওরকমটা হয়ে যায়, তখন কি হবে? কী বোকা ছিলাম রে বাবা। ছেলেগুলোও। বেচারারা ওটুকু বয়সে পড়ে যা বুঝেছে তাই, ওদের আর দোষ কী? ভেবেছে কাউকে চেয়ে না পেলেই মদ খেয়ে দেবদাস হয়ে যাবে। লেখক যেভাবে বুঝিয়েছেন সেভাবেই! মদ ওরা কোথায় পাবে তখন! অত সহজ ছিল? তারপরেও মদ শব্দটাই যেন একটা অস্ত্র! রাসায়নিক অস্ত্রের মতো! শুনেছি দু’একজন তখন সত্যি সত্যিই মদ খেতে শিখেছিল! কোথা থেকে জোগাড় করত কে জানে। নাকি দুষ্টুগুলো শুধু শুধু হুমকি দিত ভয় পাওয়ানোর জন্য! হতেই পারে। বড় হয়ে কে কতটা সেই প্রেম ধরে রেখেছিল তা অবশ্য জানা হয়নি!

আহা সময়! কীভাবে যেন ফুস করে চলে গেল। যেন ঘুমের ভিতর স্বপ্ন দেখে উঠলাম কেবল। যেন চোখের সামনে দিয়ে উল্কা চলে গেল। সব মেয়ের বেলাতেই এটা হয়, জানি। এই যে, ছেলেদের কাছ থেকে চিঠি পাওয়া! সত্যি বলতে কী, মন্দ লাগত না! ওই বয়সে ওরকম চিঠিফিটি না পেলে আর কীসের মেয়েবেলা! জীবনের বারো আনাই বৃথা! ছেলেদের কাজই তো মেয়েদের চিঠি লেখা। হয়তো দু’একজন মেয়েও ছেলেদের লিখত, যা ছিল অজানা! কিন্তু নিয়মটাই ওরকম ছিল, ছেলেরা চিঠি লিখবে! মেয়েরা লজ্জা লজ্জা করে সেই চিঠির একটু দেরিতে দেবে! এখন কত ধরনের অস্ত্র পোলাপানের কাছে! এসিড ছাড়িয়ে এখন ধর্ষণ হলো সবচেয়ে বড় অস্ত্র! এখন হুমকিও দেয় না। ভিতরে ভিতরে বন্ধুদের নিয়ে মাস্টার প্ল্যান করে ডাইরেক্ট ধর্ষণ। কোনো কোনো সময় একেবারে ‘ফিনিশ’ করে দেয়। ‘আমার না হলে আর কারও হওয়া যাবে না’ এমন ধারণাই পোষণ করে ওরা। আদতে এই প্রজন্মের এইসব নষ্ট পোলাপান নষ্ট পরিবারে যা চায় তাই পেয়ে আসে তো। তাই। এখন ব্ল্যাকমেইল করার অস্ত্র তো নস্যি! ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি কত সহজ এখন! প্রেম শব্দটার অর্থ বোঝার মতো প্রজ্ঞা ওদের কাছে আশা করা আমাদেরই বোকামি। কে জানে কোন পিতা-মাতার ঔরসে জন্ম হয় ওদের? ওদের পিতা-মাতারও হয়তো জন্মের ঠিক ছিল না, তাই! বিবর্তনের ভিতর বাঁদর থেকে শুধু মানুষই কি হয়েছে! না, এরকম হাজার হাজার ধর্ষকেরও জন্ম হয়েছে। শুধু ঠ্যাংগুলো সোজা হয়েছে এটুকুই।

দেবদাস বইটা পড়ে যতটা না বিদ্বেষ পুষেছিলাম, সিনেমা দেখার পর মেজাজ পুরাই তুঙ্গে। এদিকে দেবদাস দেবদাস করে বাংলা সাহিত্য আর বাংলা চলচ্চিত্র কেঁদে ভাসাচ্ছে। সুপুরুষরা দেবদাস হয়ে যাবে বলে ধুতির স্টাইল নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। ওদিকে চলচ্চিত্রে পার্বতীকে নাচিয়ে কুঁদিয়ে তার ভিতরের উষ্মাটাকে ঢেকে দেওয়ার অপকৌশল চালিয়েছে। সেই পুরনো কৌশল। নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে ব্যবসা করা। আর মেরুদ-হীন নায়ক মদের বোতল হাতে পার্বতীর বাড়ির সামনে গিয়ে গড়াগড়ি দিয়ে জীবন শেষ! এরকম একজন নায়ককে যার কোনো ব্যক্তিত্ব নেই তাকে কেন আইডল ভাবতে হবে? তাকে কেন অনুসরণ করতে হবে? আর এরকম একটা চরিত্রইবা কেন সৃষ্টি করতে হবে, বোধগম্য নয়। সবই আমার নিজস্ব ভাবনা। কারও ওপর চাপাতে চাইছি না কিন্তু। সেই সময়কার সমাজে এরকম চরিত্র হাজারে হাজারে ছিল জানি। মায়ের অনুগত, প্রেমিকার বিশ্বাস ভঙ্গকারী! নয়তো কি? মায়ের আনুগত্যের প্রমাণ কেন সব সময় প্রেমিকার হৃদয় ভাঙার ভিতর দিয়েই ঘটানো হতো! সেই ধারাবাহিকতা চলছে এখনো। আর দেখ পাবলিক কেমন গোগ্রাসে সেই মেরুদ-হীন প্রেমিকের কষ্ট বুকে লালন করে যাচ্ছে! এই কাহিনির একটা চরিত্রও নেই যার ব্যক্তিত্ব আছে। অন্তত একটা চরিত্রেরও যদি তা থাকত, সমাজের কাজে লাগত, সামাজিক অবক্ষয়ের সূচনা হতো না।

সাহিত্য, সমাজে কী পরিমাণ প্রভাব ফেলে দেবদাস তার জ¦লন্ত উদাহরণ। মানুষের আদি একটি চরিত্রগত দোষ আছে, তা হলো, যা কিছু মন্দ, তা অনুসরণ করা। তাই হচ্ছে। অনেকেই বলে থাকে, লেখকের কাজ লিখে যাওয়া। সমাজের ওঠানামার ভালোমন্দ বিচারের দায় লেখকের নয়। সে যা দেখবে, অনুভব করবে লিখে যাবে, ব্যস। আমি তা মনে করি না। সাহিত্যই বলি আর চলচ্চিত্রই বলি, লেখকের দায় অবশ্যই আছে। যে সৃষ্টি ভাবনার জগৎকে সংকুচিত করে, প্রসারিত করে না, ব্যক্তিত্বহীন করে, সেই সৃষ্টির মূল্যায়ন করতে আগ্রহী নই।

বাংলা সাহিত্যে এরকম ক্যাবলা, মেরুদ-হীন, প্রতারক নায়কের সংখ্যা আরও আছে, যেসব সমাজে উপকার তো করেই না বরং তরুণ সমাজকে বিপথগামী করে তোলে। আমার তো মনে হয় দেবদাস পড়ার পর থেকেই বাঙালি তরুণরা প্রেমিকার সঙ্গে প্রতারণা করে মদ খেয়ে বাঈজীর কাছে যাওয়ার ঢ্যামনামো শিখেছিল। আর তাদেরই উত্তরসূরিরা এখন আরও এককাঠি উপরে উঠে প্রেমিকার সঙ্গে প্রতারণা করার নানা কলাকৌশল রপ্ত করে প্রেম শব্দটির ব্যবচ্ছেদ করার খেলায় মেতে উঠেছে।

এরকম একটি ব্যক্তিত্বহীন চরিত্র যুগ যুগ ধরে মানুষের মননে কীভাবে স্থায়ী বসতভিটা তৈরি করে রেখেছে বোধগম্য নয়। আর দেখুন, তখনকার দেবদাসরা মদ খাওয়ার ভিতরেই তাদের ‘মর্দাঙ্গী’ সীমাবদ্ধ রাখলেও এখনকার দেবদাসরা অনেকটাই চালাক এবং আরও বেশি হঠকারী হওয়ার নানা রকম কলাকৌশল রপ্ত করছে। এক কথায় পুরুষের মগজে বিশ্বাসঘাতকতার বীজ বপন করার প্রক্রিয়া চলছেই যুগের পর যুগ। ‘দেবদাস’ নিয়ে আমার মাথাব্যথার কারণ এখানেই। আমি চাই অসম্ভব সাহসী একজন পুরুষ, সত্যিকারের প্রেমিক পরুষ, যে পিতামাতার স্নেহ ভালোবাসাকে জায়গা মতো রেখে, সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রেমিকাকে জয় করতে পারে। প্রেমিকার ভালোবাসার জন্য লড়ে জীবন দিতে পারে যে প্রেমিক, তাকে স্যালুট জানাই। মদ খেয়ে আলাভোলার মতো রাস্তায় পড়ে থাকা প্রেমিককে নয়। লড়াকু আর মমতায় ভরা বুক, এমন একজন প্রেমিকের অপেক্ষায় আছি আমি, যার ধারাবাহিকতা বাঙালি যুগ যুগ অনুসরণ করবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper