ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঐতিহ্যের তীর্থভূমি মানিকগঞ্জ

রুপসী বাংলা ডেস্ক
🕐 ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০২, ২০২০

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের তীর্থভূমি মানিকগঞ্জ। সবুজ শস্য-শ্যামল প্রান্তর, রাশি রাশি বৃক্ষরাজি আর দূর দিগন্তে দৃষ্টির সীমানায় আকাশের নীলিমার সখ্যতা নিয়ে গাজীখালি, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা বন্দর মানিকগঞ্জ। মানিকগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বালিয়াটি প্রাসাদ, তেওতা জমিদার বাড়ি, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, স্বপ্নপুরী, ফলসাটিয়া খামার বাড়ি, ক্ষণিকা, শহীদ রফিক স্মৃতি জাদুঘর, নাহার গার্ডেন পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ জেলাকে নিয়ে আজকের প্রতিবেদন

নাহার গার্ডেন
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের কামতা গ্রামে অবস্থিত নাহার গার্ডেন (Nahar Garden Picnic Spot)। ধলেশ্বর নদীর তীরে শহরের কোলাহল মুক্ত নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশে সবুজের সমারোহ ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি আদর্শ পিকনিক স্পট নাহার গার্ডেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের এ গার্ডেনটিতে ছোট-বড় মিলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় তিন হাজার পাখি রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ প্রজাতির ঘুঘু, ২০ প্রজাতির টিয়া ছাড়াও বাজরাঙা, লাভ বার্ড, ককটেল, ফিনস, মেকাউ, গেরে প্যারেট, আমাজানসহ রয়েছে দেশি-বিদেশি নানান প্রজাতির পাখি। এছাড়াও দর্শনার্থীদের নজরে রয়েছে নয়টি উট, একটি ইমু ও আটটি ময়ূর। শিশুদের জন্যে রয়েছে বড় একটি শিশু পার্ক। এছাড়াও রয়েছে ছোট-বড় তিনটি বানর ও ১২টি হরিণ। গার্ডেনের চারদিকে সবুজ শ্যামল পরিবেশে রয়েছে দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার গাছপালা। আরও রয়েছে ছোট-বড় চারটি পুকুর ও একটি টাইটানিক জাহাজ। অত্যন্ত সুন্দর ও জনপ্রিয় এ পার্কে পিকনিক ছাড়াও যে কেউ বিনোদনের জন্য প্রবেশ করতে পারে।


আরিচা ঘাট
১৯৬৩ সালের ৩১ মার্চ কর্ণফুলি নামে একটি ফেরি সার্ভিস দিয়েই আরিচা-দৌলতদিয়া নৌরুটের যাত্রা শুরু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দ্রুত বাড়তে থাকে আরিচা ঘাটের (Aricha Ghat) গুরুত্ব। এক পর্যায়ে আরিচা ঘাটকে নৌবন্দরের মর্যাদা দেওয়া হয়। এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার যানবাহন পারাপার হতো। যাতায়াত ছিল গড়ে ৫০ হাজার মানুষের। কেমন ছিল আরিচা ঘাট আর যেমন আছে পাটুরিয়া ঘাট। দুই ঘাটের চিত্র এখন দুই রকমের। একটির জন্ম ৬০’র দশকে আর আরেকটির জন্ম ৯০ দশকে। উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন ছিল আরিচা ঘাট। আর যমুনা সেতু এবং আরিচা থেকে ঘাটটি পাটুরিয়ায় স্থানান্তর করার পর মরে যায় আরিচা আর প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে আসে পাটুরিয়া ঘাটে।
আরিচা ঘাট : এক সময়কার চিরচেনা সেই আরিচা ঘাট আজ শুধুই স্মৃতি। এই নামটি এখন শুধুমাত্র কালের সাক্ষী হয়ে মানুষের মনে গেঁথে আছে। ৯০ দশকের আগে দেশের উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন ছিল এই ঘাটটি। বারো কিসিমের মানুষের আয়-রোজগারের এই আরিচা ঘাটে নেই রাতের আঁধারে ফেরির সেই সার্চ লাইটের আলোর ঝলকানি, নেই যাত্রী, হকার ও ফেরিওয়ালাদের হৈ-হুল্লোড়।


মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে মানিকগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ আপামর জনসাধারণ পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে ইতিহাসে স্মরণীয় অধ্যায় সৃষ্টি করেছিলেন। মানিকগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের স্মরণীয় অধ্যায়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল ১৯৭১ এর ২৫ মার্চেই। ২৫ মার্চ ঢাকার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার সংবাদ মানিকগঞ্জে প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এখানে যুদ্ধ পরিচালনা কাউন্সিল গঠন করা হয়। এই কমান্ডো কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ ছিলেন- জনাব ১। মোসলেম উদ্দিন খান হাবু মিয়া ২। ক্যাপ্টেন (অবঃ) আব্দুল হালিম চৌধুরী ৩। মাজহারুল ইসলাম চান মিয়া ৪। ডাঃ মীর আবুল খায়ের ঘটু (নির্বাচিত প্রাদেশিক সংসদ সদস্য) ৫। খন্দকার দেলোয়ার হোসেন ৬। সৈয়দ আনোয়ার আলী চৌধুরী ৭। মফিজুল ইসলাম খান কামাল। ২৫ মার্চ রাত এগারটায় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানিকগঞ্জের ট্রেজারিতে গচ্ছিত সকল রাইফেল (প্রায় ছয়শত টি) হস্তগত করে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


বেতিলা জমিদার বাড়ি
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলায় অবস্থিত বেতিলা জমিদার বাড়ি (Betila Zamindar Bari) একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। সবুজ ঘেরা বেতিলা গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতিলা খাল দিয়ে একসময় বিভিন্ন মহাজনী নৌকা ও বজরার যাতায়াত ছিল। বেতিলা খাল দিয়ে ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদীতে সহজেই যাওয়া যেত। এরই ফলশ্রুতিতে তৎকালীন সময়ের বড় বড় বণিকরা এই বেতিলা খালকে নিরাপদ পথ হিসাবে ব্যবহার করতেন। অত্র অঞ্চলের অন্যতম বনিক সত্য বাবুর বসতবাড়িই লোকমুখে বেতিলা জমিদার বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। অজপাড়াগাঁয়ে এমন বিশালাকারের দালান ও আভিজাত্যের প্রকাশ স্থানীয়দের কাছে জমিদারি থেকে কম ছিল না।
বেতিলা জমিদার বাড়ির নির্মাণ এবং তৎকালীন ইতিহাসের ঘটনা প্রবাহ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোন সূত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে কলকাতার বনিক জ্যোতি বাবু ছিলেন বেতিলা জমিদার বাড়ির পূর্বপুরুষ। ধারণা করা হয় পাটের ব্যবসার সুবিধার জন্য তিনি এই জমিদার বাড়ি তৈরি করেন।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
গোবিন্দ রাম সাহা বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের বণিক ছিলেন। জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের মধ্যে কিশোরীলাল রায় চৌধুরী, রায় বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজের (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর পিতা এবং যার নামানুসারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি (Baliati Jamindar Bari) নামে পরিচিত, এই প্রাসাদ চত্বরটি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার জমির ওপর ছড়িয়ে থাকা ৭টি দক্ষিণমুখী দালানের সমাবেশ। এই দালানগুলো খ্রিষ্টীয় মধ্য ঊনবিংশ শতক থেকে বিংশ শতকের প্রথমভাগের বিভিন্ন সময়ে জমিদার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সামনের চারটি প্রাসাদ ব্যবহৃত হত ব্যবসায়িক কাজে। এই প্রসাদের পেছনের প্রাসাদকে বলা হয় অন্দরমহল যেখানে বসবাস করত তারা। মোট সাতটি স্থাপনা নিয়ে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। এই বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা প্রাসাদটির সবগুলো ভবন একসঙ্গে স্থাপিত হয়নি। এই প্রাসাদের অন্তর্গত বিভিন্ন ভবন জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে স্থাপিত হয়েছিল। এটি বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত অন্যতম প্রাসাদ।


মত্ত মঠ
মানিকগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত মত্ত মঠ (গধঃঃধ গড়ঃয) একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন। জানা যায়, প্রায় আড়াইশত বছর পূর্বে পটল গ্রামে হেমসেন নামে একজন অত্যাচারী জমিদার তাঁর পিতার শেষকৃত্য স্থলে এ মঠ নির্মাণ করেন। নিটল দীঘির পাড়ে ১৫ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত মঠের উচ্চতা প্রায় ২০০ ফুট উঁচু। মত্তের মঠ নির্মাণের জন্য ইরাক থেকে কারিগর আনা হয়েছিল।
১৯৬৫ সালের দিকে একদল আমেরিকান পর্যটক মত্ত মঠ সংস্কারের আগ্রহ প্রকাশ করলেও স্থানীয় প্রভাবশালী হিন্দুদের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ১৯৭২ সালে একদল চীনা পর্যটক মঠের কারুকার্যপূর্ণ নির্মাণশৈলী দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে।


তেওতা জমিদার বাড়ি
দেশের পুরাকীর্তি স্থাপনার মধ্যে মানিকগঞ্জের তেওতা জমিদার বাড়ি (Teota Jomidar Bari) ইতিহাস অন্যতম। এ বাড়ির ঐতিহাসিক নির্র্দশন এখন শুধু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীর কূলঘেঁষা সবুজ-শ্যামল গাছপালায় ঢাকা তেওতা গ্রামটিকে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দিয়েছে জমিদার শ্যামশংকর রায়ের প্রতিষ্ঠিত নবরত্ন মঠটি। অনেকদূর থেকেই দেখা যেত শ্বেতশুভ্র নবরত্ন মঠ। এক সময়ে জমিদারের বাড়ির আঙিনার এই মঠকে ঘিরে দোলপূজা আর দুর্গাপূজার রঙিন উৎসব পালিত হতো। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এই তেওতা গ্রামটি আরও বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী প্রমীলার স্মৃতি জড়িয়ে থাকায়। তেওতা গ্রামের মেয়ে প্রমীলা।
জমিদার বাড়ির পাশেই বসন্তকুমার সেন আর গিরিবালা সেন দম্পতির মেয়ে আশালতা সেন বা প্রমীলা নজরুল। এর ডাক নাম দুলি। ছন্নছাড়া, ভবঘুরে নজরুল কয়েক দফায় এসেছিলেন এই গ্রামে। তবে এখানে কেন এসেছিলেন এ নিয়ে জনমনে রয়েছে নানান বিতর্ক।
তবে জনশ্রুতি হয়েছে ১৯২২ সালে প্রমীলার সঙ্গে একবার এসেছিলেন এটি প্রায় সবাই সায় দেয়। ঐ বছর সেপ্টেম্বর মাসে নজরুলের লেখা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতাটি ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশ হলে ব্রিটিশ সরকার তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। প্রমীলাকে নিয়ে তেওতা গ্রামে আত্মগোপন করেন নজরুল।
আত্মগোপনে থাকতে আসলেও দুরন্ত নজরুল অবশ্য ঘরের কোনে বসে থাকেননি। যমুনার ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা সবুজ-শ্যামল পাখিডাকা তেওতা গ্রামে ছুটে বেরিয়েছেন। গান, কবিতা আর অট্টহাসিতে পুরো গ্রামের মানুষকে আনন্দে মাতিয়েছেন।


প্রখ্য্যাত ব্যক্তিত্ব

ড. অমর্ত্য সেন
ড. অমর্ত্য কুমার সেনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৩ নভেম্বর। তাঁর ডাক নাম বাবলু। অমর্ত্য সেনের ছোটবেলা কেটেছে ঢাকা, শান্তিনিকেতন, বার্মার মান্দালয় এবং কলকাতায়। তিনি বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লির নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৯৩ সালে জিন মেয়ার গ্লোবাল সিটিজেনশিপ অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড অব এশিয়াটিক সোসাইটি, ১৯৯৭ সালে এডিনবার্গ মেডেল, ক্যাটালোনিয়া ইন্টারন্যাশন্যাল প্রাইজ এবং নোবেল প্রাইজ লাভ করেন।

শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ
শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পারিল বলধারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে মিছিল করার সময় তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রফিকই প্রথম গুলিবিদ্ধ হন। তাই বলা যায় তিনিই ছিলেন ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ।

এ. কে. এম নূরুল ইসলাম
এ.কে.এম নূরুল ইসলাম ১৯২৫ সালে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার পূর্ব খলিলপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪১ সালে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৪৫ সালে ইংরেজি অনার্স সহ বি.এ ডিগ্রি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে তিনি এম.এ পাস করেন। তিনি তদানীন্তন ঢাকা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ১৯৬৮ সালের ২১ অক্টোবর শপথ গ্রহণ করেন এবং ১৯৭০ সালে স্থায়ী বিচারপতি নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালের ৩০ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

কর্ণেল (অব) এম. এ মালেক
বিশিষ্ট সমাজসেবক কর্ণেল (অব) এম.এ মালেক, পি.এস.সি, মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৫ সালের পহেলা মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে তদানীন্তন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত হন। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ১৯৭৫ সালে ব্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি ২০০০ সালের ১৬ জুলাই তারিখ ভোর ৫টায় জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিম চৌধুরী
ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিম চৌধুরী ১৯২৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারী শিবালয় থানার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ১৯৫০ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ সামরিক অফিসার। স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহান বীর সেনানী ১৯৮৭ সালের ৭ অক্টোবর পরলোক গমন করেন।

হীরালাল সেন
হীরালাল সেন মানিকগঞ্জ জেলার বকজুরি গ্রামে ১৮৬৭ সালে আগস্ট মাসের শ্রাবণী পূর্ণিমায় মুন্সি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৯৭ সালে গ্রাম বাংলাকে নিয়ে একটি তথ্য চিত্র তৈরি করেন। ১৮৯৮ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত রয়াল বায়োস্কোপ কোম্পানিতে শুরু হয় নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। এখানকার প্রদর্শিত প্রথম ছবি ‘আলিবাবা’ ঢাকা শহরে ১৮৯৮ সালে ১৭ এপ্রিল প্রদর্শিত হয়। ১৯০২ সালে হীরালাল সেন চিত্র নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি ১৯১২ সালে ‘দরবার’ ও ‘রয়াল ভিজিট’ নামে দুটি সংবাদমূলক তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন। ১৯১৭ সালের ২৯ অক্টোবর চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ হীরালাল সেন চির নিদ্রায় শায়িত হন।

খান আতাউর রহমান
খান আতাউর রহমান ১৯২৮ সালের ১১ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। খান আতা ১৯৫৩ সালে লন্ডনের পাকিস্তান স্টুডেন্ট ফেডারেশনের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। খান আতা বেতারের জন্য বহু গান লিখেছেন। খান আতা ১৯৫৯ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘এদেশ তোমার আমার’ ছবিতে প্রথম সঙ্গীত পরিচালক রূপে আত্মপ্রকাশ করেন।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper