কোটি মানুষের উন্নয়নদূত
আলতাফ হোসেন
🕐 ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
জন্ম ও বংশ পরিচয়
১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে সচ্ছল ও সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে ফজলে হাসান আবেদের জন্ম। তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন ওই অঞ্চলের অনেক বড় জমিদার। তারা ছিলেন দুই পরগনার মালিক। ফজলে হাসান আবেদের পরিবারের সবাই ছিলেন শিক্ষিত। দাদারা ছিলেন চার ভাই। তারা সবাই কলকাতা গিয়ে পড়াশোনা করেছেন। এফএ পাস করে সরকারি চাকরি করেছেন। ফজলে হাসান আবেদের মায়ের নাম সৈয়দা সুফিয়া খাতুন।
বাবা-মায়ের সঙ্গে তার সম্পর্কটা ছিল অনেকটা ফরমাল, তবে বাবার চেয়ে মায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল অনেক বেশি। ফজলে হাসান আবেদের নানা খান বাহাদুর সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রী ছিলেন। তার নানাবাড়ি ছিল কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে। নানা ১৯৪১ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত মন্ত্রিত্ব করেছেন। ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী, পরে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষাজীবন
ফজলে হাসান আবেদের শিক্ষাজীবন শুরু হয় হবিগঞ্জে। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। দেশভাগের ঠিক আগে তার বাবা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে হবিগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি বানিয়াচংয়ে চলে আসেন। স্থানীয় হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা থাকলেও পরিবারের অনেকের অমতের কারণে তাকে মেজ চাচা কুমিল্লার জেলা জজ রাশিদুল হাসানের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ভর্তি হন কুমিল্লা জিলা স্কুলে। সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই লেখাপড়া করেন।
এরপর চাচা জেলা জজ হিসেবে পাবনায় বদলি হয়ে যান। চাচার সঙ্গে তাকেও পাবনা যেতে হয়। তিনি সেখানে ভর্তি হন পাবনা জিলা স্কুলে। সেখান থেকেই ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ইন্টারমিডিয়েট পড়ার জন্য তিনি পাবনা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। ১৯৫৪ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে সে বছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। তার চাচা সায়ীদুল হাসান তখন লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসের বাণিজ্য সচিব ছিলেন। চাচার কথামতো ১৯৫৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি স্কটল্যান্ডে গিয়ে গ্লাসগো ইউনিভার্সিটিতে নেভাল আর্কিটেকচারে ভর্তি হন। দুই বছর লেখাপড়া করে কোর্স অসমাপ্ত রেখে ১৯৫৬ সালে গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি ছেড়ে তিনি লন্ডনের চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টসে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালে তিনি তার প্রফেশনাল কোর্স সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন
তিনি লন্ডনে চাকরিতে যোগদান করেন। কিছুদিন চাকরি করার পর চলে যান কানাডা। সেখানেও একটি চাকরিতে যোগ দেন। পরে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ক্রমাগত দেশান্তর ও পেশাবদল করতে করতে এক সময় তিনি বিদেশে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে তিনি শেল অয়েল কোম্পানির হেড অব ফাইন্যান্স পদে যোগদান করেন। এখানে চাকরির সময় সত্তরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় হয়।
ফজলে হাসান আবেদ উপদ্রুত এলাকা মনপুরায় গিয়ে ত্রাণকাজ পরিচালনা করেন। এর চারমাস পর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি চলে যান মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলে তিনি আর চাকরিতে ফিরে যাননি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করার জন্য তিনি ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228