ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঐতিহ্যের তীর্থভূমি নাটোর

নাজমুল হাসান
🕐 ১:৫৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের তীর্থভূমি নাটোর। এ জেলায় বেড়ানোর জন্য রয়েছে বেশকিছু আকর্ষণীয় স্থান- এর মধ্যে গ্রিন ভ্যালী পার্ক, শহীদ সাগর, চলন বিল জাদুঘর, চলনবিল, নাটোর রাজবাড়ী, উত্তরা গণভবন, মেহেরুন শিশুপার্ক, দয়ারামপুর রাজবাড়ী ও লুর্দের রানী মা মারিয়া ধর্মপল্লী। এগুলো পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ জেলাকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করেছেন নাজমুল হাসান

লুর্দের রানী মা মারিয়া ধর্মপল্লী
লুর্দের রানী মা মারিয়া ধর্মপল্লী তথা বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন। খ্রিস্টধর্ম পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে বলা হয় খ্রিস্টমণ্ডলী বা সংক্ষিপ্তাকারে শুধু মণ্ডলী। মণ্ডলী কর্তৃপক্ষের মূল পরিচালনা কেন্দ্র ভাটিকান বা রোম। স্থানীয়ভাবে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বাসী জনসাধারণকে পরিচালনা ও আধ্যাত্মিক পরিচর্যা করা/সেবা দানের উদ্দেশ্যে গঠিত/পরিচালিত একটি সাংগঠনিক কর্ম এলাকাকে ধর্মপল্লী বলা হয়।

‘লুর্দের রানী মা মারিয়া ধর্মপল্লী’ ঈশ্বরপুত্র যীশুখ্রিস্টের জাগতিক জননী মারিয়া বা মরিয়মের পুণ্য নামের স্মৃতিতে উৎসর্গিত। নাটোর জেলার দক্ষিণ সীমানায় বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার ৫টি ও ১নং জোয়াড়ী ও ৫নং মাঝগ্রাম ইউনিয়নের ২টিসহ মোট ০৭টি গ্রাম নিয়ে এই ধর্মপল্লী প্রতিষ্ঠিত। ঐতিহ্যবাহী বড়াল নদীর দক্ষিণে বনপাড়া নামক একটি গ্রামে ধর্মপল্লীর জন্য নির্ধারিত গীর্জাটি অবস্থিত। যেখানে ১৯৪০ সালের দিকে প্রথম স্বর্গীয় ফাদার থমাস কাত্তানের (পিমে), একজন ইতালীয় ধর্মযাজক সর্বপ্রথম আসেন এবং ছবিতে দেওয়া গীর্জাঘরটি স্থাপিত হয় ১৯৫৮ সালে। ধর্মপল্লীর অর্ন্তগত গ্রামগুলোতে প্রায় ৭ হাজার ক্যাথমিক খ্রিস্টধর্ম বিশ্বাসী মানুষ বসবাস করেন। খ্রিস্ট বিশ্বাসীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ বাঙালি এবং ৫ শতাংশ সাঁওতাল ও অন্যান্য আদিবাসী। সাধারণত, খ্রিস্ট বিশ্বাসীরা এলাকার গ্রামগুলোতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে (ইসলাম ধর্মাবলম্বী- মুসলমান ও সনাতন ধর্মাবলম্বী-হিন্দু) মিলেমিশে পাশাপাশি বসত করেন।

ধর্মপল্লী বা গীর্জা প্রশাসনের অধীনে একটি হাইস্কুল (সেন্ট যোসেফস উচ্চ বিদ্যালয়) ও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় (সেন্ট যোসেফস প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সেন্ট জেভিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়) পরিচালিত হয়। এছাড়া প্রায় ৪৫০ দরিদ্র আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীর অবস্থানের জন্য পৃথক ছাত্র ও ছাত্রীনিবাস পরিচালিত হয়। এলাকার হাজার হাজার দরিদ্র নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের জন্য একটি সেলাই কেন্দ্র পরিচালিত হয়। এছাড়া এলাকার প্রসূতি মায়েদের সেবা দানের জন্য উনিশশ’ ষাটের দশকে এখানে স্থাপিত হয় দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র, যা এলাকার হাজার হাজার প্রসূতি মাকে নিরাপদ মাতৃত্বে সহায়তা প্রদান করেছে।

