ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কোটি মানুষের উন্নয়নদূত

আলতাফ হোসেন
🕐 ১:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়েছে ব্র্যাক। এ প্রতিষ্ঠানের স্বপ্নদ্রষ্টা স্যার ফজলে হাসান আবেদ পৃথিবীর মানুষের কাছে উন্নয়নের বাতিঘর। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক কর্মীর মাধ্যমে প্রায় ১৩ কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে হতদরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে ব্র্যাক আজ আলোর দিশা। প্রতিবেদন তৈরি করেছেন সিনিয়র প্রতিবেদক আলতাফ হোসেন

ব্র্যাক একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারিভাবে অলাভজনক উন্নয়নমূলক সংস্থা। বাংলাদেশে এই সংস্থাটি উন্নয়ন ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সমাধান সূত্র আবিষ্কার করেছে। দরিদ্র মানুষের সম্ভাবনার বিকাশে নেতৃত্ব প্রদান করছে। দরিদ্র, ভূমিহীন গ্রামীণ নারীদের মুক্ত ঋণ সরবরাহ করে তাদের আয় করতে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ব্র্যাকের মাইক্রোক্রেডিট প্রকল্প এ পর্যন্ত ৩৭০,৩০০ জন অতি দরিদ্র মহিলাকে সম্পদ প্রদান ও ৯,২৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লোন প্রদান করেছে। উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ব্র্যাক সবসময় এই উন্নয়ন অভিযাত্রার অগ্রভাগে কাজ করছে।

ব্র্যাক দেশের ৬৪টি জেলাসহ এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার ১২টি দেশের দুঃখী মানুষের জীবনের উন্নতির কাজ করে যাচ্ছে। ব্র্যাক-এর দাবি অনুযায়ী বর্তমানে তাদের প্রতিষ্ঠানে এক লাখের মতো কর্মী প্রায় ১৩ কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে ৭০ ভাগই নারী কর্মী।

ব্র্যাকের পরিসেবার আওতায় আছে ১২৬ মিলিয়ন লোক। ফজলে হাসান আবেদের সুযোগ্য নেতৃত্বই অজস্র প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ব্র্যাকের অনন্য সাধারণ এই অর্জনকে সম্ভব করে তুলেছে। একটি সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি স্ব-তহবিলযুক্ত দুগ্ধ, খাদ্য, কৃষি, গবাধি পশুর খামার ও হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করেছে। বেশকিছু বিষয়ে দারুণ সাফল্য অর্জন করেছে। গত ৪৭ বছরে শিশুমৃত্যু হার ২০০ থেকে কমে ৪০-এর নিচে দাঁড়িয়েছে, মাতৃমৃত্যুর হার ৮০০ থেকে কমে ১৫৫-এর নিচে এবং জন্মের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৪০ বছর থেকে বেড়ে ৭০ বছর হয়েছে।

অন্যদিকে জন্মহার, যা ১৯৭২ সালে ছিল ৬ দশমিক ৫, তা নেমে গেছে ২ দশমিক ২-এ। এই ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব একক কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়। তবে ব্র্যাক এসব সাফল্য অর্জনে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং উদ্যোগকে সার্বক্ষণিক সহায়তা জুগিয়ে যাচ্ছে। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে খাওয়ার স্যালাইনের প্রচার ও প্রসার, বিপুলসংখ্যক গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবাকর্মী গড়ে তোলা, মায়েদের জন্য নিরাপদ প্রসবের ব্যবস্থা করা, যক্ষ্মারোগ মোকাবেলা থেকে শুরু করে পয়ঃনিষ্কাশন, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি জনস্বাস্থ্য বিষয়ে ব্র্যাকের কর্মকা- দেশের স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত প্রতিটি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের সাক্ষরতার হার ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্যের মতো শিক্ষা ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতিতে ব্র্যাকের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। এ পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লাখের বেশি শিশু ব্র্যাকের প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষালাভ করেছে, যাদের ৬০ শতাংশের বেশি মেয়ে। অন্যদিকে ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে উৎকর্ষের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করছে।

গত ৪৭ বছরে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও শ্রমশক্তি বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ। মজুরি শ্রমের বাজারে বিপুলসংখ্যক নারীর প্রবেশ শ্রমশক্তি বৃদ্ধির একটি বড় কারণ। ক্ষুদ্রঋণ, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে এবং বাজারে প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে লাখ লাখ দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করছে। দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থান করতে হস্তশিল্প, হাঁস-মুরগি পালন, দুগ্ধজাত পণ্য, বীজ উৎপাদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ব্র্যাক।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper