স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০৩, ২০২১
বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন নতুন মাত্রায় এগুতে থাকে মার্চে। স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল চলতে থাকে ২ মার্চ থেকে। জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে গভীরভাবে উপলব্ধি করেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ প্রস্তুত না করে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বাঙালিকে হঠকারিতার দিকে ঠেলে দিতে চাইছিলেন না। জনগণকে আরও প্রস্তুত করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এদিকে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্র-জনতার সমাবেশে ঢাকসুর তৎকালীন ভিপি আ স ম আব্দুর রব স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।
ঐতিহাসিকরা বলেন, ২ মার্চ কলাভবনের সামনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের ঘটনা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্যতাকে আরও প্রকট করে তোলে এবং নতুন মাত্রায় বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে থাকে। পরের দিন ৩ মার্চকে বাঙালি জীবনের আরও একটি অবিস্মরণীয় দিন বলে মনে করা হয়। কারণ ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশ স্থগিত করার পর ৩ মার্চ আর অধিবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি। হরতালে-বিক্ষোভে ক্রমাগত উত্তাল হতে থাকে পূর্ব বাংলা। ওই দিন পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হয়। সেই ইশতেহারে স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরা হয়। এবং সেই ইশতেহারেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয় এ দেশের নাম হবে ‘বাংলাদেশ’।
যদিও এই দেশের নাম যে বাংলাদেশ হবে সেটা বহু আগেই বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন আলোচনায় বলেছিলেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত স্বাধীনতার ইশতেহারের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলার নাম ‘বাংলাদেশ’ চূড়ান্ত হয়। একই সঙ্গে সবুজ জমিনে লাল সূর্যখচিত বাংলাদেশের পতাকা এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ ঘোষণা করা হয় সে ইশতেহারে। সেদিনের ইশতেহারেই বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ঘোষণা করা হয়।
পল্টনে উপস্থিত লাখো ছাত্র-জনতা তুমুল স্লোগান আর করতালির মধ্য দিয়ে সে ইশতেহারকে মুক্তিযুদ্ধের ইশতেহার হিসেবে গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুকে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক মনোনীত করে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধের সব ধরনের কৌশলও নির্ধারণ হয় ওইদিন। সেদিনই প্রথম বঙ্গবন্ধু ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি উচ্চারণ করেন। তখন উপস্থিত ছাত্র জনতা উল্লাসে ফেটে পড়েন। ইতিহাসের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রথমবারের মতো সেদিন বিপুলসংখ্যক নারী লাঠি হাতে মিছিলে যোগ দিয়েছিল। ঢাকার রাজপথ হয়ে উঠেছিল মিছিলের নগরী।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228