নাটোর রাজবাড়ী
রাজশাহী থেকে প্রায় ৪৮ কিমি পূর্বে নাটোর জেলা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নাটোর রাজদের বাসভবন। আঠারো শতকের প্রথম দিকে এটি নির্মিত হয়। মধ্যযুগীয় বাংলাদেশের অন্যান্য সামন্ত প্রাসাদের মতোই নাটোর রাজবাড়ীতে প্রবেশের জন্য রয়েছে দীর্ঘ পথ, যার দু’পাশে অত্যন্ত যত্নে গড়ে তোলা বোতল পামের (নড়ঃঃষব ঢ়ধষস) সারি বিদ্যমান। নাটোর রাজপরিবারের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা রামজীবন নাটোরেই স্থাপন করেছিলেন তার প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং সেই সঙ্গে নির্মাণ করেছিলেন রাজপ্রাসাদ, দীঘি, মন্দির এবং ফল ও ফুলের বাগান। ইতিপূর্বে নাটোর ছিল লস্করপুর পরগনার অন্তর্গত কানাইখালি তরফ-এ একটি ছোট বসতি। প্রায় ৩৭.২০ একর জমির ওপর নির্মিত বর্তমান প্রাসাদ কমপ্লেক্সটি দুটি প্রতিরক্ষা পরিখা দ্বারা বেষ্টিত ছিল। পরিখাটি ছই ভাঙ্গার বিল নামে পরিচিত ছিল। ভগ্ন প্রাসাদের বিচ্ছিন্ন সাতটি ব্লককে বেস্টনকারী কাদা ও আগাছা আচ্ছাদিত দীঘি সেই পরিখার চিহ্ন বহন করছে। পরবর্তীকালে রানী ভবানী কমপ্লেক্সটির উন্নয়নে ও বৃদ্ধিতে যথেষ্ট অবদান রাখেন।

সাতটি ব্লকের মধ্যে মাত্র চারটিকে মোটামুটি সংস্কার করে বর্তমানে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর বাকিগুলো আকারহীন বিচ্ছিন্ন কাঠামোর ধ্বংসাবশেষ। একতলাবিশিষ্ট উত্তর ব্লকটি বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে ডেপুটি কমিশনারের অফিস হিসেবে। এর ঠিক সামনে অর্থাৎ দক্ষিণে রয়েছে একটি বেশ বড় উন্মুক্ত লন। এ লনের দক্ষিণ ও পশ্চিমে রয়েছে ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের আকৃতিতে দুটি ব্লক, যেগুলোর পূর্ব পাশে রয়েছে ফাঁকা জায়গা। উত্তরের প্রধান ব্লকটির সম্মুখভাগ প্রায় ৩০.৪৮ মিটার বিশিষ্ট।

শহীদ সাগর
১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ লালপুর উপজেলার গোপালপুরের ৪ কিলোমিটার উত্তরে ময়না গ্রামে খান সেনাদের এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পরের দিন পাক সেনাদের মেজর রাজা খান চুপিসারে পালানোর সময় স্থানীয় জনগণ তাকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে যেন পাক সেনা অবতরণ করতে না পারে সেজন্য স্থানীয় মুক্তিকামী জনগণ মিলের বুলডোজারসহ অন্যান্য যানবাহনের সহায়তায় বিমানবন্দরের রানওয়ে ভেঙে অকেজো করে দেন।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গোপালপুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল; তবুও অত্র এলাকার আখচাষিদের স্বার্থে জাতীয় প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখার জন্য মিলের সকলেই যার যার দায়িত্বে ন্যস্ত ছিল। সেদিন ছিল ৫ মে, চারদিকে থমথমে অবস্থার মধ্যেও মিলের কাজ চলছিল। সকাল ১০-০০টার দিকে লালশালু কাপড়ের ব্যান্ড পরা কিছু রাজাকারের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনীর একটি দল অতর্কিতে মিল ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ময়নার যুদ্ধ এবং পাক সেনা কর্মকর্তার হত্যার মিথ্যা অভিযোগে তৎকালীন মিলের প্রশাসক লে. আনোয়ারুল আজিম এবং অন্যান্য কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের ডেকে বর্তমান অতিথি ভবনের সামনের পুকুরের পাশে ব্রাশফায়ারে নির্মমভাবে হত্যা করে পুকুরের পাড়ে ফেলে চলে যায়।

মেহেরুন শিশুপার্ক
মেহেরুন শিশুপার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা মূলত একটি শুদ্ধ বিনোদন স্থান। কে.আর. মলিন ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে গড়ে তোলা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের এই পার্কটি এখন ক্রমেই এলাকার মানুষের কাছে চিত্ত বিনোদনের জন্য আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই সেখানে বাড়ছে বিনোদনপ্রত্যাশী মানুষের সংখ্যা। চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে পার্কটির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। প্রায় ২৫ বছর আগে এমন একটি পার্ক গড়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ৬০ বিঘা জমি নিয়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্কটি গড়ে তোলা হয়েছে। পার্কে শিশুসহ সব বয়সের মানুষের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইড, ঘোড়ার গাড়ি ও জীবজন্তুর ভাস্কর্য রয়েছে।

চলন বিল
চলন বিলের সবচেয়ে বড় অংশ পড়েছে নাটোরে। জেলার সিংড়া উপজেলায় রয়েছে চলন বিলের বড় একটি অংশ। এছাড়া সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে বনপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ সড়ক তৈরি হয়েছে চলনবিলের বুকেই। সড়কের দু’পাশে এ সময়ে যেদিকে চোখ যায় শুধু অথৈ জলরাশি। এ পথে চলতে চলতে সড়কের দুপাশে চলন বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় দুচোখ ভরে। নিজস্ব গাড়িতে গেলে ইচ্ছামতো থেমে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। এছাড়া চলন বিলের আকর্ষণীয় একটি বিল ‘হাইতি বিল’। এটি নলডাঙ্গা উপজেলায়। জেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে এ বিলের অবস্থান। হাইতিকে দেশের সবচেয়ে গভীর বিল বলা হয়। প্রায় ১২ মিটার গভীর এই বিলে সারা বছরই পানি থাকে। বর্ষায় পানির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।

চলন বিল জাদুঘর
দেশের বৃহত্তম বিল-চলনবিলের মধ্যাস্থলে গুরুদাসপুর উপজেলার নাটোর জেলার খুবজীপুর গ্রামে এই জাদুঘরটির অবস্থান। জ্ঞানপিপাসু অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর এটি প্রতিষ্ঠা করেন। জাদুঘরটি উপজেলা সদর থেকে আনুমানিক ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

চলনবিল অঞ্চলের প্রাচীন কীর্তি সম্পর্কে গবেষণা করে লুপ্ত ইতিহাস উদ্ধার, প্রাচীন ঐতিহাসিক ও কৃষ্টিগত নিদর্শন, প্রত্নরাজা, শিলালিপি, টেরা কোটা ও মাছ, ঝিনুক, শামুক ইত্যাদি নমুনা সংরক্ষণসহ অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনার অভিপ্রায়ে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত।

১৯৮১ সালে সরকারিভাবে এ জাদুঘরের জন্য পাঁচ কাঠা জমি দেওয়া হয়। ৮৪-৮৫ সালে নরওয়ের দাতা সংস্থা নোরিড ও ৮৫-৮৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থ সাহায্যে গড়ে তোলা হয় জাদুঘর ভবন। ১৯৯০ সালে ১৫ মার্চ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদতরের অধীনে রেজিস্ট্রি হওয়ার আগে এটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় (স্থানীয় ব্যবস্থাপনায়) চলত। ১৪/১১/৯৯ সম্রাট আলমগীর ও বাদশা নাসির উদ্দিনের হাতে লেখা কোরআন শরিফসহ পুরনো তুলট কাগজে হাতে লেখা তিন-চার বছরের ৮টি সম্পূর্ণ ও আংশিক কোরআন শরিফ, ১৫টি হাদিস শরিফসহ বহুসংখ্যক ধর্মগ্রন্থ আছে এই জাদুঘরে। গাছের বাকলে লেখা ২টি সংস্কৃত পুঁথি, তিন শতাধিক বছরের পুরনো মনসা মঙ্গল ও সত্যপীরের পাঁচালিসহ আরও অনেক গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি আছে। কষ্টিপাথরের সূর্যদেব বিষুত ও মাতৃকা মূর্তিসহ নানা গবেষণা গ্রন্থ, ৯০টি দেশের মুদ্রা ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের গেটিস ব্যগ অ্যাড্রেস (এগুলো বর্তমানে সংরক্ষণের নিমিত্তে আঞ্চলিক জাদুঘরে স্থানান্তরিত)।

উত্তরা গণভবন
নাটোর শহর থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে এক মনোরম পরিবেশে ইতিহাসখ্যাত দিঘাপতিয়া রাজবাড়ী তথা উত্তরা গণভবন অবস্থিত। নাটোরের রানী ভবানী তার নায়েব দয়ারামের উপরে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে দিঘাপতিয়া পরগনা উপহার দেন।

১৯৪৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করার পর ১৯৫২ সালে দিঘাপতিয়ার শেষরাজা প্রতিভানাথ রায় সপরিবারে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে কলকাতায় চলে যান। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত রাজ প্রাসাদটি পরিত্যক্ত থাকে।

১৯৬৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসে এবং সরকারি ভবন হিসেবে সংস্কার হয়। ১৯৭২ সালে এটিকে উত্তরা গণভবন হিসেবে অভিহিত করা হয়। চারদিকে মনোরম লেক, সুউচ্চ প্রাচীর পরিবেষ্টিত ছোট বড় ১২টি কারুকার্যখচিত ও দৃষ্টিনন্দন ভবন নিয়ে উত্তরা গণভবন ৪১.৫১ একর জমির ওপর অবস্থিত। অভ্যন্তরে রয়েছে ইতালি থেকে সংগৃহীত মনোরম ভাস্কর্যে সজ্জিত বাগান, যেখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির নানা উদ্ভিদ।

বাংলার রাজা-জমিদারদের মধ্যে দিঘাপতিয়া রাজবংশ একটি উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে আছে। দয়ারাম রায় এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৬৮০ সালে নাটোরের প্রখ্যাত কলম গ্রামের এক তিলি পরিবারে দয়ারাম রায় জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতার নাম নরসিংহ রায়। নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রামজীবন যখন পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়ণের অধীনে চাকরি করতেন, সে সময়ে তিনি কাজ উপলক্ষে চলনবিল এলাকার কলম গ্রামে পৌঁছেন।


গ্রিন ভ্যালী পার্ক
বনলতা সেন, রানী ভবানী, উত্তরা গণভবন, চলনবিল, মিনি কক্সবাজার পাটুল আর কাঁচাগোল্লার জন্য আগে থেকেই দেশবাসীর কাছে বিখ্যাত হয়ে আছে নাটোর। এবার নাটোরকে আরও এক ধাপ রাঙিয়ে তুলতে দেশের বিপুলসংখ্যক বিনোদনপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নাটোরের লালপুরে তৈরি হয়েছে ‘গ্রিন ভ্যালী পার্ক’। পার্কটিতে বিনোদনের জন্য রয়েছে স্পিডবোট, প্যাডেল বোট, বুলেট ট্রেন, মিনি ট্রেন, নাগরদোলা, পাইরেট শিপ, ম্যারিগোরাউন্ড, হানি সুইং ইত্যাদি।

এছাড়া প্রায় ত্রিশ একর জমির ওপর বিস্তৃত নয়নাভিরাম লেক, অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা।

শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু সুন্দর সময় কাটানোর জন্য ঘুরে আসতে পারেন এ পার্ক থেকে। বাহারি ফুলের সুবাসী মনমাতানো গন্ধ, আঁকা-বাঁকা নয়নাভিরাম লেকের বাহার আর পানিপথের রাজা অর্থাৎ দুরন্ত গতির স্পিডবোটে ঘুরে আপনার মন সতেজ হবেই। দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট প্রবেশ মূল্য দিয়ে (৫০ টাকা) পার্কে যেতে পারবেন। এছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যও রয়েছে সুব্যবস্থা।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে পার্কটি। তবে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এই সময় পরিবর্তন হয়। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে মাইক্রোবাস, বাস ও মোটরসাইকেলে সহজেই যেতে পারেন লালপুর।

এছাড়া রেলপথে আব্দুলপুর রেলওয়ে জংশনে নেমে মাত্র ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে এলেই দেখা মিলবে পার্কটির। লালপুর সদর থেকে পার্কটির দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper