ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মুজিববর্ষে ৫০ মডেল মসজিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০৯, ২০২১

মুজিববর্ষে ৫০ মডেল মসজিদ

ইসলামের চিরায়ত ঐতিহ্যকে ধারণ করে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। এর মধ্যে মুজিববর্ষে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে। শুধু নামাজ আদায় নয়, এই মসজিদগুলো হবে গবেষণা, ইসলামী সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র। প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. নজিবর রহমান বলেন, মুজিববর্ষে ১৭০টি মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে। আশা করছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোজার আগেই ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন হবে। সারা দেশে মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে জানান। প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ৫৬০টি মডেল মসজিদে সারা দেশে প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। 

প্রকল্পের মোট কাজের ৩২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়ে নজিবর রহমান বলেন, সেপ্টেম্বরে ৬০টি এবং মুজিববর্ষের শেষ ভাগে ডিসেম্বর মাসে আরও ৬০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫৬০টি মডেল মসজিদের সবগুলো সম্পন্ন হবে। মুসলিম বিশ্বের এই প্রথম কোনো দেশের সরকার একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করছে। এর আগে কোনো মুসলিম শাসক বা সরকার প্রধান একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করেননি। ২০১৪ সালের

ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে নিজস্ব অর্থায়নে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করছে সরকার। ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এই মসজিদগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার। বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার। সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নিচতলা ফাঁকা থাকবে।

একেকটি মসজিদ নির্মাণ করতে ব্যয় হচ্ছে জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা; উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ১২শ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। অপরপক্ষে উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৯০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষদের পৃথক অজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশুশিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এ ছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে।

মডেল মসজিদগুলোতে দীনি দাওয়া কার্যক্রম ও ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮০০ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সব সময় দোয়া, মোনাজাতসহ তসবিহ পড়তে পারবেন।
মসজিদগুলো থেকে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা থাকবে। আরও থাকবে ইসলামিক নানা বিষয়সহ প্রতি বছর ১ লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে প্রকল্পের আওতায়। কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে।

মুজিববর্ষে যে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে সেগুলো হলো- ঢাকা বিভাগ : ঢাকা জেলার সাভার উপজেলা, ফরিদপুর জেলার মধুখালী ও সালথা উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জ জেলার শিবায়ল উপজেলা, রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলা, শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলা ও গোসাইরহাট উপজেলা। রাজশাহী বিভাগ : বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও কাহালু উপজেলা, নওগাঁ জেলার সাপাহার ও পোরশা উপজেলা, পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলা, সিরাজগঞ্জ জেলার জেলা সদর ও সদর উপজেলা, রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলা। রংপুর বিভাগ : দিনাজপুর জেলার খানসামা ও বিরল উপজেলা, লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলা, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ ও সদর উপজেলা, রংপুর জেলার জেলা সদর, মিঠাপুকুর, সদর উপজেলা, পীরগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলা, ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলা। ময়মনসিংহ বিভাগ : জামালপুর জেলার ইসলামপুর ও সদর উপজেলা, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও ও তারাকান্দ উপজেলা। বরিশাল বিভাগ : ভোলা জেলার সদর উপজেলা, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা। চট্টগ্রাম বিভাগ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর ও নবীনগর উপজেলা, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলার জেলা সদর, লোহাগাড়া, মিরমরাই ও সন্দ্বীপ উপজেলা, কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলা, খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলা। খুলনা বিভাগ : খুলনা জেলার জেলা সদর, চুয়াডাঙ্গা জেলার জেলা সদর, কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলা। সিলেট বিভাগ : সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper