শিল্পোন্নয়নে সাফল্যের দৃষ্টান্ত
আলতাফ হোসেন
🕐 ১২:৫২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০
‘পিএইচপি ফ্যামিলি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ব্যবসার জগতে সফল একজন কিংবদন্তি। সহজ-সরল, বিনয়ী, মিষ্টভাষী, অত্যন্ত সাধাসিধে ও নিরহংকার মানুষ। নিয়মিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দেখাশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা, সংগঠন, দুঃখী মানুষ ও সমাজ উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে দানবীর হিসেবেও সর্বমহলে প্রশংসিত। প্রতিবেদন তৈরি করেছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আলতাফ হোসেন
‘পিএইচপি ফ্যামিলি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ব্যবসার জগতে সফল এক কিংবদন্তি। সহজ-সরল, বিনয়ী, মিষ্টভাষী অত্যন্ত সাধাসিধে ও নিরহংকার মানুষ তিনি। অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী এ কৃতী পুরুষ নিজের ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ড নিপুণভাবে সামলে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, আল্লাহর দয়া, নিবিষ্ট নিষ্ঠার সঙ্গে কঠিন পরিশ্রম, কঠিন তপস্যা, সাধনা এবং নিয়তের সততা একত্রিত হলে বিধাতা তাকে উন্নত করবেই। তার জীবনের যা কিছু অর্জন সব কিছু আল্লাহর দান, তাই এ দান দিয়েই মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।
বিশিষ্ট শিল্পপতি সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পিএইচপির প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। সততা, আদর্শ এবং ন্যায়-নীতিকে ধারণ করে বিশ্বায়নের এই জটিল সময়েও যে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। যিনি এই বিশাল শিল্প গ্রুপের কর্ণধার হিসেবে নিজের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা এবং আদর্শে এ গ্রুপটি সাজিয়েছেন। তিনি নিয়মিত ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড দেখাশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, দুঃখী মানুষ ও সমাজ উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে দানবীর হিসেবেও সর্বমহলে প্রশংসিত।
সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এদেশের একজন অত্যন্ত সফল প্রজ্ঞাময় ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শিল্পোদ্যোক্তা। অদম্য ও প্রজ্ঞাময় সুফি মিজান বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতা ও শ্রমসাধনায় সামান্য ব্যাংক কর্মচারি থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশের অন্যতম সফল ও মেধাবী শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে। অবদান রাখছেন শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায়। ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শ্রমঘন এই দেশটিতে একের পর এক নতুন নতুন কর্মসংস্থানের দিগন্ত উন্মোচনের মধ্যদিয়ে অগুণতি মানুষের জীবিকা নির্বাহের, জীবনের মান উন্নয়নে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
অত্যন্ত সাধাসিধে ও নিরহংকার মানুষটি স্ত্রী তাহমিনা রহমানের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে পিএইচপি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। পিএইচপি দেশে ২৩টির বেশি খাতে বিনিয়োগ করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- কোল্ড, স্টিল, ফিশারিজ, স্টকস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, পাওয়ার জেনারেশন প্ল্যান্ট, কন্টিনিউয়াস গ্যালভানাইজিং মিলস, শিপিং অ্যাজেন্সি, ফ্লাট গ্লাস, লেটেক্স অ্যান্ড রাবার প্রোডাক্টশন, টার্মিনাল অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন, প্রপার্টিজ, রোটারি ক্লাব, পেট্রো রিফাইনারি, এগ্রো প্রোডাক্ট, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, কোল্ডস্টোরেজ, শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং, ওভারসিজ, হাসপাতাল, অ্যায়ারলাইন্স ও ইলেক্ট্রিক খাত।
দেশীয় শিল্প-বাণিজ্যের নতুন ধারার প্রবর্তক সুফি মিজান বলেন, মানুষের কাছে পিএইচপি এখন একটি আস্থার নাম। তবে একদিনে হয়নি এই গ্রুপ। দীর্ঘ সময় ধরে এই গ্রুপ ডালপালা বিস্তার করে পরিণত হয়েছে এক মহিরুহে। অনেক প্রতিষ্ঠান হয়েছে এখান থেকে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক মানুষ।
বর্তমানে পিএইচপি গ্রুপের যে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় শিল্প-বাণিজ্যের অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে, তা হচ্ছে সিআর কয়েল এবং সিআই শিট।
বস্তুতপক্ষে ফ্লাট স্টিল উৎপাদনের ক্ষেত্রে সুফি মিজানুর রহমানের পিএইচপি পথ প্রদর্শক এবং মার্কেট লিডার। বর্তমানে সিআর কয়েল এবং সিআই শিট রপ্তানি করে দেশ বৈদেশিক মুদ্রায় শত শত কোটি টাকা আয় করছে। ফ্লাট স্টিল ছাড়াও যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে, তা হলো পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। কারখানাটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৫৪ হাজার মেট্রিক টন। বিশে^র বেশ কয়েকটি দেশে এখন পিএইচপির ফ্লোট গ্লাস রপ্তানি হচ্ছে।
পিএইচপি প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউআইটিএস বর্তমানে দেশের শিক্ষাঙ্গনে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এ দেশের সাধারণ পরিবারের সন্তানদের আলোকিত দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্প ব্যয়ে অত্যন্ত উন্নতমানের শিক্ষা দান করছে।
সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের শ্রম, মেধা, দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, সততা ও নিষ্ঠার সমৃদ্ধ ফসল পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডস্ট্রিজ লিমিটেড, পিএইচপি কোল্ড রোলিং মিলস লিমিটেড, পিএইচপি স্টিলস লিমিটেড, পিএইচপি কন্টিনিউয়াস গ্যালভানাইজিং মিলস লিমিটেড, পিএইচপি নন-কন্টিনিউয়াস গালভানাইজিং মিলস লিমিটেড, পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, পিএইচপি শিপিং লাইন্স লিমিটেড, পিএইচপি পাওয়ার জেনারেশন প্ল্যান্ট লিমিটেড, পিএইচপি পাওয়ার জেনারেশন প্ল্যান্ট লিমিটেড, পিএইচপি ফিশারিজ লিমিটেড, পিএইচপি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, বে-টার্মিনাল অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, পিএইচপি এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড, পিএইচপি অ্যালুমিনিয়াম প্রোডাক্টস লিমিটেড, পিএইচপি পেট্রো রিফাইনারি লিমিটেড, পিএইচপি ওভারসিজ লিমিটেড, পিএইচপি স্টকস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এম আর এফ রোটর, আলহাজ্ব সূফী দায়েব উদ্দিন হসপিটাল, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং মাউন্ট হসপিটাল, চট্টগ্রাম।
জন্ম
সুফি মিজানুর রহমান ১৯৪৩ সালের ১২ মার্চ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সুফি মোহাম্মদ দায়েব উদ্দিন ও মাতা রাহেতুন্নেছা। তিনি ছেলেবেলায় মাকে হারানোর পর বাবার কঠিন অনুশাসনে বড় হয়েছেন, পেয়েছেন দ্বিগুণ স্নেহ-ভালোবাসা।
গ্রামের পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু করে ভারত চন্দ্র স্কুল থেকেই ১৯৬১ সালে মাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহণ শেষ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরবর্তী সময়ে ওই কলেজে বি.কম ক্লাসে ভর্তি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পাস করেন।
সমাজসেবা
ব্যবসার পাশাপাশি সমাজসেবায় রেখে চলেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সুফি মিজান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
প্রিয় প্রজন্মের উচ্চতর মানসম্পন্ন শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে তিনি গড়েছেন ‘ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সস’ (ইউআইটিএস)। আর্তমানবতার কল্যাণ ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে গড়ে তুলেছেন দায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল হাসপাতাল।
দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবা দিতে পারিবারিকভাবে ঢাকার কাঞ্চননগর গ্রামে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল গড়ে তুলেছেন। পাঁচ টাকায় সেখানে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম শহরের আসকারদীঘি পাড়ে মাউন্ট হাসপাতালসহ শিক্ষার্থীদের স্বল্পমূল্যে উচ্চশিক্ষার জন্য ‘ইউআইটিএস’ গড়ে তুলেছেন তিনি। তার আরেক স্বপ্ন দেশের ভেতর একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। অবহেলিত, বন্যা, ঝড়, ঘূর্ণিঝড়ে দুর্গত ও দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন তিনি।
ব্যাংকার থেকে ব্যবসায়ী
দাদা ছিলেন পাটের ব্যবসায়ী। তার বাবাও ব্যবসা করতেন। সুফি মিজানের ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হবেন। কিন্তু তার বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলে ব্যবসা করবে। তারপরও মাত্র ১০০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেছিলেন জালাল জুট ভ্যালি কোম্পানিতে। ইন্টারমিডিয়েট পাসের পর ১৯৬৫ সালে সর্বপ্রথম তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে (বর্তমানে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড) জুনিয়র ক্লার্ক পদে চাকরি নেন। সেখানে দুই বছর চাকরি করার পর ১৯৬৭ সালেই পূবালী ব্যাংকে যোগ দেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে চাকরি করেন।
স্বাধীনতার পর দেশে ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশাল শূন্যতা তৈরি হয়। সেসময় তিনি চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। বেশ কয়েক বছর ব্যাংকে কাজ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা ভালো করে শেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। জেনেছিলেন কোন দেশে কোন জিনিস তৈরি হয়, কোন দেশের ভালো জিনিস কম দামে পাওয়া যায়, আবার নিজের দেশে কোন সময়ে কোন জিনিস ভালো দামে বিক্রি হয়। আর সে কারণেই দেশ-বিদেশ থেকে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার মাধ্যমে ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেছিলেন সুফি মিজান। প্রথম দিকে জাপান থেকে টায়ারটিউব, মিল্ক পাউডার, সুতা, পুরনো কাপড়, স্পেয়ার পার্টস, মোটর পার্টস প্রভৃতি আমদানি করতেন। সেখানে সফলতার পর পরই ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে যান। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। পেয়েছেন একের পর এক সফলতা।
কয়েক বছরের ব্যবসায় মিজানুর রহমানের হাতে জমে বেশ কয়েক লাখ টাকা। যা বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ছিল যথেষ্ট। এবার তিনি বঙ্গোপসাগর উপকূলে সীতাকুণ্ডে প্রতিষ্ঠা করলেন শিপইয়ার্ড। পুরনো জাহাজ কেটে আসবাবপত্র বিক্রি করা হতো সেই শিপইয়ার্ড থেকে।
এখান থেকে অর্জিত আয় দিয়ে ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠা করলেন রি-রোলিং মিল। তারপর ১৯৮৪ সালে, মংলা ইঞ্জিনিয়ার্স ওয়ার্কস নামে বিলেট তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন, ওটাই ছিল দেশের প্রথম বিলেট কারখানা। এভাবেই পুরোদস্তুর বিনিয়োগকারী হয়ে ওঠেন সুফি মিজান।
১৯৮৬ সালে ঢাকায় ঢেউটিনের কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার কারখানায় উৎপাদিত ‘পিএইচপি রানী মার্কা ঢেউটিন’ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। এরপর সীতাকুণ্ডের কুমিরায় দেন ‘সিআর কয়েল কারখানা’। এভাবে একের পর এক বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন এবং প্রভূত সাফল্য লাভ করেন সুফি মিজানুর রহমান।
সম্মাননা
সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সুফি মিজান লাভ করেছেন ২০০৩ সালের দ্য ডেইলি স্টার অ্যান্ড ডিএইচএল বেস্ট বিজনেস অ্যাওয়ার্ড, ২০০৭ সালে ব্যাংক বীমা অ্যাওয়ার্ড, ২০০৯ ও ২০১১ সালে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি অ্যাওয়ার্ড।
এ ছাড়াও প্রাইড অব চিটাগাং, বিজনেস পারসন অব দ্য ইয়ার, করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিভিলিটি অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির পর অনন্য সাফল্যে উজ্জীবিত, আরও অনুপ্রাণিত হয়েছেন সেন্ট মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে। ভারতে মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কমিটি কলকাতার ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টার (ইজেডসিসি) অডিটোরিয়ামে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সমাজসেবায় তার অসামান্য স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এ সম্মান প্রদান করেন।
সাশ্রয়ী মূল্যে নতুন গাড়ি
‘দেশের রাস্তায় দেশের গাড়ি থাকবে সবার বাড়ি বাড়ি’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশেই গাড়ি উৎপাদন করছে পিএইচপি অটোমোবাইলস লিমিটেড। পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন- নতুন গাড়ি তৈরির দেশ হবে বাংলাদেশ। এ দেশের মানুষ আর কতদিন অন্যের ব্যবহার করা গাড়ি ব্যবহার করবে। বিদেশে যেসব গাড়ি চলতে পারে না। পরিবেশের জন্য নিরাপদ নয়, তারা যেসব গাড়ি ধ্বংস করে, সেই গাড়িগুলো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে পুরনো গাড়ি দিয়ে পরিবেশ বিষাক্ত করছে।
কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশিরা নিয়ে যাচ্ছে পুরনো গাড়ি দিয়ে। এটা বন্ধ করতে হবে। আমরা সিএনজি অটোরিকশার দামে নতুন প্রাইভেট কার দিচ্ছি। দেশকে ভালোবাসতে হলে মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হবে। সেই সঙ্গে সোনার বাংলাকে হীরার বাংলায় পরিণত করতে হবে। দেশের মাটিতে উৎপাদিত গাড়ি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ জানান, অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রির জন্য আমরা গত তিন-চার বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের ভাগ্য ভালো যে মালয়েশিয়াকে পার্টনার পেয়েছি।
পিএইচপি অটোমোবাইল বছরে ১২০০ গাড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও গাড়ি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
বিশ্ববরেণ্যদের সঙ্গে সুফি মিজান
সুফি মিজান ব্যক্তি প্রতিষ্ঠার শীর্ষ চূড়ায় আরোহণ করেননি শুধু, তিনি নিজেই পরিণত হয়েছেন এক সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানে। তরুণ প্রজন্মের সামনেও সুফি মিজান এক সমুজ্জ্বল দৃষ্টান্তস্বরূপ।
সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও কঠোর সংগ্রামমুখরতায় যখন যে কাজেই হাত দিয়েছেন পেয়েছেন প্রভূত সাফল্য। তেমনি বিশে^র বরেণ্য ও সফল ব্যক্তিত্বদের সঙ্গেও সহজ সাবলীল সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। মালয়েশিয়ার মাহাথির মুহাম্মদ, বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম আজাদ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বহু বিশ^বরেণ্য ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে যেতে সক্ষম হয়েছেন সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সমৃদ্ধ পরিবার
বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষা উদ্যোক্তা সুফি মিজানুর রহমান সাত ছেলে এক মেয়ের গর্বিত পিতা। বড় সন্তান মো. মোহসিন পিতার মতোই দেশসেরা একজন শিল্পোদ্যোক্তা। তার অন্য ভাইবোনেরা হলেন- ইকবাল হোসেন, আনোয়ারুল হক, আলী হোসেন, আমির হোসেন, জহিরুল ইসলাম ও আক্তার পারভেজ হিরু ও ফাতেমা তুজ-জোহরা। তাদের মা তাহমিনা রহমান।
‘শিক্ষাই সমৃদ্ধির সোপান রচনা করে দেয়’- এই উপলব্ধি জ্ঞানেই সুফি মিজানুর রহমান সন্তানদের বিদেশ থেকে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলেন। পরে তাদেরও সম্পৃক্ত করে নেন পিএইচপির ব্যবসা ও শিল্পোদ্যোগে। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই শিক্ষা উদ্যোক্তা উচ্চতর শিক্ষা অবকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও প্রাধান্য দিয়েছেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228