ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

এখনো অরক্ষিত ঐতিহাসিক আমতলা

সুলতান মাহমুদ
🕐 ১০:৫৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯

ভাষা শহীদদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলা আজ পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অথচ যে স্থানটি থেকে মিছিল শুরু করে ভাষা সংগ্রামীরা শহীদ হয়েছেন সেই স্থানটি আজও অরক্ষিত ও অবহেলিত। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ পথের পূর্বপাশের গেটটি থেকে শুরু হয়েছিল ভাষার অধিকার রক্ষার মিছিল। ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত আমতলার ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণ আজও যথাযোগ্য মর্যাদা পায়নি। ভাষার দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার মিছিল মিটিংয়ের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু বাংলার দামাল ছেলেরা ১৪৪ ধারা ভেঙে রাজপথে মিছিল নিয়ে নেমে পড়ে। মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সালাম, বরকত ও শফিউলসহ আরও অনেকে নিহত হন। সেই মিছিলটির সূত্রপাত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকার আমতলার গেটের সামনে থেকেই। সেদিন মিছিল বের করার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ভাষা সংগ্রামীদের ওপর গুলি ও লাঠিচার্জসহ নির্যাতন শুরু করে।

ইতিহাসের অমর সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই আমতলা গেট। তরুণ প্রজন্মের কাছে এই গেটটির ইতিহাস এখনো অজানা। ভাষা আন্দোলনের সাক্ষী হিসেবেও পরিচিতি পায়নি স্থানটি। ঐতিহাসিক সেই আমতলা আজও অযতœ আর অবহেলায় পড়ে আছে। 

গতকাল বুধবার সরজমিনে দেখা গেছে, বছরের অন্য দিনের তুলনায় স্থানটিতে সাজসজ্জার আয়োজন করা হয়েছে। তবে স্থানটি অরক্ষিত থাকায় সামনেই বসছে চায়ের দোকান, খাবার হোটেল, ফলের দোকান ও বিড়ি সিগারেটের দোকান। একুশের প্রথম প্রহরের এই স্থানটির সামনে দিয়েই হেটে দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। বসে থাকেন না সাধারণ মানুষও। শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিদেশিরাও। কিন্তু তারা শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় বুঝতেই পারবেন না এটি সেই ঐতিহাসিক আমতলা।

ভাষা আন্দোলনের ৬৭ বছর পেরিয়ে গেলেও ঐতিহাসিক এ স্থানটির দায়িত্ব নেয়নি কেউ। আন্দোলনের সময় আমতলা গেটটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বর্তমানে এটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক এই আমতলা গেটটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের অংশ। কলাভবন এখান থেকে সরিয়ে বর্তমান স্থানে নেওয়া হয়। এরপর সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি ইউনিট স্থাপন করা হয়। এরপর এ স্থানটি চলে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধীনে। স্থানটি সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, আমতলা গেটটিকে আমরা গত বছর সংস্কার করেছি।

এ বছর আমরা পুনরায় গেটটিকে রং করেছি। এ ছাড়া ওই স্থানে আমরা বড় করে ঐতিহাসিক কিছু ছবি স্থাপনের ব্যবস্থা করেছি। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক আরও বলেন, এটি একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান। স্থানটি সংরক্ষণের দায়িত্ব সংস্কৃত মন্ত্রণালয়ের। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। এখন তারা কী করবে এটা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যাপার। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যা করার তা আমরা করছি।

 

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper